#

বরিশালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি আবেগঘন ম্যুরালের উদ্ধোধন করা হয়েছে।

#

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ফলক উম্মোচন এবং ব্যাপক আতশবাঁজী উৎসবের মধ্য দিয়ে ম্যুরালটির উদ্বোধন করেন বরিশাল সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ।

 

 

চারুকলার অভিজ্ঞ শিল্পিদের নকশা ও বিদেশী দামী টাইলসের নিপুন কারুকাজে নগরীর দক্ষিন সদর রোডের বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামের দক্ষিন দেয়ালে ম্যুরালটি নির্মান করে বরিশাল সিটি করপোরেশন।

 

৫০ ফুট উচু এবং ৪০ ফুট প্রস্থের ম্যুরালের পেছনে জাতীয় পতাকা ফুঁটিয়ে তোলা হয়েছে। উদ্বোধন হওয়া ম্যুরালটি দেশের সর্ববৃহৎ বলে দাবী সিটি করপোরেশনের।

 

উদ্বোধনের সময় মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস সহ সরকারী বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, দলীয় নেতাকর্মী সহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

এর আগে বিকেলে কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার পাদদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিশেষ দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করে সিটি করপোরেশন।

 

 

নগরীর জামে এবাদুল্লাহ মসজিদের খতিব মাওলানা নূরুর রহমান বেগম পরিচালিত মোনাজাতে সিটি মেয়রসহ অন্যান্যরা অংশগ্রহন করেন। মোনাজাতে প্রধানমন্ত্রীর সু-স্বাস্থ্য ও দির্ঘায়ু এবং দেশ ও জাতীর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করা হয়।

 

আলোচনা অনুষ্ঠান পরবর্তী সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে বিসিসি’র পাতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে ম্যুরালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

 

উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথি সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক কল্যান কামনা করে বরিশালের জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন “আপনাদের স্বপ্ন দেখতে হবে; বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো আমি আপনাদের সিটি মেয়র। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন আপনাদের সম্পত্তি।

 

 

আপনাদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের। আপনাদের প্রতিনিধি আমি শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করবো। মেয়র হিসেবে আমার সময় ৫ বছর। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে”। বর্তমানে বরিশালে সৃষ্ট নানা ধরনের সমস্যা কথা উল্লেখ করে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ আরো বলেন “বর্তমানে বরিশাল নগরীতে জোয়ারের পানি ওঠে।

 

 

সমস্যা তৈরি হয়। আর এর দায়ভার মেয়রকেই নিতে হবে। কারন তিনি আপনাদের প্রতিনিধি। কিন্তু কেন এই জোয়ারের পানি ওঠে তা কি আপনারা কখনো চিন্তা করে দেখেছেন? আপনারা না করলেও মেয়র হিসেবে এই সমস্যার গোড়া উন্মোচন করেছি আমি।

 

 

বন্ধ করেছি এই সমস্যা সৃষ্টির প্রধান কারন শহরের মধ্যে ড্রেজিং করে জলাশয় ভরাট করন। এছাড়াও নগরীর প্রতিটি ড্রেন ময়লা আবর্জনায় ভরাট হয়েও জলাবদ্ধতা তৈরি করেছে।

 

 

প্রতিটি ড্রেন খুজে খুজে পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করি এই সমস্যা আর সামনে থাকবে না। আপনারা এখন না বুঝলেও আগামী ১০ বছর পর বুঝবেন আমি মূলত কি করেছি আপনাদের জন্য।

 

 

আমি আপনাদের সেবক। আপনাদের জন্য করাই আমাদের কাজ। বর্তমানে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন বিগত দিনের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী।

 

 

দূর্নীতি কমানো চেষ্টা করার মাধ্যমে আমি সিটি কর্পোরেশনের মেরুদন্ড শক্ত করেছি। আমি নাছোরবান্দা লোক। এত সহজে হার মানার লোক আমি নই। আমার শহরের রাস্তাঘাট ভাঙা থাকবে না।

 

 

লিপস্টিক মার্কা উন্নয়ন কাজ প্রতিনিয়ত করবো না আমি। আমি চাই টেকশই উন্নয়ন। তাইতো ৫বছরের গ্যারান্টি সহকারে সড়ক তৈরি করেছি। সিটি কর্পোরেশনের অধিকাংশ কাজ হচ্ছে কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে। এ সকল কাজের জন্য এখন পর্যন্ত কোন বরাদ্ধ আমার কাছে আসেনি।

 

 

আমি আপনাদের মতো কাজ করে যাবো। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন আমার অর্থের প্রয়োজন নেই। শুধু মাত্র আমার শহরের উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়িত হলেই যথেষ্ট।

 

 

” দূর্নীতির বিষয়ে সোচ্চার কণ্ঠে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমি আমার নিজের ঘরের লোককেও ছাড় দেইনি। আমি দূর্নীতি করি না।

 

 

দূর্নীতিকেও প্রশ্রয় দেইনা। আপনারা যদি কখনো আমার দূর্নীতি দেখেন আমাকেও ছাড় দেবেন না। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে মান সম্মত জনবল এর ব্যবহার করে খুব শীঘ্রই নগরীর সকল সমস্যা সমাধান করা হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য একটি উন্নত শহর তৈরি করে যাবো।

 

 

বরিশালের সন্তানেরা একদিন বরিশালেই কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। আমি আপনাদের প্রতিনিধি। আপনারা আমাকেই বলবেন অপনাদের কী প্রয়োজন।

 

 

আমি জীবন থেকে শিখেছি তাই আপনাদের জন্য বাস্তবসম্মত সেবা আমি দিতে পারবো। আমাকে শুধু আপনারা সহায়তা করে যাবেন। আপনাদের সহায়তা পেলে সবকিছুই সম্ভব আমার পক্ষে।

 

 

কারন জনগনতো বেশি কিছু চায় না।” বরিশালের শুরু হওয়া কিছু অসম্পূর্ন কাজের কথা উল্লেখ্য করে সিটি মেয়র বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের আগামী ১৬ই ডিসেম্বরের মধ্যে সকল অসম্পূর্ন কাজ সম্পূর্ন করার নির্দেশনা দিয়েছি।

 

 

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করতে না পারলে আমি এ্যাকশনে যাবো। সিটি কর্পোরেশনের মেরুদন্ড এখন শক্ত। আর মেয়র হিসেবে আমি কিছু চাইনা। আমি আপনাদেরই প্রতিনিধি।

 

 

শেষ নিদ্রায় এই শহরে সায়িত হওয়ার স্বপ্ন আমার। তাই ভরসা রাখুন আমার উপরে। আমি কাপুরুষ না। আমি আপনাদের পাশেই থাকবো। কখনো পালিয়ে যাবো না।

 

 

উন্নয়ন এর ধারা অব্যাহত রাখবো এবং আপনারাই আমাকে পুনরায় আপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেবেন। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়াম, অথচ ভবনটির কোথাও বঙ্গবন্ধুর কোন নামফলক ছিলো না।

 

 

তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর উদ্যোগ নিয়ে বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে দেশের সর্ববৃহত বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল নির্মান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর আবেগঘন ম্যুরালটির উদ্বোধন করেছেন।

 

 

ম্যুরালটি বরিশালের একটি ঐতিহাসিক এবং দর্শনীয় স্থানে পরিনত হবে আশা সিটি মেয়রের। তিনি আরো বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা বাচঁলে বাংলাদেশ বাচঁবে।

 

 

বরিশালে যে ম্যুরালটি আমরা উদ্বোধন করেছি, আমার জানা মতে এটি দেশের ইতিহাসে সর্বোবৃহৎ ম্যুরাল। একজন পিতা এবং কন্যার মধ্যে যে স্নেহ-ভালোবাসা রয়েছে তা এই ম্যুরালটির মধ্যে ফুটে উঠেছে। পরিশেষে তিনি প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘায়ু ও সু-স্বাস্থ্য কামনা করেন।

 

উদ্বোধনের সাথে সাথে শহীদ মিনারের আকাশ নানান রংয়ের আতশবাজির ঝলকানিতে আলোকিত হয়ে ওঠে। সেই সাথে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার নাম সম্বলিত স্লোগানে মুখোর হয় শহীদ মিনার এলাকা।

 

 

আগামী ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামটি ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা বলেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। এর আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here