বরিশাল কর কমিশনারের কার্যালয়ে ৩ ভাইয়ের রাজ্যের অঘোষিত রাজা।বরিশালের সাবেক বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজ কর কর্মকর্তা নেফাউল ইসলাম সরকারের দোসর মোঃ রতন মোল্লা।স্টেনো টাইপিস্ট পদে কর্মরত।তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী হলেও নিজ স্বার্থ আদায়ে কর কমানো -বাড়ানোসহ তদবির ও সুপারিশের মাধ্যমে করের যাবতীয় কার্য্যক্রম সম্পন্ন করেন।এক সময়ের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মচারী কর বিভাগে স্টেনো টাইপিস্ট পদে চাকুরী লাভের পরেই ভাগ্য খুলে যায়। এখন তিনি অসংখ্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক,বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার এফডিআর, কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র,জায়গা-জমি,বহুতল ভবনের মালিক।আলাদিনের চেরাগও যেন হার মানিয়েছে রতন মোল্লার কাছে।এখন তিনি একজন ধনকুব।সহায়-সম্পদে ছুয়েঁছেন পাহাড়।

রতন মোল্লার বিরুদ্ধে কর কমিশনার ও এনবিআরের চেয়ারম্যানের নিকট একাধিকবার অভিযোগ দেয়া হলেও রহস্যজনক কারনে নেয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা। ক্লিনিক,ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তারদের করের ফাইল আটকিয়ে জিম্মী করে অনৈতিকভাবে ঘুস আদায় করাই যেন রতন মোল্লার পেশা।তিনি কাউকে থোরাই কেয়ার করেন না।ঘুস আদায়ে বেপরোয়া । কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলার কারনে একজন প্রিয় কর্মচারীতে পরিনত হয়েছেন বরিশাল কর বিভাগে।একই কর্মস্থলে সার্কেল -২ ও সার্কেল -৮ এ রয়েছেন ১০ বছর।সকলের বদলী হলেও রতন যেন কর ভবনের স্থায়ী কর্মচারী।তার বদলী না হওয়ায় কর বিভাগের সকলেই বিস্মিত।

কে এই রতন মোল্লা :

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বরিশাল কর কমিশনারের কার্যালয় সার্কেল-৮ এ স্টোনো পদে মোঃ রতন মোল্লা চাকুরী নেয়ার পূর্বে বরিশাল নগরীর সদর রোড সংলগ্ন বাটার গল্লির একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকুরী করতেন। এ সময় তিনি জমির দালালিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। কর বিভাগে চাকুরী হবার পরও পূর্বের অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। বরিশাল পূর্ব বগুড়া রোড ‘সাউথ ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিসেস’ নামক প্রতিষ্ঠানে শেয়ার রয়েছে।

যেভাবে জড়িয়েছে দুর্নীতিতে :

রতন মোল্লা।স্টোনো টাইপিস্ট পদে থাকায় অফিসের নির্দেশে তার দায়িত্ব বিভিন্ন ক্লিনিক,ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ ডাক্তারদের কর এর তালিকা করার। তালিকা অনুযায়ী রতন মোল্লা সকল ডায়াগনস্টিক ,ক্লিনিক থেকে সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন। বরিশালের ছোট-বড় ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তারদের আয়ের অনুকূলে কর দেয়ার সঠিক তালিকা করেন না। অফিসের বড় বড় ফাইলের ট্রাক্স কমানো, অডিটের কথা বলে ব্যবসায়ীদের হয়রানী, কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বদলি বাণিজ্য করাই যেন তার পেশা । বরিশালে কর অফিসে রতনকে অর্থ দিলে নিয়মের কাজ অনিয়মে হয়, আবার অনিয়মের কাজ নিয়মে হয়। দীর্ঘদিন ধরে একতরফাভাবে এ সব কার্যক্রম করে আসছেন রতন মোল্লা। একাধিক স্থানে ক্রয় করেছেন জমি, হয়েছেন ভবন মালিক।

রতন মোল্লার যত সহায় সম্পদ :

কর অফিসে তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী হয়েও রতন মোল্লার সম্পত্তি আকাঁশছোঁয়া।তিনি বরিশাল নগরীর সাউথ ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিসেস’ নামক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার মালিক,গ্রামের বাড়ি চরফ্যাশনে ৫ একর জায়গা ক্রয় করেছেন। বরিশাল নগরীর নবগ্রাম রোডে ২ কোটি টাকা দিয়ে জায়গা ক্রয় করেছেন। সেখানে ৫ তলা ভবন নির্মাণাধীন। এছাড়া চরফ্যাশন শহরে একটি দ্বিতল ভবনের কাজ নির্মাণাধীন। রতন মোল্লা সার্কেল -২ ও সার্কেল-৮ এই দুই সার্কেলে কর্মরত থাকাকালিন কমপক্ষে ২৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন । যার বড় অংশ অফিসারদের দিয়ে বাকি অংশ নিজে নিয়েছেন। তিনি তার শ্বশুর বাড়ি ভোলায় শ্বশুর এবং শ্বাশুড়ির নামে ১ কোটি টাকায় ৩০ শতাংশ জায়গা ক্রয় করেছেন। অজপাড়াগায়ের কৃষক বাবার সন্তান স্টেনো টাইপিস্ট রতন মোল্লার চালচলন যেন মস্তবড় অফিসার। বরিশাল সোনালী ব্যাংক এর কর্পোরেট শাখা, সিএন্ডবি রোড শাখা, জনতা ব্যাংক-বাংলা বাজার শাখায় তার ২ কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। নিজ ও স্ত্রীর নামে ১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে।কর আইনজীবীদের থেকে করদাতাদের ফাইল নিয়ে তিনি ঢিল করেন।কর বিভাগে তিনি একজন অঘোষিত কর আইনজীবীও।

রতন মোল্লার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ :

মোঃ রতন মোল্লা। একজন স্টেনো টাইপিস্ট, যিনি বর্তমানে সার্কেল-৮ কর অঞ্চল বরিশালে কর্মরত। ২০১৩ সালে নিয়োগের পর থেকে তিনি একমাত্র স্টেনো-টাইপিস্ট যিনি বরিশালের সার্কেল-২ এবং সার্কেল-৮ ব্যতীত অন্য কোনো সার্কেলে চাকুরি করেননি। এ দুই সার্কেলে কর্মরত থাকার কারণে সে সবসময় হেডকোয়ার্টার এডমিন ও টেকনিক্যাল এর সাথে থাকেন। যে কারণে তার দুই সার্কেল ব্যতিত অন্য কোথাও পদায়ন হয় না। এই দুই সার্কেলে বেশিরভাগ ফাইলই তার দখলে। এই দুই সার্কেলে বড় বড় করদাতাদের সাথে যোগসাজসে অনেক ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া ফাইল গায়েব করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে । বড় বড় দাবি নিস্পত্তি করেন বড় অংকের ঘুস নিয়ে। বিভিন্ন ডাক্তারদের ফাইল অডিটের ভয় দেখিয়ে তিনি নিয়মিত হারে চাঁদাবাজি করছেন। ডাক্তাররা সংশ্লিষ্ট সার্কেলের অফিসারের নাম না জানলেও স্টেনো টাইপিস্ট রতন মোল্লার নাম মুখস্থ।এ বিষয়ে বরিশালের কর আইনজীবীরা একাধিকবার মৌখিক ও লিখিতভাবে কর কমিশনারকে অবগত করানোর পরেও কোন এক অদৃশ্য কারণে তিনি বহাল তবিয়তে থেকে যান বলে একাধিক আইনজীবী জানিয়েছে।

সম্প্রতি হেমায়েত উদ্দিন নামে একজন এনবিআরের চেয়ারম্যানের নিকট রতন মোল্লার দুর্নীতি ও অনিয়মের ব্যাপারে লিখিত আবেদন করেছেন।আবেদনে তার ভয়ংকর দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়।আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বরিশালের বেশিরভাগ ডাক্তারদের ফাইল করেন মাহমুদুর রহমান তপু নামক একজন এ্যাডভোকেট। তার বোনের বিবাহে সহযোগিতা করে রতন মোল্লা তার খুব কাছের লোক হয়ে গেছেন। তপু এবং রতন মোল্লা যোগসাজসে
বেশিরভাগ ডাক্তারদেরকেই বিপদগ্রস্থ করেন। কোনো কোনো ডাক্তারদের অফিসে ডেকে বড় অঙ্কের ঘুসের বিনিময়ে দফারফা করেন। এক্ষেত্রে রাজস্বের পরিবর্তে সবটাই তাদের নিজস্ব। লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়,তদন্ত করলেই যার সত্যতা পাওয়া যাবে। রতন মোল্লার ক্ষমতার প্রভাবে তার ভাই নাইটগার্ড ইব্রাহিম দীর্ঘদিন যাবৎ সার্কেল-১৬ লালমোহনে কর্মরত। তার আরেক ভাই লিটন মোল্লা নোটিশ সার্ভার, কর সার্কেল-১৯, গলাচিপায়।

রতন মোল্লা ও তার ভাই ইব্রাহিম মোল্লা, লিটন মোল্লাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি -অনিয়মের ব্যাপারে ২০২৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন বরিশাল নগরীর বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা মোঃ আতাহার উদ্দিন।এছাড়া  রতন মোল্লার বিরুদ্ধে কর আইনজীবীগন রেজুলেশন করে অভিযোগ দিয়েছিলেন কর কমিশনারের নিকট।সর্বশেষ চলতি বছরের ১০ আগষ্ট এনবিআরের চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি।

সূত্র : বরিশাল খবর

 

 

বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের কুতুবপুর ফাজিল মাদ্রাসায় প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে দাতা সদস্যের ছেলের বউকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ নিজাম উদ্দিন আকনের যোগসাজশে দাতা সদস্য আব্বাস মৃধার ছেলের বউ আল্পনা আক্তারকে নিয়োগ দিতে দুই লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন ফাঁস করেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও ডিজির প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।

পরীক্ষার্থী তামান্না ও সাবিনা আক্তার অভিযোগ করেছেন, প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে সাজানো নিয়োগ পরীক্ষায় আল্পনাকে চাকরি দেওয়া হয়। তাঁরা জানান, অধ্যক্ষ আল্পনাকে চাকরি দেওয়ার জন্য দাতা সদস্যের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁরা সোমবার মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, দুদক, বরগুনা জেলা প্রশাসক ও আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ১১ জন প্রার্থী আবেদন করলেও লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয় ৯ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অধ্যক্ষের ছেলে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রেদওয়ানুল ইসলাম আবির আকন, ভাগ্নে আরিফুর রহমান এবং দাতা সদস্য আব্বাস মৃধার ছেলের বউ আল্পনা আক্তার।

গত শনিবার ৩৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ অনুসারে, পরীক্ষার আগেই আল্পনার কাছে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ না করেই পরদিন মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং রবিবার আল্পনাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা বলেন, এটা একটি সাজানো নিয়োগ বোর্ড। অধ্যক্ষের ছেলে, ভাগ্নে ও দাতা সদস্যের ছেলের বউ—এই তিনজনই উত্তীর্ণ হয়েছেন। এতে অনিয়ম হয়েছে, পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নিতে হবে।

অধ্যক্ষ মাওলানা নিজাম উদ্দিন আকন বলেন, আল্পনা নামের একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তবে তিনি দাতা সদস্যের ছেলের বউ কি না, তা আমি জানি না। আমার ছেলে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, কিন্তু সবই বিধি মোতাবেক হয়েছে।

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গুলিশাখালী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মোঃ জিয়াদুল কবির বলেন, লিখিত পরীক্ষায় আবির, আরিফুর রহমান ও আল্পনা উত্তীর্ণ হয়েছেন। আল্পনা প্রথম হওয়ায় তাকেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে অধ্যক্ষের ছেলে ও দাতা সদস্যের ছেলের বউ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কি নিয়মসঙ্গত—এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ মিথ্যা। সব কিছু নিয়ম মেনে হয়েছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

সাংবাদিকতার পবিত্র পেশাকে কলঙ্কিত করা তথাকথিত “চাঁদাবাজি, দালালি, নিয়ন্ত্রণ হুমকি ও অপসাংবাদিকতা” বন্ধে করণীয় নির্ধারণে পেশাদার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বিকাল ৪টায় বরিশাল সদর রোডে কিং ফিসার রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত হয়।এই সময় বরিশালের স্থানীয় প্রিন্ট পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং অনলাইন মাল্টিমিডিয়া বিভিন্ন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে দেশের পেশাদার সাংবাদিকদের ৩৫টি সংগঠন। সভায় অংশগ্রহণকারী সিনিয়র সাংবাদিক ও সম্পাদকরা বলেন, সংবাদপেশার মর্যাদা রক্ষা করতে হলে আত্মশুদ্ধি, নীতিনিষ্ঠা ও সংগঠনভিত্তিক শৃঙ্খলা জোরদার করতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, কিছু অসাধু ব্যক্তি সাংবাদিকতার পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, দালালি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এতে প্রকৃত সাংবাদিকরা যেমন অসম্মানিত হচ্ছেন, তেমনি জনগণের আস্থা হারাচ্ছে গণমাধ্যম খাত।

সভায় প্রস্তাব গৃহীত হয়— সাংবাদিকদের পেশাগত পরিচয় যাচাইয়ে কঠোর মানদণ্ড নির্ধারণ, ভুয়া সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা জোরদার,গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও নৈতিকতা উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ, প্রতিটি সাংবাদিক সংগঠনকে আত্মনিয়ন্ত্রণ নীতিমালা বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো।

সভায় বক্তারা সবাইকে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানান।

 

বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামকে অপহরণ করে মুক্তিপন না পেয়ে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় ৩ নং আসামি পঁচাকোড়ালীয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের কালাম তালুকদারের পুত্র সন্ত্রাসী তোতা মিয়াকে গ্রেফতার করেছে আমতলী থানা পুলিশ। পুলিশ জানায় তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে আমতলী ও তালতলী থানায় আরও ৫ টি মামলা চলমান রয়েছে।

জানা যায়, চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে অপহরণ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এটিএম কার্ডের ৮১ হাজার টাকা, ল্যাপটপ ও মোটরসাইকেল নিয়ে রাতভর নির্যাতন শেষে বিদ্যালয়ের কাছে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক মামলা দায়ের করলে মামলার ৩ নং পলাতক আসামি তোতা মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, শিক্ষক অপহরণ ও চাঁদাবাজি মামলার ৩ নং আসামিকে পটুয়াখালী থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চলছে।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুখ্যাত ড্রাগ মাফিয়া মেহেদী হাসান রায়হান ও তার সহযোগীদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) এর প্রধান কার্যালয়ের অপারেশনস্ ও গোয়েন্দা শাখা।

অধিদপ্তরের উপ—পরিচালক সোমেন মণ্ডল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, রায়হানের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে সুতা, টিভি, গাড়ির পার্টস ও গার্মেন্টস পণ্যের আড়ালে অভিনব কায়দায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশে মাদক পাচার করে আসছিল। বিদেশ থেকে আনা এসব অবৈধ মাদক দেশের বিভিন্ন স্থানে মজুদ রেখে সুবিধাজনক সময়ে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হতো।

২০২২ সালের ২২ জুলাই ভোরে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী পথে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের টিপুরদী এলাকায় র‍্যাব—১১ এর একটি অভিযানিক দল দুইটি কনটেইনার ভর্তি ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করে। উদ্ধার করা মদের আনুমানিক বাজারমূল্য ৪৬ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ সময় রায়হানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী, শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুল ইসলামের ছেলে আবদুল আহাদসহ ৩ জনকে আটক করা হয়।

পরে র‍্যাব সংবাদ সম্মেলনে জানায়, চক্রটি আইপি জালিয়াতি করে কুমিল্লা ও ঈশ্বরদী ইপিজেডের দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বিদেশি মদের চালান খালাস করে। এ ঘটনায় র‍্যাব—১১ এর উপ—পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় মেহেদী হাসান রায়হানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

তদন্ত সূত্রে জানা যায়, রায়হান একাধিক মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে রয়েছে—বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ এর ১৫(৩) ধারায় মামলা (চট্টগ্রাম সিএমপি, ২০২৩)

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬(১) সারনীর ১০(ক) ধারায় মামলা (হালিশহর থানা, ২০২২),দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪১৩ ধারায় মামলা (খুলশী থানা, ২০২১)

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর অধীন মামলা (বন্দর থানা, ২০২২্‌মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২)(৪) ধারায় মামলা (সোনারগাঁও থানা, ২০২৩)

এছাড়া দেশের বিভিন্ন থানায় রায়হানের বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে।

তবে আশ্চর্যজনকভাবে সব মামলায় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে জামিনে মুক্ত হন বলে অভিযোগ সূত্রের।

রায়হানের বাবা মো. আলী আহমেদ, মা রেখা বেগম। স্থানীয়রা জানান, একসময় আলী আহমেদ শহরের নতুন বাজারে কাটা কাপড়ের ছোট দোকান করতেন। পরে মালয়েশিয়া গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসে ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা শুরু করেন। কিছুদিনের মধ্যেই তার আর্থিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটে।
বর্তমানে তার রয়েছে—মহিলা কলেজ রোডে কোটি টাকার “পায়রা ইলেকট্রনিক্স শপ”,রহমতপুরে ৫ হাজার বর্গফুটের ৪ তলা ভবন (মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা),নীলগঞ্জ ইউনিয়নে একাধিক জমি,স্থানীয় সূত্রের দাবি, এই বিপুল সম্পদের উৎস তার ছেলে রায়হানের ড্রাগ ব্যবসার অবৈধ অর্থ।

জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে রায়হানের নামে সম্পদ অনুসন্ধানের চিঠি পাঠালে, আলী আহমেদ প্রভাব খাটিয়ে প্রতিবেদন পরিবর্তনের তদবির করেন। ফলে ছেলের নামে কোনো সম্পদ নেই—এমন প্রতিবেদন পাঠানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া

সম্মিলিত নাগরিক অধিকার জোট, কলাপাড়া শাখার সভাপতি সৈয়দ রেজাউল করিম রেজা বলেন,“আলী আহমেদ একসময় দর্জির কাজ করতেন। হঠাৎ তার এত সম্পদ, বহুতল বাড়ি—এটা অবিশ্বাস্য।”

কলাপাড়া বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজমুল আহসান বলেন,“তার কিছুই ছিল না। ছেলের ড্রাগ ব্যবসার টাকায় রাতারাতি ধনী হয়ে গেছে।”

কলাপাড়া থানার উপ—পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান জানান,“রায়হানের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে জীবননাশের হুমকির অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।”

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনার্স তৃতীয় বর্ষের ২০২১-২২ সেশনের ফরম পূরনের ফি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির প্রতিবাদে রোববার (২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বরিশাল সরকারি বজ্রমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা।

কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালীন সময় অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ফরম পূরনের ফি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির প্রতিবাদ করেন। পাশাপাশি ফরম পূরনের ফি কমানোর দাবি করেন।

অবিলম্বে তাদের দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলনেরও হুশিয়ারি দেওয়া হয়।

ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক কলেজ ছাত্র শাকিল আহমেদ ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (পহেলা নভেম্বর) দিবাগত রাত নয়টার দিকে বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের বোর্ড স্কুল ক্লাব ঘর নামকস্থানে।

ঢাকার মিরপুর কলেজের ছাত্র নিহত শাকিল আহমেদ বানারীপাড়া সদর উপজেলার মাছরং দরবেশ গেট এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রবের ছেলে ও লন্ডন প্রবাসী এটিএন বাংলার সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম শামিমের ছোট ভাই।

নিহতের স্বজন কাজী তমাল জানিয়েছেন-শাকিল আহমেদ মোটরসাইকেলযোগে রাত নয়টার দিকে বরিশাল থেকে বানারীপাড়া আসার পথিমধ্যে বোর্ড স্কুল ক্লাব ঘর নামকস্থানে পৌঁছলে বিপরীতদিক থেকে আসা বেপরোয়াগতির ট্রাকের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

 

বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছেন ডিআইজি এহসানুল্লাহ। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকাল থেকে তার কোনো খোঁজ মিলছে না। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই রাজশাহীসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনার ঝড়

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ক্রসফায়ার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ডিআইজি এহসানুল্লাহকে আটক করতে সেদিন সকালে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায় পুলিশের একটি বিশেষ টিম। তিনি তখন একাডেমির সাপ্লাই বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। তবে অভিযানের সময় তিনি রহস্যজনকভাবে সেখান থেকে পালিয়ে যান বলে জানা গেছে।

 

 

 

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাইফুল ইসলাম ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,
“ডিআইজি এহসানুল্লাহ গত বুধবার থেকে একাডেমিতে অনুপস্থিত। ঢাকা থেকে একটি টিম তাকে আটক করতে এসেছিলেন বলে জেনেছি। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।

 

 

 

 

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক সরগরম ‘হ্যাঁ’ ‘না’ পোস্টে। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের পক্ষ—বিপক্ষ নিয়ে নতুন প্রচারণায় ব্যস্ত দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশনকে ১৮ দফা সুপারিশ দিয়েছে। সুপারিশে দলটি জাতীয় নির্বাচনের আগে আগামী নভেম্বর মাসে কমিশনকে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দেয়।

এদিকে নির্বাচনের আগে গণভোটের বিপক্ষে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। জানা যায়, তারা ফেসবুক পোস্টে নতুন প্রচারণা শুরু করেছেন। আর ভোটের আগে গণভোটের পক্ষে অবস্থান করছে জুলাই গণ—অভ্যুত্থানের জন্য প্লাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

ফেসবুকে ‘না’ পোস্ট দিয়েছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও এমন প্রচারণা দেখা গেছে। তারা ‘হ্যাঁ’ লিখে একটি পোস্ট করেছেন।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন গণভোটের সুপারিশ করেছে ঐকমত্য কমিশন। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত সুপারিশমালা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

বিষয়টি নিয়ে সেদিন কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘আজই সব রাজনৈতিক দলকে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সুপারিশমালা হস্তান্তর করা হবে। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়— এমন বিষয়গুলো সরকারি অধ্যাদেশের মাধ্যমে দ্রুত বাস্তবায়নের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে ৪৮টি নির্দিষ্ট বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে জনগণের মতামত জানতে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।’

 

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের জঙ্গলপট্টি গ্রামে একই পরিবারের চার সদস্য স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তারা হলেন- সমির দত্ত, যিনি ইসলাম ধর্মগ্রহণের পর নিজের নাম রেখেছেন ওমর আলী, তার স্ত্রী অঞ্জলি রানী দত্ত, নতুন নাম আয়েশা বেগম, তাদের মেয়ে স্বর্ণা রানী দত্ত, নতুন নাম মরিয়ম আক্তার এবং ছেলে শুভ দত্ত এবং নতুন নাম আব্দুল্লাহ।

তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং স্থানীয় মুসল্লি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে শাহাদাত পাঠের মাধ্যমে নতুন ধর্মীয় জীবনে প্রবেশ করেন।

ধর্মান্তরিত হওয়ার পর ওমর আলী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে ইসলামের আদর্শ ও মানবতার শিক্ষা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি। অবশেষে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইসলাম গ্রহণ করেছি। আলহামদুলিল্লাহ।’

স্থানীয় এলাকাবাসী ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা তাদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি তাদের জীবনের এক নতুন সূচনা।

শেষে তারা দোয়া কামনা করে বলেন, আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে নবীজির (সঃ) উম্মত হিসেবে কবুল করুন। আমিন।