বরিশাল নগরে এক গৃহবধূকে অপহরণ করে এক লাখ টাকা ছিনতাই ও পরে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। তাঁদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহা. রকিবুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় তিনজন আসামি উপস্থিত ছিলেন, অপর এক আসামি পলাতক আছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—মো. গাজী রাসেল (৩৫), মো. রাজিব জমাদ্দার (২৫), মো. জাহিদ হাওলাদার (২৬) ও মো. রোকন খান (২৩)। তাঁদের মধ্যে আসামি রোকন খান পলাতক আছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত চারজনের বাড়ি বরিশাল নগরের সাগরদী এলাকার ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সড়কে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল মান্নান মৃধা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আদালত সূত্র জানায়, ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ (১৮) বরিশাল নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর তিনি বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে ইজিবাইকে করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর স্বামীর কাছে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ইজিবাইক চালক কৌশলে তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যান। এ সময় গৃহবধূ চিৎকার করলে ইজিবাইক চালক তাঁকে ভয়ভীতি দেখান। এ সময় মোটরসাইকেলে করে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় আসে অন্য তিন আসামি। তাঁরা মোটরসাইকেল থেকে নেমে ইজিবাইকে উঠে তাঁকে মারধর করেন। পরে চোখ, মুখ ও পা বেঁধে ত্রিশ গোডাউন এলাকার খ্রিষ্টান পাড়ার জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরদিন সকালে স্থানীয় লোকজন তাঁকে সেখানে দেখতে পান এবং উদ্ধার করেন। পরে পরিবারের সদস্যরা গৃহবধূকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা ও বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার তৎকালীন পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
আদালত সূত্র জানায়, এই মামলায় আদালত ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এরপর আজ রোববার এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।




