রাজধানীর শ্যামপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রতিদিন দুই থেকে তিন শতাধিক দলিল নিবন্ধনের কাজ হয়। কিন্তু এ দপ্তরটিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই এক কর্মচারীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা কথিত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন দলিল লেখক ও সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।
অফিসের একাধিক দলিল লেখক জানান—সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে দলিল জমা দেওয়ার পর তা প্রথমে ওই কর্মচারীর মাধ্যমে “পরীক্ষা” করানো হয়। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রুটি দেখিয়ে দলিলপ্রতি মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে দলিল আটকে রাখা, নানা অজুহাতে বিলম্ব করা এবং সিন্ডিকেটের সদস্যদের দিয়ে মানসিক চাপ প্রয়োগের অভিযোগও রয়েছে।
এক দলিল লেখক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“এই অফিসটা পুরোপুরি জিম্মি অবস্থায় চলে গেছে। যে দলিলই দিই, সেটা প্রথমে তার হাত দিয়ে না গেলে অগ্রগতি হয় না।”
তাদের অভিযোগ—প্রায় ৫% অতিরিক্ত কমিশনের নামে নিয়মিত ঘুষ নেওয়া হয়। এতে প্রতিদিন শত শত গ্রাহক হয়রানির শিকার হন, আর দলিল লেখকদের ওপর সৃষ্টি হয় অযৌক্তিক আর্থিক চাপ।
স্বল্প বেতনে বিপুল সম্পদের অভিযোগ
অফিসের একাধিক সূত্র জানায়—স্বল্প বেতনের দাপ্তরিক পদে থাকার পরও কথিত ওই কর্মচারীর নামে রাজধানীর কদমতলী এলাকায় দু’টি ফ্ল্যাট, তেজগাঁও হকার্স মার্কেটে দোকান এবং স্থানীয় এক মার্কেট সমিতির নির্বাচনে বিপুল টাকা ব্যয় করে পদ লাভের ঘটনা বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন তুলেছে।
তাদের দাবি,
“মাসিক ১৫০০ টাকার হাজিরায় কেউ যদি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়ে যায়, তাহলে তদন্ত ছাড়া সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহ থাকাই স্বাভাবিক।”
যোগাযোগে সাড়া মেলেনি
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য জানতে স্বদেশ বিচিত্রা অফিস থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে অভিযোগ সম্পর্কে তার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
দুদকের তদন্ত দাবি
দলিল লেখক, ভুক্তভোগী গ্রাহক ও স্থানীয়দের দাবি—অফিসটির স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে এবং কথিত দুর্নীতি চক্রের সন্ধানে দুদকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি তদন্ত প্রয়োজন।







