বরিশালে অর্থ আত্বসাতের দায়ে ওয়াই ডাব্লিউ সি এ’র দায়ের করা প্রতারনা মামলায় স্বামী-স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। জানাগেছে- আটককৃতরা হলেন, নগরীর ১০নং ওয়ার্ড আমবাগান এলাকার জব্বার মিয়ার সড়ক পোদ্দার রোড এলাকার বাসীন্দা রুবেল বিশ্বাস ও স্ত্রী

সুচিত্রা বাড়ৈ। শনিবার বিকালে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার এসআই মাজেদুল ইসলাম বলেন, প্রতারনা করে স্বামী-স্ত্রী ওআই ডাব্লিউ সিএ’র ১৪ লক্ষ টাকা আত্বসাৎ করার অভিযোগে কতৃপক্ষ তাদের বিরুদ্বে মামলা দায়ের করলে পুলিশ রুবেল বিশ্বাসের বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রী’কে আটক করে আদালতে সোপার্দ করেন।

বরিশাল নগরীর হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগে ব্যবসা শাখার শিক্ষক মাইদুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভায় তাকে বরখাস্ত করা হয়।

গত (৫ মে) ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আইসিটি ক্লাস ছিল। মাইদুল ইসলাম ক্লাসে গিয়ে ছাত্রীদের গায়ে পিঠে হাত দেয় বলে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের কাছে অভিযোগ করেন। ঘটনার পরদিন ৬ মে ষষ্ঠ শ্রেণির ১৩ শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। এরপর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

এ নিয়ে অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষকের এমন আচারণ দীর্ঘ দিনের। এমন হলে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো দায় হয়ে উঠবে। এজন্য ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

এদিকে স্কুল থেকে গঠন করা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি শিক্ষক মাইদুল ইসলামের এমন আচারণের সত্যতা পান। তিনি যে ছাত্রীদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে হাত দেন এ কথার প্রমাণ পেয়েছে বলে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক মাইদুল ইসলাম প্রথমে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, মূলত স্কুলের কিছু ভিতরগত রাজনৈতিক বিষয়ে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম ফখরুজ্জামান বলেন, ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগে গেল (৯ মে) স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভা ডেকে তাকে পুরোপুরি বরখাস্ত করা হয়েছে।

ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল জানান, তারা এতেই ক্ষ‌্যান্ত থাকবেন না, দায়ী শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

চুক্তি ভিত্তিক এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এরআগেও স্কুলে কোচিং করানো নিয়ে ছাত্রীদের হয়রানীর অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

সৌদি আরবের মুদ্রা রিয়াল ও মার্কিন ডলার নিয়ে প্রতারণার মামলায় বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জালাল হাওলাদারকে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে বরিশাল মহানগর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের বিষয় নিশ্চিত করেন আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু। তিনি বলেন, ‘আজ শনিবার দুপুরে পুলিশ জালাল হাওলাদারকে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠায়। এ সময় আদালতের বিচারক মো. আরিফুর রহমান তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুকুয়া ইউনিয়নের হরিমৃত্যুঞ্জয় গ্রামের বাসিন্দা জালাল হাওলাদার এবং তাঁর দুই ভাই দুলাল হাওলাদার ও চুন্নু হাওলাদার ৪০ বছর ধরে ডলার ও রিয়াল বিক্রির নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। ওই এলাকায় এই চক্রের ৪৫-৫০ জন সদস্য রয়েছেন। তাঁরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডলার ও রিয়াল বিক্রির নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

গত রোববার রাতে ইউপি সদস্য জালাল হাওলাদারসহ ছয়-সাতসদস্য উপজেলার গাজীপুর গ্রামের তৌকির খানের কাছে ৩ লাখ টাকার রিয়াল বিক্রির দেনদরবার করছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশিরুল আলম ওই গ্রামে অভিযান চালান।

সেখান থেকে চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু মূল হোতা জালাল হাওলাদার পালিয়ে যান। এ ঘটনায় গত সোমবার আমতলী থানায় প্রতারণার অভিযোগে জালালসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলায় চক্রের পাঁচ সদস্য কারাগারে রয়েছেন।

পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার রাতে বরগুনা গোয়েন্দা পুলিশ ও র‍্যাবের একটি যৌথ দল বরিশাল মহানগরের একটি সড়কে অভিযান চালায়। ওই সড়ক থেকে তারা জালাল হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে। আজ শনিবার দুপুরে ডিবি পুলিশ তাঁকে আমতলী থানায় সোপর্দ করে। থানা-পুলিশ তাঁকে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে। আদালতের বিচারক মো. আরিফুর রহমান তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বরগুনা পুলিশের জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশিরুল আলম বলেন, ‘সৌদি রিয়াল প্রতারণা চক্রের মূল হোতা ইউপি সদস্য জালাল হাওলাদারকে বরিশাল মহানগরের একটি সড়ক থেকে গ্রেপ্তার করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ কাজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এই চক্রের আরও কয়েকজন সদস্য রয়েছেন, তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

মাদারীপুরে পুলিশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তার একটি দোকানে এক হাজার টাকার কয়েকটি বান্ডিল গুনে নিচ্ছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দোকানটি মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে।

সেই দোকানেই টাকা লেনদেন হয়েছে। গত বছরের ১ মার্চ টাকা গ্রহণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকার রবিদাসের ছেলে রতন দাস একটি দোকানে কাজ করতেন। সেখানেই পরিচয় হয় পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তারের সঙ্গে। পরে পুলিশ নিয়োগের সময় তানজিলা আক্তার পুলিশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রতনের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেয়।

বিশ্বাস অর্জনের জন্য তানজিলা কমিউনিটি ব্যাংকের একটি চেকও প্রদান করে। তানজিলা আক্তারের নামে কমিউনিটি ব্যাংকের চেকে তানজিলার স্বাক্ষর ও তারিখ রয়েছে। এদিকে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার পর রেজাল্ট দিলে চাকরি না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী রতন দাস। উপায় না পেয়ে অভিযোগ করেন পুলিশ সুপার বরাবর।

চাকরিপ্রত্যাশী রতন দাস বলেন, আমাকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছে তানজিলা আক্তার নামে এক পুলিশ সদস্য। কিন্তু সে চাকরি দিতে পারেনি। সেই টাকা দিয়ে তানজিলার স্বামী ফরিদপুরে ব্যবসা শুরু করছে।

টাকা ফেরত চাইলে সে বিভিন্ন রকমের টালবাহানা করছে। আমার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সময় একটি চেকও দিয়েছিল। এরপরও বিভিন্ন অজুহাতে সে আমার টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এই ঘুষ নেওয়ার সঙ্গে শহিদুল নামে এক পুলিশও জড়িত।

রতন দাসের বাবা রবিদাস বলেন, আমি ধার-দেনা করে ছেলের চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম তানজিলার কাছে। সে চাকরি দিতে পারেনি। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। তাই এসপি অফিসে অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তানজিলা আক্তার বলেন, যা বলার এসপি স্যারকেই বলেছি। অপর অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম নিজের দায় অস্বীকার করে জানান, তিনি কোনো টাকা নেননি।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, চাকরির প্রলোভনে দুই পুলিশ সদস্যের ঘুষ নেওয়ার একটি অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।