মাদারীপুরে পুলিশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তার একটি দোকানে এক হাজার টাকার কয়েকটি বান্ডিল গুনে নিচ্ছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দোকানটি মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে।
সেই দোকানেই টাকা লেনদেন হয়েছে। গত বছরের ১ মার্চ টাকা গ্রহণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকার রবিদাসের ছেলে রতন দাস একটি দোকানে কাজ করতেন। সেখানেই পরিচয় হয় পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তারের সঙ্গে। পরে পুলিশ নিয়োগের সময় তানজিলা আক্তার পুলিশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রতনের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেয়।
বিশ্বাস অর্জনের জন্য তানজিলা কমিউনিটি ব্যাংকের একটি চেকও প্রদান করে। তানজিলা আক্তারের নামে কমিউনিটি ব্যাংকের চেকে তানজিলার স্বাক্ষর ও তারিখ রয়েছে। এদিকে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার পর রেজাল্ট দিলে চাকরি না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী রতন দাস। উপায় না পেয়ে অভিযোগ করেন পুলিশ সুপার বরাবর।
চাকরিপ্রত্যাশী রতন দাস বলেন, আমাকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছে তানজিলা আক্তার নামে এক পুলিশ সদস্য। কিন্তু সে চাকরি দিতে পারেনি। সেই টাকা দিয়ে তানজিলার স্বামী ফরিদপুরে ব্যবসা শুরু করছে।
টাকা ফেরত চাইলে সে বিভিন্ন রকমের টালবাহানা করছে। আমার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সময় একটি চেকও দিয়েছিল। এরপরও বিভিন্ন অজুহাতে সে আমার টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এই ঘুষ নেওয়ার সঙ্গে শহিদুল নামে এক পুলিশও জড়িত।
রতন দাসের বাবা রবিদাস বলেন, আমি ধার-দেনা করে ছেলের চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম তানজিলার কাছে। সে চাকরি দিতে পারেনি। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। তাই এসপি অফিসে অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তানজিলা আক্তার বলেন, যা বলার এসপি স্যারকেই বলেছি। অপর অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম নিজের দায় অস্বীকার করে জানান, তিনি কোনো টাকা নেননি।
মাদারীপুর পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, চাকরির প্রলোভনে দুই পুলিশ সদস্যের ঘুষ নেওয়ার একটি অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।