#

পরিচয় গোপন করে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) প্রকল্পের ১৫ টন গন আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের একজন সড়ক পরিদর্শকের ওপর। সিটি কর্পোরেশনের তিনটি ওয়ার্ডের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। দায়িত্বে অবহেলার কারণে প্রায়শই ভর্ৎসনা করা হয় তাকে। নিজ দায়িত্বে অপারগ এই কর্মকর্তা আবার নিলেন কাবিখা প্রকল্পের সড়ক উন্নয়নের কাজ।

#

ওই কাজের জন্য বরাদ্দ হওয়া ১৫ টন গম কাজ না করেই আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত এই কর্মকর্তার নাম হাফিজুর রহমান। বিসিসি কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে (২০১৯/২০ অর্থবছর) সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের বায়না খালপাড় সড়কের দুই ধারে মাটি ভরাট কাজের দায়িত্ব নেন। কাজ না করেই ওই ১৫ টন গম উত্তোলন করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

চরবাডড়য়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও ভাগনা এলাকার বাসিন্দা আবদুল খালেক হাওলাদার বলেন, বাটনা খালপাড় সড়কের দুই ধারে কোনো মাটি দেয়া হয়নি। সড়কটি প্রায় অকেজো। চলাচল অনুপযোগী। এই সড়কের নাম করে ১৫ টন গম উত্তোলন করা হয়েছে এ বিষয়টি আমরা কেউই জানি না। আর যিনি কাজটি করেছেন তিনি আওয়ামী লীগের কেউ না। অপরদিকে সিটি কর্পোরেশনের একজন কর্মকর্তা।

পাটনা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খালপাড় সড়কটি প্রায় চলাচল অনুপযোগী। সড়কে গত ৫ বছরে কোনো মাটি ভরাটের কাজ হয়েছে বলে বোঝা যাচ্ছে না। মাটি এই সড়কটিতে বড় বড় আকারে গর্ত। আর খালের মধ্যে ভেঙে পড়ছে সড়কটির দুই ধার।

স্থানীয়দের দাবি, গত পাঁচ বছরে এই সড়কের কোন কাজ করা হয়নি।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সড়ক পরিদর্শকদের দায়িত্বে থাকা সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত বলেন, হাফিজুর রহমান সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত থেকে অপর একটি প্রকল্প কাজ কিভাবে করলেন তা আমার বোধগম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করা হবে।

অভিযুক্ত বিসিসির সড়ক পরির্দশক হাফিজুর রহমান বলেন, সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত থেকে অন্য কোনো প্রকল্পের কাজ করতে পারবে না এমন আইনগত বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে যে ১৫ টন গম বরাদ্দ হয়েছে তা দিয়ে মাটি ভরাট কাজ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে মাটি পানিতে ধুয়ে খালের মধ্যে পড়েছে। তাই এখন বুঝার উপায় নাই যে কাজ হয়েছে। পাশাপাশি আমি এই প্রকল্পের সভাপতি নই। আমার ভাই মামুন মৃধা সভাপতি, আমাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, যেহেতু হাফিজুর রহমান বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত সেহেতু তিনি কোনো প্রকল্পের সভাপতি হতে পারেন না। তিনি যদি কোনো প্রকল্পের সভাপতি হয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে থাকেন তাহলে সেটা অপরাধ করেছে। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বরিশাল সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার চরবাডড়য়া ইউনিয়নের বাটনা খালের পাড়ে রাস্তার দুই ধারে মাটি ভরাট প্রকল্প গৃহীত হয়েছিল। এজন্য ১৫ টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। ওই প্রকল্পের সভাপতি ছিল হাফিজুর রহমান। তবে তিনি সিটি কর্পোরেশনের সড়ক পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।

আর মাটি ভরাট কাজের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করে প্রতিবেদনে দিয়েছিল কাজ হয়েছে।

বরিশাল জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার রায় বলেন, কাজটি হাফিজুর রহমান নামে নেয়া হয়েছে। তবে তিনি সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা কিনা তা আমাদের জানা নেই। আর তিনি ওই সড়কের কাজ করেছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here