TT Ads

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: জন্মদিনকে ঘিরে সারপ্রাইজের নামে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম ইমতিয়াজ মাহমুদ সেজাদ (২৭)। সে বরিশালের সদর উপজেলার লাকুটিয়া বাজার এলাকার আবু তাহের মাহমুদ খোকনের ছেলে। নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ অবস্থিত ওকোহামা লেবেল এন্ড প্রিন্টিং নামক একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সময় ইমতিয়াজ মাহমুদ সেজাদের সাথে পরিচয় ঘটে ওই তরুণীর।
জানা যায়, ২০১৭ সালে ওই প্রতিষ্ঠানে ‘আর্টওয়ার্ক অ্যাসিসট্যান্ট’ পদে চাকরি নেয় ওই তরুণী। চাকরিরত অবস্থায় একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইমতিয়াজ মাহমুদ সেজাদ ওই তরুণীকে প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তরুণী এতে সাড়া না দিলে পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সেজাদ। পারিবারিকভাবে সেজাদের পরিবার ওই তরুণীকে দেখে পরবর্তী ২বছরের মধ্যে উভয়ের বিয়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেজাদ নিজের পারিবারিক অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তরুণীদের বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করায় সেজাদকে সরল বিশ্বাস করে তরুণী ও তরুণীর পরিবার।

তরুণী জানায়, ২০১৯ সালের ১ মার্চ জন্মদিন উদযাপন করার কথা বলে ইমতিয়াজ মাহমুদ সেজাদ ওই তরুণীকে রাজধানীর মুগদায় কর্মরত ফয়সাল নামের এক বন্ধুর কক্ষে নিয়ে যায়। ওই বন্ধু নামাজের কথা বলে তাদের দুজনকে কক্ষে রেখে বাইরে দিয়ে ছিটকানি লাগিয়ে দেয়। এ সময় বিয়ের কথা টেনে তরুণীর সাথে শারিরীকভাবে লিপ্ত হতে চাইলে তরুণী রাজি না হলে একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হয় সেজাদ। এই ঘটনার পর তরুণী বারবার বিয়ের কথা তুললে নানা অজুহাত দেখায় ইমতিয়াজ মাহমুদ সেজাদ।

ওই তরুণী আরও জানায়, পরিচয়ের পর থেকে সেজাদ প্রতি মাসে নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে তরুণীর কাছ থেকে টাকা নিত। এমনকি পিতার লোনের টাকা পরিশোধ করতেও ওই তরুণীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয় ইমতিয়াজ মাহমুদ সেজাদ। শুধু তাই নয়, ওই বছরেরই সেপ্টেম্বর মাসে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় ময়ূরী নামক এক চাচাতো বোনের বাসায় এনে ২য় বারের মতো সেজাদ তরুণীকে ধর্ষণ করে বলে জানান ওই তরুণী।

তরুণীর অভিযোগ, একাধিকবার শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনের পর সেজাদকে বিয়ের কথা বললে, তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রেমিক সেজাদ বরিশাল নিজ গ্রামের বাড়ি চলে যায়। নিজ বক্তব্যে ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভনে শারিরীক সম্পর্ক, সেইসাথে চাকরি হারিয়ে সে চরমভাবে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে থাকে। এমনকি একাধিকবার আত্মহত্যা করতেও উদ্যত হয় সে। গেল বছরের করোনাকালীন সময়ের তিন মাস যাবৎ কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে নিজেকে শক্ত করে তোলেন বলে জানান তরুণী। পরবর্তীতে সেজাদ গ্রাম থেকে ফিরে গোপনে ওই প্রতিষ্ঠানের গুলশান শাখায় যুক্ত হয়েছে জানতে পেরে সেজাদের খোঁজে সেখানে যায় সে।

কিন্তু, সেজাদের কোন পাত্তা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে পিটিশন (পিটিশন নং-৪৪২/২০) দায়ের করে ভুক্তভোগী তরুণী। আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, পিটিশনটি বর্তমানে পিবিআই তদন্তে রয়েছে।

অপরদিকে, অভিযুক্ত ইমতিয়াজ মাহমুদ সেজাদের কাছে মুঠোফোনে অভিযোগটির বিষয়ে জানতে চাইলে ওই তরুণীর সাথে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

সেজাদের দাবি, তরুণীকে নিয়ে সে বন্ধুর কক্ষ কিংবা বোনের বাসায় যায়নি বরং একাধিক রেস্টুরেন্টে বসেছে। এছাড়াও পারিবারিকভাবে ওই তরুণীর সাথে বিয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়টিও স্বীকার করেছেন সেজাদ।

সেজাদের ভাষ্যমতে, পারিবারিকভাবে বিয়ের কথা হলেও মেয়েটি বারবার বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। সেসময় নারায়নগঞ্জে এলাকার যুবকদের হাতে মারধর হওয়ার ঘটনায় ওই তরুণীর হাত রয়েছে বলে দাবি করেন সেজাদ। এ ঘটনার পরই তরুণীকে বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে ওকোহামা লেবেল এন্ড প্রিন্টিং (বিডি) লি. কোম্পানীতে ওই তরুণী ও ইমতিয়াজ মাহমুদ সেজাদের চাকুরীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইকবাল হোসেন। তবে, উভয়ের মধ্যে চলা বিয়ে ও প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে জানতেন না বলে প্রতিবেদককে জানান তিনি।’

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *