বরিশালে ভেজাল পণ্য উৎপাদন ও পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষা না করে বাজারজাত এবং নামিদামি ব্রান্ডের লোগোযুক্ত ভেজাল পণ্য অবৈধপথে সরবরাহ করার অপরাধে এক গোডাউন মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (২২ মার্চ) বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম রাহাতুল ইসলাম পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এ জরিমানা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএসটিআই বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা নিখিল রায় জানান, বরিশাল নগরের ইসলাপাড়া এলাকার সবুজ ভিলা নামক দোতলা ভবনটিতে থাকা গোডাউন মালিকের প্রতিনিধিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি ফুড গ্রেড সিনথেটিক কালারসহ চুলের তেল, সাবান, চকলেটসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য জব্দ করে ধ্বংস করা হয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার পরিদর্শক আব্দুর রহমান মুকুল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা ওই বাসায় অভিযান চালিয়েছি। সেখানে বিভিন্ন কোম্পানির মোড়কে নকল খাদ্যদ্রব্য রয়েছে।
বিএসটিআই এর কর্মকর্তারা যাচাই বাছাই করে দেখেছেন যে, এখান থেকে কাপড়ের রঙ ফুড কালারের মোড়কে কাঁচের বোতলে বাজারজাত করা হয়। অবৈধ ও নকল পণ্য মজুদ, সরবরাহ ও প্যাকেটজাত করা হয় এখানে বসে।
এছাড়াও এখানে নকল চকলেট, সাবান এবং তৈল সহ নানা পণ্য পাওয়া গেছে। এরপর বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম রাহাতুল ইসলাম মোবাইল কোর্টে পারভেজকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পাশাপাশি জব্দ করা নকল পণ্য ধ্বংস করা হয়।
উল্লেখ্য রোববার (২১ মার্চ) দিনগত রাত ১১টার দিকে বরিশাল নগরের ইসলামপাড়া রোড এলাকার সবুজ ভিলা নামক দোতলা আবাসিক ভবনে এ অভিযান চালানো হয়।
পুলিশ জানায়, এ গোডাউনটিতে বিভিন্ন ধরনের খাবারের জিনিস রয়েছে। বিশেষ করে কেক ও পুডিং বানানোর আনুমানিক ২০টির উপকরণ ওই গোডাউটিতে ছিলো। যারমধ্যে অভিযানের সময় কাগজের প্যাকেট, প্লাস্টিকের ছোট বোতল এবং টিনের কৌটায় কিছু উপকরণ প্যাকেটজাত করতে দেখা যায়। কিন্তু তারা গোডাউনে বসে প্যাকেটজাত করা এবং ভোগ্য পণ্যগুলোর বৈধতার স্ব-পক্ষে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
গোডাউন সূত্রে জানা গেছে, সবুজ ভিলার নিচতলায় ইস্ট, কাস্টার্ড পাউডার, কালো গোল মরিচের গুড়া, কেক ডেকোরেশেন, কোকো পাউডার, কর্ন ফ্লাওয়ার, আইসিং সুগার, আইসক্রিম পাউডার, ফুচকা মসলা, ব্যানানা ফ্লেভার, ওরেঞ্জ ফ্লেভার, চকলেট ফ্লেভার, স্ট্রবেরি ও ভেনিলা ফ্লেভার, কেওড়া জল, গোলাপ জল, বিট লবন পাউডার, আগার সহ ১৭টির অধিক পণ্য এখানে রয়েছে। এছাড়া গোডাউনে বেশকিছু ব্রান্ডের লোগোযুক্ত প্যাকেটে চকলেটসহ শিশুখাদ্য ও পণ্য রয়েছে।
ঘরের মধ্যেই প্যাকেটজাত করার কাজে নিয়োজিত মো. শাহিন জানান, তিনিসহ চারজন এখানে কাজ করেন। বাড়ির মালিকের ছেলে পারভেজ ঢাকায় চাকুরি করেন এবং এগুলো তিনিই সরবরাহ করেন। কিছু পণ্য সরাসরি কোম্পানির প্যাকেটজাত করা আর কিছু পণ্য এখানে বসে প্যাকেট করতে হতো তাদের।