বাসের যন্ত্রাংশ চুরি ও বাস শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে এবং মহাসড়কে মাহিন্দ্রাসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের দাবিতে বরিশাল-ঝালকাঠিসহ ৮টি রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বুধবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো টানা ধর্মঘটে চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রী সাধারণ। দাবিসমূহ সুরাহা ও টার্মিনালে যানবাহনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলেও জানান ঝালকাঠি জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর চৌধুরী।
ঝালকাঠি জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২২ মার্চ) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালে থাকা ঝালকাঠি মালিক সমিতির বেশকয়েকটি বাসের বাহিরের যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে বাসের চাকা ছিঁদরো করে দেয় মাহিন্দ্রার মালিক ও চালকরা।
তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে বাস শ্রমিকদের মারধর ও জীবননাশের হুমকি দেওয়া মাহিন্দ্রা চালক ও মালিকরা।
এ ঘটনার বিচার ও মহাসড়কে অবৈধ মাহিন্দ্রা চলাচল নিষিদ্ধের দাবিতে মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বেলা ১১টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিভিন্ন রুটের লোকাল বাস চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা করে ধর্মঘটের ডাক দেন বাস ও মিনিবাস শ্রমিক এবং শ্রমিক ইউনিয়ন।
প্রথম দিন অন্যান্য যানবাহন চলাচল করলেও বুধবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে এসব জেলা শহরের সাথে মাহিন্দ্রা ও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে বলেও জানান ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ।
বাস চলাচল বন্ধ থাকা রুটগুলো হল- বরিশাল-ঝালকাঠি, ঝালকাঠি-ভান্ডারিয়া, বরিশাল-খুলনা, বরিশাল-পিরোজপুর, বরিশাল-মঠবাড়িয়া, বরিশাল-পাথরঘাটা, ঝালকাঠি-রাজাপুর ও ঝালকাঠি-কাঁঠালিয়া এই ৮টি রুটের যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
দেখা গেছে, চরম দুর্ভোগের শিকার অনেক যাত্রী সময় মতো গন্তব্যে যেতে না পেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার বেশি ভাড়া দিয়ে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলসহ বিকল্পভাবে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী রুহুল আমীন নামে ঝালকাঠিগামী এক যাত্রী জানান, ভোলা থেকে আসছি। বরিশাল হয়ে ঝালকাঠি যাবো। রূপাতলি এসে শুনি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন মোটরসাইকেলে দুইজনে ৩০০ টাকায় ঝালকাঠি যাচ্ছি।
বরিশাল রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডের (বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস) মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জানান, মাহিন্দ্রা চালকরা অবৈধভাবে মহাসড়কে মাহিন্দ্রা চালায়। এতে বাস শ্রমিকরা বাঁধা দিলে উল্টো তাদের ওপর মারধর করে মাহিন্দ্রা মালিক ও চালকরা। বাসে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে আজ মাহিন্দ্রা চলাচলের জন্য বাস মালিকরা লোকসানের মুখে পড়ছে। এছাড়াও মহাসড়কে বেপরোয়া গতিতে মাহিন্দ্রা চলাচলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে৷ তাই এসমস্যা সমাধানে স্থায়ী সমাধান দরকার বলেও মনে করছেন তিনি।