#

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠীতে বিএনপি দলীয় সাধারণ কর্মীদের নাশকতার ফাঁদে ফেলে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী আওয়ামীলীগের মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়া প্রর্থীর কাছ থেকে টাকা কামানোর ধান্ধা বা পরিকল্পনা ফাঁস হয়েছে। ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সভার নামে গভীর রাত পর্যন্ত নীরহ সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের গরুর মাংস দিয়ে ভাত খাইয়ে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল ১১ এপ্রিল কলসকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিন আ’লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার। পাশাপশি এই পরিকল্পনার বাস্থবায়নে অর্থের যোগানদাতা হিসেবে সতন্ত্র প্রার্থী টিটু শিকদারকে সমর্থন দিতে বলা হয়েছিল।

#

এ ধরনের কাজে অস্থিতিশীল পরিবেশ বা নশকতা সৃষ্টি সহ কর্মী সমর্থকরা হামলা মামলার শিকার হতে পারে বলে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবুল বশার বকুল প্রশ্ন রেখে এবং খাবার না খেয়ে চলে আসেন বলে জানান। ইউনিয়ন বিএনপির সহ সপভাপতি শফিকুল ইসলাম রঞ্জু ,উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও কলসকাঠী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত হোসেন হাওলাদার, বিএনপি নেতা ও উপজেলা বিএনপি মনোনিত সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ কামরুজ্জামান নান্নু খান এই চক্রান্তের অনুঘটক বলে নানান তথ্য পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে কোন অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম হলে যাতে দোষ গাঢ়ে না পরে সেজন্য বিএনপি ঘরনার প্রার্থী জসিমকে নানান দিক থেকে চাপ দেয় আপন বড় ভাই বিএনপির সহ সভাপতি ও কলসকাঠী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত হোসেন। নিজের নিরাপত্তা ও দলীয় সমর্থন পাবেন না নিশ্চিত হয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়।

স্থানীয় বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, সতন্ত্র প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় বিশ লাখ টাকার বিনিময়ে শওকত,নান্নু,রঞ্জু, বকুল ও নুর উদ্দিন বিএনপি ঘরনার প্রার্থী জসিমকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়া এবং নির্বাচনের দিন দলীয় কর্মিদের দিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে টিটু শিকদারকে জয়ী করার পায়তারা করেছিল। স্থানীয় বিএনপির সচেতন সাধারন কর্মীরাই প্রশ্ন তুলেছেন, প্রথমত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ব্যাপারে দলীয় হাই কমান্ড কোন নির্দেশনা দেননি এবং দল থেকেও নির্বাচনে কেউ অংশ গ্রহন করেননি।

তাহলে কেন? কর্মি সমাবেশের নামে সাবেক চেয়ারম্যান শওকত হোসেনের বাগান বাড়িতে গভীর রাত পর্যন্ত গরুর মাংস দিয়ে ভাত খাইয়ে সাধারন কর্মিদের নির্বাচনী মাঠে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়া সতন্ত্র প্রর্থীর পক্ষে থাকার কথা বলা হলো। যতদুর যানা গেছে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাধারন সম্পাদক’র অনুমতি নেওয়াও হয়নি এ কর্মি সমাবেশ ডাকার ব্যাপারে।

দ্বিতীয়ত বিএনপি নেতা ও উপজেলা বিএনপি মনোনিত সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ কামরুজ্জামান নান্নু খান সব সময় ঢাকা থাকেন। দলীয় কাজে দু একদিনের বেশি তাকে বাকেরগঞ্জ বা নিজ গ্রাম কলসকাঠিতে অবস্থান নিতে দেখা যায়নি। অথচ তিনি নির্বাচনের দিন বিএনপি দলীয় কর্মীদের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মাঠে রাখতে নিজ গ্রামে টানা এক সপ্তাহ অবস্থান নিয়েছিলেন। পরিকল্পনার নানা মূখী ছক তৈরি করে ছিলেন তিনি। বিষয়টি স্পষ্ট হয় কর্মি সমাবেশ ডাকার বিষয়ে তার অগ্রনি ভূমিকা ও নির্বাচন স্থগিত হয়েছে জেনে ঢাকা চলে যাওয়া নিয়ে।

তৃতীয়ত, আ’লীগ প্রার্থী অহিদ ফয়সাল মুন্নার কাছ থেকেও পাওয়া গেছে ভয়ংকর তথ্য। তিনি জানান, কলসকাঠি ইউনিয়নে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সতন্ত্র প্রার্থী টিটু শিকদারের পক্ষে প্রতিদিন অপরিচিত লোকদের মটর সাইকেল মহড়া দিতে দেখা গেছে। তবে তাদের প্রত্যেকের কাদে ও কোমরে ব্যাগ ঝুলানো থাকতো। সেই ব্যাগে বোমা বা অস্ত্র সাদৃশ্য কিছু কলসকাঠিতে ইন করানো হচ্ছে।

এলাকার সাধারন মানুষ আলোচনা করছেন, যে ভাবে বিএনপির কয়েকজন নেতা যে ভাবে ভূল বুঝিয়ে সাধারণ কর্মীদের নির্বাচনী মাঠে থাকার জন্য অপ-উৎসাহিত করছিলেন তাতে ১১ তারিখের নির্বাচন স্থগিত না হলে নাশকতা হানাহানির ঘটনা ঘটতো। কলসকাঠী সচেতন নাগরিক সমাজ নামে একটি ফেসবুক আইডি দিয়ে প্রচার করতে দেখা গেছে, “বাকেরগঞ্জ কলসকাঠী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত হোসেন হাওলাদার ও বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ নুরউদ্দিন সহ সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী মোঃ কামরুজ্জামান নান্নু খান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল বাশার বকুল ও শফিকুল ইসলাম (রঞ্জুর) গোমর ফাঁস।

বরিশাল বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত হোসেন হাওলাদার আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও অন্তরালে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন থেকে ছিটকে পরা টিটু খন্দকারের সমর্থন দিয়েছেন। গত ৩১ মার্চ শওকত হোসেনের বাগানবাড়িতে সংগঠন বিরোধী ডাকা ইউনিয়ন বিএনপির বর্ধিতসভায় সফিকুল ইসলাম রঞ্জুর সভাপতিত্বে টিটু খন্দকারের সমর্থনে সভা করেন। এতে কলসকাঠী সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করেন শওকত হোসেন হাওলাদার, সৈয়দ নুরুদ্দিন, মোঃ কামরুজ্জামান নান্নু, আবুল বাশার বকুল ও শফিকুল ইসলাম(রঞ্জু) লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে লাঞ্ছনা গঞ্জনা মামলা হামলার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। পাশাপাশি ওই ফেসবুক পোষ্টে দালাল মুক্ত কলসকাঠি বিএনপি চাই বলে দাবি করা হয়েছে।

” ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল বাশার বকুল বলেন,নান্নু ও শওকত ভাই ৩১ তারিখ রাতে বর্ধিত সভার নামে ভোটের দিন কর্মীরা মাঠে সতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে থাকে সেটা বোঝানো হয়েছিল। যেহেতু বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহন করেনি সেহেতু এ কাজ করতে গেলে অনেক কর্মীরা হামলা মামলার স্বীকার হবে। তাই আমি এর বিরোধিতা করে না খেয়ে সভা থেকে চলে আসি। নির্বাচন থেকে সরে আসা প্রার্থী জসিম জানান, ব্যবসা ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নির্বাচন থেকে ফিরে এসেছি। তবে জসিম প্রর্থীতা প্রত্যাহারের আগে পরে সতন্ত্র প্রার্থী টিটুর ভাই একাদিকবার জসিমের বাড়িতে গোপনে আসা যাওয়া করেছিলেন।

এঘটনায়ও বিএনপির সচেতন কর্মীদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও কলসকাঠী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত হোসেন হাওলাদার ও শফিকুল ইসলাম (রঞ্জু)কে কর্মী সভা ডাকার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। পাশাপাশি দল যেখানে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি,সেখানে কেন নির্বাচনের দিন সতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোট করার জন্য কর্মিদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হলো ? এমন প্রশ্নে কোন সদুত্তর মেলেনি তাদের কাছ থেকে।

অন্যদিকে কর্মী সমাবেশে উপস্থিত প্রায় ৩০০ জনকে বিয়ে বাড়ির মতো খাওয়ানোর টাকার যোগান দিলো কে? তারও কোন উত্তর দেননি। উপজেলা বিএনপি মনোনিত সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ কামরুজ্জামান নান্নু খানকে এ বিষয়ে জানার জন্য তার মোবাইলে একাদিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এদিকে নির্বাচনের নানান ঘটনার অভিযোগর বিষয়ে নিয়ে সতন্ত্র পার্থী টিটু শিকদারর কাছে জানতে চাইলেও তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here