চাঁদপুরে আলোচিত ধর্ষণ ঘটনা মামলার প্রধান আসামি আমজাদ মাহমুদ নিলয়কে (২১) বরিশালের ভোলা জেলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৪ মে) ভোরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামীকে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাকে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল গৃহকর্মী কারও কাছে কোনো প্রতিকার না পেয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করলে চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পরে ঘটনার বিষয়ে অবগত হয়ে শারীরিক নির্যাতনের দায়ে ধর্ষকের মা শাহানাজ বেগমকে (৪৫) আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। ওই সময় ধর্ষক আমজাদ মাহমুদ নিলয় ও তার বাবা আব্দুল মাজেদ (৫৪) পালিয়ে যাওয়ায় তাদেরকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, আব্দুল মাজেদ ও শাহানাজ দম্পতি চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এ কর্মরত। তারা ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার চরশফী গ্রামের বাসিন্দা। চাঁদপুর ওয়ারলেছ বাজার সিরাজ বরকান্দাজের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করে আসছিলো।
সূত্রে জানা যায়, ধর্ষিতা গৃহকর্মীর মা অন্যত্র বিয়ে করে চলে যায়। দীর্ঘ ৪ বছর যাবৎ এই দম্পতি তাকে দিয়ে বাসার কাজ করে আসছিল। এই চার বছরে তারা ধর্ষিতার কোন টাকা পয়সা পরিশোধ করেনি। লকডাউনের কারণে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় তাদের ইউনিভাসিটিতে পড়ুয়া ছেলে আমজাদ মাহমুদ নিলয় বাড়িতে চলে আসে। এ সময় বাবা-মা কর্মস্থলে চলে গেলে সে তাদের কাজের মেয়েকে ১ বছর যাবৎ বাসার মধ্যে একা পেয়ে ধর্ষণ করে আসছিল। ভিকটিম বিষয়টি বাবা মাকে অবহিত করলেও তারা বিষয়টি কর্নপাত না করে ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ থাকতে বাধ্য করে।
পুলিশ জানায়- সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল দুপুর ১২ টার সময় ধর্ষকের বাবা-মা আব্দুল মাজেদ দম্পতি অফিসে গেলে এই সুযোগে তাদের ছেলে আমজাদ মাহমুদ নিলয় ভিকটিমকে আবারও ধর্ষণ করে। ভিকটিম সর্বশেষ ঘটনার বিষয়টি আব্দুল মাজেদ দম্পতিকে জানিয়ে প্রতিকার চাইলে শাহনাজ বেগম ও তার ছেলে আমজাদ মাহমুদ নিলয় ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। ভিকটিম তাদের দীর্ঘদিনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ৩০ এপ্রিল আত্মহত্যার উদ্দেশে বাসা হতে রাস্তায় বের হয়।
এই বিষয়টি থানা পুলিশ জানতে পেরে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। এবং তার কাছ থেকে বিষয়টি পুরোপুরি অবহিত হয়। পরে ওই দিন শাহনাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এবং এই সংক্রান্তে তাদের বিরুদ্ধে ভিকটিমের আবেদনের প্রেক্ষিতে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা রুজু করে শাহনাজ বেগমকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, ভোরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ভোলা থেকে আসামীকে আটক করা হয়েছে। আজ আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এছাড়াও মামলার অপর আসামি বাবা আবদুল মাজেদকে গ্রেপ্তার চেষ্টা চলছে।’