ফের বিতর্কে জড়ালো বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের বিতর্কিত সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন। ফেসবুক লাইভে বরিশালের সাবেক জেলা প্রশাসককে নিয়ে কটুক্তি করা সুজন এবার হাতুড়ি পেটা করেছেন এক ব্যবসায়ীকে।
পাওনা টাকা চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ওই ব্যবসায়ীর মাথায় হাতুড়ি পেটা করেছে সুজন। এসময় হামলা ভাংচুর করা হয় রাহাতের বসতবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
শনিবার (১৫ মে) রাতে বরিশাল সদর উপজেলার নরকাঠি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে অজ্ঞান অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন রুহুল কুদ্দুস রাহাত নামের ওই যুবক। গুরুতর আহত রাহাত বরিশাল সদর উপজেলার নরকাঠি এলাকার বাসিন্দা।
অজ্ঞান অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাবার পরামর্শ দিয়েছেন।
এলাকাবাসী ও স্বজনরা জানিয়েন, রুহুল কুদ্দুস রাহাত নামের যুবক ভোলায় মাটি কাটার ব্যবসা করেন। ঈদ করতে তিনি তার গ্রামের বাড়ি বরিশালে আসেন। পরে পাওনা টাকা নিয়ে বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রমান সুজনের সাথে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়।
তারা আরও জানান, সুজনের এক আত্মীয় ভোলায় বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়ে ছলছাতুরি করছিলো। এ নিয়েই বিরোধ হয় সুজন ও রাহাতের মধ্যে। পরে বিষয়টি নিয়ে রাহাত ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিলে ক্ষিপ্ত হয় সুজন।
এর জের ধরে শনিবার রাতে দলবল নিয়ে মোটর সাইকেলে মহড়া দিয়ে রাহাতের এক বন্ধুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় সুজন ও তার লোকেরা। পরে রাহাতের বাড়ি গিয়ে ভাংচুর করে এবং রাহাতকে ধরে মাথায় হাতুড়িপেটা করে।
পরে স্থানীয়রা তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহত রাহাতের জ্ঞান ফেরেনি।
এ প্রসঙ্গে রাহাতের বাবা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সুজনের স্বজন তুহিন এর কাছে কয়েক লক্ষ টাকা পাবে। সেই টাকা চাইতে গেলে সুজন তার কর্মীদের নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ছেলেকে মারধর করে।
এ প্রসঙ্গে মহানগরীর বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন,
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং আহত যুবকের খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে।রাহাতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে সুজনসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই মামলায় সুজনের ২ অনুসারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজনের বিরুদ্ধে পূর্বে থেকেই নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। গত বছর তিনি ঐক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বিসিসি মেয়রের নাম না বলায় ফেসবুক লাইভে বরিশালের সাবেক জেলা প্রশাসক কটুক্তি করেন।
এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে তুমুল বিতর্কে জড়ান স্থানীয় আওয়ামীলীগ। বিতর্ক এড়াতে সুজনকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।
তবে পরবর্তীতে মাস কয়েক পর্বে আশিকুর রহমান সুজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এর পর থেকেই ফের বেপরোয়া কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলেন ছাত্রলীগ নেতা সুজন। সবশেষ শনিবার ওই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংঘটিত করেন তিনি।