TT Ads

ঝালকাঠির সদর উপজেলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন স্নাতকের এক ছাত্র। নিহত রাজু খান সদর উপজেলার বিনয়কাঠি শেরে বাংলা ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা কমিটির সদস্য ও গগন গ্রামের দফাদার বাড়ির হাবিবুর রহমান খানের (বাবুল) পুত্র এবং ওই কলেজের স্নাতকের ছাত্র।

 

রোববার (২৩ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়িতে গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন রাজু। এর আগে দেয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি বাবা, মা, ভাই, বোন, বন্ধু-বান্ধব, এমনকি পারিবারিক শত্রুর কথাও উল্লেখ করেছেন।

এ বিষয়ে ওই কলেজের শিক্ষক সাইফ খান জুয়েল বলেন, ‘আমার কলেজের ডিগ্রির ছাত্র মাহফুজুর রহমান রাজু আত্মহত্যা করেছেন। তার আত্মহত্যা যেমন শোক বহন করে তেমনি আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। স্ট্যাটাসে রাজু বাবা, মা, ভাই, বোন, বন্ধু-বান্ধব এমনকি তার পারিবারিক শত্রুকেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। সবার কাছে ক্ষমা এবং দোয়া চেয়েছেন।’

ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘গগন গ্রামের এক কলেজছাত্র গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে শুনেছি। মৃতদেহ বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানেই ময়নাতদন্তের কাজ সম্পন্ন হবে।’

 

রাজু খান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘বাবা পারলে আমাকে মাফ করে দিয়েন। এমন কিছু করব আমি জীবনে কল্পনাও করি নাই বাবা। তাই আজ আমি করে ফেলেছি। আপনার পা ধরে যে আমি ক্ষমা চাইব তাও আমি পারছি না আব্বা। আপনার গায়ে আমি হাত দিয়েছি আব্বা। আমি যদি কাউকে ভালবাসি সেটা আপনি ছিলেন, সেই আপনার সঙ্গেই আমি আমার জীবনের বড় ভুলটা করছি। মা তোমার সঙ্গেও আমি অনেক খারাপ ব্যবহার করছি জীবনে, তুমিও পারলে ক্ষমা করে দিও। বড় এবং মেজ ভাইয়া আপনাদের সঙ্গেও আমি অনেক ভুল করেছি, পারলে আপনারাও আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। বড় আর ছোট আপু তোমাদের মনেও আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি, তোমরাও পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। জয়, আবির, আকাশ, তাসনিম তোদেরকে আমি আমার জীবনে কান্না ছাড়া কিছুই দিতে পারি নাই। আমি এমন একটা লোক যে কিনা তার পরিবারকে কষ্ট ছাড়া কিছুই দিতে পারে নাই। আর জীবনে কিছু পারবে কিনা তাও জানা নাই। তাও সবাই আমাকে অনেক ভালবাসতো। আজ আমি যে কাজটা করছি তার কোনো ক্ষমা হয় না। তাই কার মনে আমি আর কষ্ট দিতে চাই না বলেই এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি। এই পৃথিবীতে আমার থাকার কোনো অধিকার নাই। পারলে আপনারা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘অনেককে অনেক কিছু বলার ছিল, কিন্তু কারও কাছেই কিছু শেয়ার করতে পারলাম না। ভালো থাকুক এই পৃথিবীর সকল মানুষ। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। দয়া করে আমার মৃত্যুর পরে আমাকে নিয়ে কেউ শত্রুতা করবেন না। রেজাউল ভাই সারাজীবনই তো আব্বার সঙ্গে শত্রুতা করছেন, এখন আর কইরেন না, পারলে আব্বার পাশে থাইকেন, আমার জীবনের শেষ অনুরোধটা রাখেন ভাই। আমার মৃত্যুর জন্য আমি নিজেই দায়ী। আল্লাহ সারাজীবনে তোমার কাছে যা কিছু চাইছি তুমি তা কিছুই দেও নাই। তোমার কাছে আমার জীবনের শেষ চাওয়া আমার পরিবারকে সারাজীবন সুখে রেখ। মো. মাহফুজুর রহমান খান রাজু।’

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *