TT Ads

 

বরিশাল নগরী থেকে তিন মাদক ব্যবসায়ী আটক করেছেন মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর। গত মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আটক করা হয়।আটকৃত মাদক ব্যবসায়ীরা হলেন ভাটিখানা এলাকার চিহ্নিত একে এম আব্দুল্লাহ(ইফতি), মোঃ সাইফুল ইসলাম, ইব্রাহিম খান টিপু।মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,গোপন সম্পদের ভিত্তিতে জানতে পারেন ভাটিখানা এলাকায় একদল কিশোর মাদক সেবন ও বিক্রি করছেন। মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের চৌকস টিম
ভাটিখানা কাজি বাড়ি মসজিদের পাশে একেএম আবদুল্লাহ(ইফতি) বাসায় অভিযান চালিয়ে এই তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেন।পরবর্তীতে তাদের বয়স বিবেচনা করেনপ্রত্যেক কে ৫০০০(পাঁচ হাজার) টাকা করে অর্থদন্ড ও ১৫ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তারা এলাকার চিহ্নিত মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ী এবং এলাকার কিশোর গ্যাং এর সদস্য।এলাকার ছোট ছোট বিষয় নিয়ে এলাকার অনেক কিশোর একসাথে হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারিতে জড়ান।তাদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ এলাকায় থাকতে পারছেন না।
বর্তমানে এই কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিদিনই এলাকায় ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, জমিদখল, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, ধর্ষণ এবং খুন-খারাবি ইত্যাদি অপরাধের ঘটনা ঘটছে। এদের অত্যাচার নির্যাতনে সমাজ বিষিয়ে উঠেছে। মানুষ অস্বস্তিকর অশান্তির মধ্যে দিনাতিপাত করছে। সমাজের নিরীহ অংশ বিশেষ করে যাদের কোনো প্রভাব প্রতিপত্তি নেই বা প্রভাবশালী মহলের সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক ও যোগাযোগ নেই তাদের আতঙ্কই বেশি। তারা তাদের সহায়-সম্পদ ও উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটায়; কখন কারা জায়গা-জমি দখল করতে আসে বা চাঁদা দাবি করে অথবা স্কুল-কলেজে পড়–য়া মেয়েটিকে কখন কোন বখাটে বিরক্ত করে বা স্কুলে যাওয়া ছেলেটিকে তাদের গ্যাংয়ের দলে ভিড়িয়ে ফেলে। এ ছাড়া এসব গ্যাংয়ের উৎপাতে পাড়ায় পাড়ায় মারামারি কাটাকাটি তো লেগেই আছে। এই কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি বর্তমানে তরুণদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। হিরোইজম বা বাহাদুরি, কাঁচা টাকা-পয়সা, মাদকাসক্তি, সাংস্কৃতিক চর্চার নামে সস্তা ছেলে-মেয়েদের অবাধে মেলামেশার তীব্র আকর্ষণ ইত্যাদি হাতছানি দিয়ে ডাকায় দ্রুত এ সমস্ত গ্যাং এবং তাদের সদস্যসংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে টিকটক, লাইকি ইত্যাদি নানান ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পথভ্রষ্ট হয়ে তরুণরা কিশোর গ্যাংয়ে নাম লেখাচ্ছে। ফলে সমাজকে ভেতরে ভেতরে উইপোকার মতো খুবলে খেয়ে ফেলছে এই অশুভ চর্চা। উঠতি বয়সের, স্কুল-কলেজগামী কিশোরদের একটি অংশ লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে ওই দিকেই ঝুঁকছে। ফলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সুড়ঙ্গের অপরপ্রান্তে জমা হচ্ছে নিকষকালো অন্ধকার। যারা এই জাতিকে আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবে তারা যদি এই আগ্রাসী কিশোর গ্যাং সংস্কৃতির চর্চা করে বেড়ে ওঠে তবে আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ সত্যিই অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে। সুতরাং আজকের কিশোর গ্যাং কালচার দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য এক মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শহুরে জীবনের পাড়ায় পাড়ায় কিশোর-তরুণরা প্রথমে ছোট ছোট গ্রুপ করে ‘স্টার বন্ড’, ‘সাইজ কইরা দে’, ‘আমিই বস’ ইত্যাদি উদ্ভট অথচ রোমাঞ্চকর গ্রুপের নামে আড্ডারাজি শুরু করে। ধীরে ধীরে শুরু হয় ছোট ছোট দলগত অপরাধকর্ম ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার বা দলগত সেরা হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া। অন্য দল বা অন্য এলাকার কিশোরদের ওপর প্রভাবশালী হয়ে উঠার এক রোমাঞ্চকর স্বাদ তারা পেয়ে যায় কাউকে মারধর করে বা অপমান করে।

ভিকটিমরাও তখন প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ফলে ঘটে যায় খুনের ঘটনা। জড়িত হয়ে পড়ে স্থানীয় নেতারাও। তারা ‘বড় ভাই’ হিসেবে আগলে রাখেন গ্যাংগুলোকে। বিনিময়ে নিজেদের আর্থরাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে থাকেন এসব গ্যাংকে। গ্যাংয়ের সদস্যরাও ‘বড় ভাই’দের শেল্টারে থেকে নির্বিঘ্নে করে যায় নানা অপরাধ। ‘বড় ভাই’য়েরাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্পর্শ থেকে আগলে রাখে গ্যাংয়ের সদস্যদের। এভাবে একটি কিশোর গ্যাং জন্ম নিয়ে দাপটের সাথে এলাকায় বিস্তার করে ‘অপরাধ সাম্রাজ্য’।
প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছেন এলাকাবাসী এই কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে মুক্তি চাই।না হয় এলাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে।

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *