উজিরপুর প্রতিনিধি॥ বরিশালের উজিরপুরে প্রাইভেট শিক্ষক কর্তৃক এসএসসি পরিক্ষার্থীকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে শারিরিক নির্যাতন করে, ক্ষোভে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ প্রাইভেট শিক্ষকসহ ২ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। ছাত্র’র পরিবার ও পুলিশ সুত্রে জানা যায় উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের মুলপাইন গ্রামের আব্বাস ফকিরের ছেলে রিফাত ফকির(১৬) এবং বড়াকোঠা ইউনিয়নের গড়িয়া গ্রামের সেলিম আকনের মেয়ে তানজিলা হাসান তোফা চৌমুহনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একই ক্লাসে লেখা-পড়া করে।
এরই সুবাদে দুজনের মধ্যে দেড় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরলে ছাত্রীর মাতা জোবেদা বেগম ২৫ মে সকালে প্রাইভেট শিক্ষক গড়িয়া গ্রামের ছত্তার গোমস্তার ছেলে রফিক গোমস্তা(২৫) এর কাছে নালিশ করেন। প্রাইভেট শিক্ষক রফিক অতি উৎসাহী হয়ে একই এলাকার আশ্রাব আলি হাওলাদারের ছেলে ইমরান হোসেন হাওলাদারকে বিষয়টি জানান।
এরপর ইমরান বিকেল ৩টায় রিফাতকে বাড়ী থেকে ডেকে গাববাড়ী নামক স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে রফিক ও ইমরান মিলে শাসনের নামে প্রকাশ্যে ছাত্র রিফাতকে মারধর করে এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকী দিয়ে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। হামলার ঘটনা ও প্রেম সংঘঠিত বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষোভে ২৬ মে সকাল ৭টায় নীজ বসত ঘরে বিষপান করে ওই ছাত্র। বাড়ীর লোকজন টের পেয়ে মূমূর্ষ অবস্থায় রিফাতকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২ টায় মারা যায়। লাশ ময়না তদন্ত শেষে বিকেলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই দিন জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ছাত্র’র দাদী হোসনেয়ারা বেগম(৭০) সাংবাদিকদের কান্না করে বলেন আমার নাতি রিফাত তার সহপাঠি তানজিলার সাথে প্রেমের সর্ম্পক থাকায় তার মাতা জোবেদা বেগম প্রাইভেট শিক্ষক রফিকের কাছে নালিশ করেছে। এরপর রফিক ইমরানকে পাঠিয়ে আমার সামনে থেকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দিয়ে রিফাতকে ডেকে নিয়ে মানুষের সামনে মারধর করেছে।
একারনেই আমার আদরের নাবালক নাতী রাগে, ক্ষোভে, লজ্জায় এবং ভয়ে বিষপান করেছে। মামলার বিষয়টি ৩১ মে উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জিয়াউল আহসান নিশ্চিৎ করেছেন। অভিযুক্ত প্রাইভেট শিক্ষক মোঃ রফিক গোমস্তা ও স্থানীয় ইমরান হাওলাদার ঘটনার পর থেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে রফিকের কাছে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানিনা বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান ।
ছাত্রীর পরিবারের লোকজনও বাড়ীতে না থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এদিকে নিহত ছাত্র’র পরিবার ও এলাকাবাসী সুবিচারের দাবীতে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছে।