স্ত্রীর পরকীয়ার অভিযোগ দেওয়াটাই যেন কাল হয়ে দাড়িয়েছে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের পশুরীকাঠী গ্রামের মৃত নাছির উদ্দিন হাওলাদের পুত্র মোটরসাইকেল চালক মো: মতিউর রহমান সুমনের। অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে ভূক্তভোগী সুমনের স্ত্রীকে বিভিন্নভাবে লোভ-লালসা দেখিয়ে বিবাহ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী মডেল থানার এএসআই শরীফ এমন অভিযোগ করেন মো: মতিউর রহমান সুমন। এ সকল বিষয় নিয়ে ভূক্তভোগী সুমন এরআগেও পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কোন সুরাহা না পেয়ে ফের বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) এএসআই শরীফের বিরুদ্ধে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। যদিও এএসআই শরীফ তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তার মানক্ষুন্ন করা হচ্ছে বলে দাবী করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুমন তার স্ত্রীকে দিয়ে এএসআই শরীফের কাছে মোবাইল নাম্বারের উপর একটি অভিযোগ করান। সেই থেকেই সুমনের স্ত্রীর সাথে এএসআই শরীফের সাথে পরিচয় হয় এবং তার সাথে একাধিকবার মোবাইলে কথাবার্তা হয়। এমনকি তার স্ত্রীকে বিভিন্ন ধরনের লোভ-লালসা দেখিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর তার স্ত্রীকে আনতে গেলে তার সাথে খারাপ আচরণ করে এবং পুলিশের হুমকি দেয়। পরবর্তীতে সুমনের স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে নোটিশ পাঠায়। সুমন তার মেয়ে আনতে গেলে সাদা কাগজে তিনটি স্বাক্ষর রেখে মেয়ে দিয়ে দেয়। এরপর লোক সমাজে এসআই শরীফ তার স্ত্রীকে বিবাহ করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছিলেন সুমন।
সুমন অভিযোগ করে বলেন- এর আগে যে অভিযোগ করেছিলাম তাতে কোন বিচার হয় নাই, কারন আমার কাছে কোন প্রমান ছিল না। তবে এখন কিছু প্রমান যোগার করেছি। গত ৬ মাস আগে এএসআই মােঃ শরীফের বউ মােসাঃ সিমা বেগম আমার কাছে ফোন করে সত্যটা জানতে চাইলে আমি তাকে সবটা জানাই। আস্তে আস্তে বড় বউ সিমা বেগম তার (শরীফের) চলায় ফেরায় সে আমার স্ত্রীকে বিবাহ করেছে সে বিষয়টি বুঝতে পারে। এমনকি বিবাহের ব্যাপার সিমা বেগমের পরিবার সবাই জানতে পেরে যায়। তার পর সিমা বেগম শরীফকে বাধা দিলে তাকে তালাখের হুমকি দেয় শরীফ। সেই ভয়ে দুটি সন্তান নিয়ে একজন অসহায় নারী কোথায় দারাবে তার জন্য সে কোন অভিযােগ দিতে পারে নি। এএসআই মােঃ শরীফের বড় বউ সিমা বেগম প্রতিদিন আমাকে ফোন করে এ কথা বলতাে। এএসআই মােঃ শরীফের বড় বউ সিমা বেগম আমার সাথে যে ফোনে কথা হয়েছে তার কল রেকর্ড ও ভয়েস রেকর্ড প্রমান হিসাবে আমার কাছে রয়েছে। এবং ৪ মাস আগে এএসআই মােঃ শরীফে সাথে আমার স্ত্রী লাবনীর সাথে ঝগড়া হয় তার পরে লাবনী বাড়ি থেকে রাগ করে বাকেরগঞ্জ ১০ মিনার তার চাচাতাে দুলা ভাইয়ের বাড়িতে যায় খােঁজ করতে করতে সেখানে গিয়ে লাবনীকে পায় এএসআই মােঃ শরীফ তার ছােট স্ত্রী। সেই চাচাতাে বােনের কল রেকর্ড ও ভয়েস রেকর্ড প্রমান হিসাবে আমার কাছে রয়েছে। এদিকে সাহেবের হাট সােনালি ব্যাংকে লাবনীর নামে একাউন্ট করে দিয়েছে মােঃ শরীফ, তার তথ্য আমার কাছে রয়েছে। এএসআই মােঃ শরীফ শুধুই এতেই খান্ত নয় তার বিরুদ্ধে অভিযােগ দিয়েছি বলে সে চাকুরিতে জয়েন্ট করার পর আমাকে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন জেলা থেকে মামলার জড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দিয়েছে। আর এই নিয়ে বারবারি করলে প্রাণে মারারও হুমকি দিয়েছে। আমি আমার অসহায় মেয়েকে নিয়ে কোথায় দাড়াবাে। আমার স্ত্রী লাবনীর বাবার বাড়িতে রাতে এএসআই মােঃ শরীফের যাওয়ার একাধীক প্রমান রয়েছে। আমি আমার স্ত্রীকে কোন এক ব্যক্তি ফোনে আজে বাজে কথা বলত তার জন্য থানায় অভিযােগ দিলাম এএসআই মােঃ শরীফের কাছে। সে আমার সংসারের বিষয় নিয়ে সুষ্ঠ বিচার না করে আমার স্ত্রী লাবনীকে লােভ দেখিয়ে সে নিজেই তার সাথে সংসার করে। মাননীয় পুলিশ কমিশনারের কাছে বিনীত আবেদন পুলিশ জনগনের জন্য কিন্তু রক্ষক যখন ভক্ষক তখন জনগন কোথায় যাবে। আমার ৯ বছরের মেয়েকে অনাথ করে দিল এবং আমার সংসার ভেঙ্গে দিল এএসআই মােঃ শরীফ। আমি পূনরায় এর সঠিক বিচার চাই।
এরআগে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে এএসআই শরীফ জানিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। তার মানক্ষুন্ন করার জন্যই এমন অভিযোগ আনা হয়েছে। সুমনের স্ত্রীকে আমি বিবাহ করতে যাব কেন ওই মহিলাওতো ভাল না।
কিন্তু আজ তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভি করেন নি।