বরিশালে কলেজছাত্র সোহাগ সেরনিয়াবাত হত্যা মামলার রায়ে দুজনের ফাঁসি এবং চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ সময় অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ১০ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক টিএম মুসা এ রায় ঘোষণা করেন।
ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া দুই আসামি হলেন— জিয়াউল হক লালন ও রিয়াদ সরদার।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মামুন, ইমরান, বিপ্লব ও ওয়াসিম সরদার।
মামলার বিবরণে বলা হয়, বরিশালের উজিরপুর পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের হোসেন সেরনিয়াবাতের ছেলে সোহাগ সেরনিয়াবাত ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার বন্ধুকে বাসায় এগিয়ে দিয়ে ফেরার পথে আসামিরা উজিরপুরের রাখালতলা এলাকায় তার ওপর চড়াও হয়ে রামদা দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।
এর আগে আসামিরা এক লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে। পরে নিহতের মামা খোরশেদ আলম বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামি করে উজিরপুর থানায় থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ একই বছরের ২২ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করে।
পরে মামলাটি বিচারে এলে আদালত ৩১ সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণ ও আলামত বিবেচনায় আসামি জিয়াউল হক লালন ও রিয়াদ সরদারকে ফাঁসির দন্ডাণ্ডদেশ দেন। এ ছাড়া আসামি মামুন, ইমরান, বিপ্লব ও ওয়াসিম সরদারকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১০ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
নিহতের বাবা ফারুক হোসেন সেরনিয়াবাত বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে যারা বেকসুর খালাস পেয়েছেন, তারাও হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। রায়ের পূর্ণাঙ্গ আদেশ কপি পেলে তা নিয়ে আমি উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করি হত্যায় জড়িত থাকার অপরাধে উচ্চ আদালত তাদের শাস্তি দেবেন।
নিহতের মা শাহনাজ পারভীন বলেন, রায়ে খুশি হয়েছি। তবে খালাসপ্রাপ্ত ১০ জনের সাজা দিলে আরও ভালো হতো। তারাও আমার ছেলের হত্যায় জড়িত ছিল।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এটিএম আনিসুর রহমান বলেন, অপরাধ করলে শাস্তি পেতেই হবে, যা এই রায়ের মাধ্যামে প্রমাণিত হয়েছে।