#

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দাবিকৃত যৌতুকের টাকা ও স্বর্ন লংঙ্কা না পেয়ে ঝালকাঠির মেয়ে এক সন্তানের জননী সুমাইয়া আফরিনকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করার জন্যই ঢাকায় নিয়েছিলেন তার স্বামী ওমর ফারুক।

#

এমনই একটি অভিযোগ দায়ের করে থানায় মামলা করেছেন নিহত সুমাইয়ার বাবা মনিরুজ্জামান তালুকদার। সেই মামলায় আসামী করা হয়েছে তার স্বামী ওমর ফারুক ও শ্বাশুরী,শ্বশুরসহ আরো দুই জনকে। মামলায় নিহতর বাবা উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ঝালকাঠির খাগুটিয়া গ্রামের মনিরুজ্জামান তালুকদারের মেয়ে সুমাইয়া আফরিন (১৯) এর সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়েছিলো ঝালকাঠির সুগন্ধিয়া গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে ওমর ফারুক এর সাথে।

বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী ওমর ফারুক যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময় সুমাইয়াকে শারীলিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করতেন। স্বামী ও শ্বাশুরীর নির্যাতন সইতে না পেয়ে প্রায় সময় তার মেয়ে শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে আসতেন। পরে তাকে বুঝিয়ে কয়েকবার পূর্নরায় তার শ্বশুর বাড়িতে দিয়েও এসেছিলেন তিনি।

নিহতর বাবা মনিরুজ্জামান আরো বলেন, সুমাইয়ার জামাই ওমর ফারুক ঢাকার সদর ঘাটে কাপুড়ের ব্যবসা করার সুবাদে সুমাইয়াকে পরিকল্পনা ভাবে মারা জন্য মৃত্যুর ১৯ দিন পূর্বে যাত্রাবাড়ী থানাধীন ৭৬/১/এ/৪, উত্তর যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসা রোড, ইয়াছিন হাওলাদারের ৪র্থ তলা বাড়ীর ৪র্থ তলায় বাসায় ভাড়া উঠেন ৬ মাসের সন্তানকে নিয়ে সুমাইয়-ওমর ফারুক দম্পতি।

তবে স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়েও প্রায় দিনই যৌতুকের টাকা ও সন্তানকে স্বর্ণের চেইন না দেওয়ার কারনে স্ত্রী সুমাইয়াকে মানষিকভাবে অত্যাচার করতেন স্বামী ওমর ফারুক। এমনকি সুমাইয়া মারা যাওয়ার আগের দিনও তার স্বামী তাকে শারীরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে সুমাইয়া তার মাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন বলে সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন নিহতর বাবা মনিরুজ্জামান। গত ১৩/০১/২০২২ তারিখ অনুমান রাত ১১ টা ১৫ মিনিটের দিকে হঠাৎ করে সুমাইয়ার মাকে ফোন করেন ওমর ফারুক। ফোন করে তাদের জানানো হয় আপনার মেয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

আমি তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছি। আপনারা এখনই ঢাকায় আসেন। আপনার মেয়ের অবস্থা বেশি একটা ভালো না। পরবর্তীতে আমি সহ আমার পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় এসে তাদের ভাড়া বাসায় গিয়ে জানতে পারি আমার মেয়ে সুমাইয়া ও তার স্বামী ওমর ফারুকের সাথে সাংসারিক কলহে তর্ক নিয়ে প্রতিদিনই তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হতো বলে নিহতর পরিবারকে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রতিবেশিরা।

এবং কি মারা যাওয়ার দিনও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। সেই জের ধরে সুমাইয়া তার ওড়না দিয়ে ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়েছে আত্মহত্যা করেছে বলে জানান স্বামী ওমর ফারুক।

পরে পাশ্ববর্তী রুমের লোকজন টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করে আইসিইউতে রেফার করেন। পরে ১৪/১/২০২২ তারিখ সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে চিকিৎস্বাধীন অবস্থায় সুমাইয়ার মৃত্যু হয়। তবে সুমাইয়ার পরিবারের দাবি তার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। সুমাইয়াকে হত্যা করার জন্যই তার স্বামী ওমর ফারুক পরিকল্পিত ভাবেই স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছেন।

সুমাইয়ার মৃত্যুর বিষয়টি সন্দেহ হলে তারা বাবা মনিরুজ্জামান তালুকদার বাদী হয়ে ১৫/০১/২০২২ তারিখ ঢাকা যাত্রাবাড়ী থানায় ৩০৬/৩৪ ধারায় স্বামী ওমর ফারুক সহ ৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৪৩(৭)/১। মামলা দায়ের পরে অভিযুক্ত ১ নং আসামী ওমর ফারুককে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ আটক করে আদালতে প্রেরন করেন। এবিষয়ে অভিযুক্ত ওমর ফারুকের বড় ভাই ফোরকান বলেন, যৌতুকের জন্য তাকে শারীলিক অথবা মানসিক নির্যাতন করা হয়নি।

এবং কি তাকে হত্যাও করা হয়নি। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহের কারনে আত্মহত্যা করেছে বলে তাদের দাবি। তিনি আরো বলেন, লাশের ময়নাতদন্তের রির্পোটে যদি আসে আমার ভাই তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। তাহলে আদালত যে বিচার করবে সেটাই আমরা মেনে নিবো। কিন্তু তার আগে আমার ভাইকে আপরাদী বলা যায় না।

এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকতা (সাব-ইন্সপেক্টর) মাহমুদা রহমান বলেন, হত্যার অভিযোগ এনে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার ১ নং আসামীকে আটক করে আদালতে প্রেরন করেছি। এবং কি আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। মামলার বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টাও চলছে।

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here