বছর দুয়েক আগে নির্মাণকাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় সোয়া তিন কোটি টাকার সেতুতে ৩০ ফুট কাঠের তৈরি মই বেয়ে উঠতে হয়।
এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। বছরের পর বছর সংযোগ ছাড়া সেতুটি পড়ে থাকলেও এ বিষয়ে উদাসীন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। যদিও তারা বলছেন বরাদ্দ না থাকায় সংযোগ সড়ক নির্মাণে দেরি হচ্ছে।
জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে এলজিইডির আওতায় সোয়া তিন কোটি টাকা ব্যয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের হানুয়াবাজারের হানুয়া মতিজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পোড়াধন খালের ওপর এ সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করেন স্থানীয় ঠিকাদার নাসির মাঝি।
২০২১ সালের শুরুর দিকে নির্মাণকাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সেতুটি এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না।
সেতুটি দিয়ে পারাপারের জন্য স্থানীয়রা টাকা তুলে প্রায় ৩০ ফুট কাঠের দুটি মই তৈরি করে কোনোভাবে যাতায়াত করছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সংযোগ সড়ক ছাড়া সেতুটি পড়ে থাকলেও এলজিইডি এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে হানুয়াবাজারের ব্যবসায়ী মাসুদ সিকদার জানান, সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় খোদাবক্সকাঠী গ্রামের মানুষ তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে গাড়িতে মালামাল নিতে হয়। সেতুটি এর চেয়ে না থাকায় ভালো ছিল।
হানুয়া মতিজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সাহানা পারভীন জানান, সেতুর সংযোগ সড়ক না করায় এলাকার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। বিশেষ করে সেতুর সামনেই আমার বিদ্যালয়ে প্রায় তিনশর মতো শিক্ষার্থী আছে।
যাদের বেশিরভাগ সেতু পার হয়ে বিদ্যালয় আসা-যাওয়া করে। ছোট ছোট বাচ্চারা মই বেয়ে সেতুতে উঠতে গিয়ে অনেক সময় পড়ে দুর্ঘটনার শিকারও হয়েছে।
সেতুটির বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বাদল বলেন, এ বিষয়ে একাধিকবার উপজেলার মাসিক মিটিংয়ে বলছি, তার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি এলজিইডি।
সংযোগ সড়কের বিষয়ে জানতে চাইলে বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী এলজিইডি আবুল খায়ের মিয়া বলেন, এ সেতুর সংযোগ সড়কের জন্য নতুন করে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে দ্রুত সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা হবে।
সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক ব্যয় ধরা ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক ব্যয় ধরা থাকলেও সংযোগ সড়কের জন্য নতুন করে ডিজাইন করা লাগবে। সংযোগ সড়কের জন্য ঠিকাদারকে কোনো বিলও দেওয়া হয়নি।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল জানান, সেতুর সংযোগ সড়কের বিষয়ে মাসিক মিটিংয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানও হতাশ। এলজিইডি প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।