#

 

#

গত ২১ বছর ধরে পৌরসভা ভবনে চলছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) কার্যক্রম। বিভিন্ন সময়ে ভবনের কক্ষ এবং বাইরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে কার্যক্রমে গতি আনার চেষ্টা চালিয়েছেন মেয়ররা। এক যুগ আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা ভবনে বছরের পর বছর চলছে নগরবাসীর সেবা। তবে বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত দায়িত্ব নেওয়ার আগে এটি অপসারণ করে বহুতল ভবন তৈরির উদ্যোগ নেন। এজন্য সরকার থেকে প্রায় ১৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ নিতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন ঘোষণা করা হয়। ওই সময় দোতলা পৌর ভবনে শুরু হয় কার্যক্রম। মেয়রসহ ২৪টি দফতরের তিন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। এরপর ভবনটিকে তিনতলায় রূপ দেওয়া হয়েছিল।

তাতেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জায়গা দেওয়া এবং নগরবাসীকে সেবা দিতে সমস্যায় পড়তে হয়। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সাবেক মেয়র মরহুম শওকত হোসেন হিরন নগরীর তিন স্থানে পৃথক তিনটি অফিস স্থাপন করেন। কিন্তু নতুন অফিসে যেতে নগরবাসীর অনীহা থাকায় পরবর্তীতে ওসব অফিস সরিয়ে নেওয়া হয়।

এদিকে দিন দিন পৌর ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। পলেস্তারা খসে পড়তে থাকে। এজন্য ২০১১ সালে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ভবন কর্তৃপক্ষ। তৎকালীন মেয়র শওকত হোসেন হিরন জরাজীর্ণ ভবন থেকে উত্তরণে পৌর ভবনকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেন। ওই সময় ভবনের ভেতর-বাইরে চাকচিক্য আনা হয়।

কিন্তু সেই চাকচিক্য ধরে রাখা যায়নি। বৃষ্টির সময় ভবনের দেয়াল পানি চুষে নেওয়ায় পলেস্তারা খসে পড়ে। ফাটল আরও বড় আকার ধারণ করে। পিলারের রড বের হয়ে মরিচা ধরে। এমনকি ছাদের রড বের হয়ে মরিচা পড়ে। তার পরের মেয়রের সময়ে নিচতলা ও দোতলার চার কক্ষ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে। এ কারণে আমানতগঞ্জে সিটি করপোরেশনের দুটি শাখা এবং এনেক্স ভবনে প্ল্যান শাখা স্থানান্তর করা হয়। এ অবস্থায় নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে মেয়রের একান্ত সচিব রুবেল হাওলাদার বলেন, ‘বর্তমান মেয়র দায়িত্ব নেওয়ার আগেই জরাজীর্ণ ভবন সংস্কার করা হয়। ভবনের নিচ থেকে ছাদ পর্যন্ত জরাজীর্ণ ছিল। ছাদে বড় বড় গাছ ছিল। মেয়রের কক্ষের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এখন প্রতিটি কক্ষ সংস্কার করা হয়েছে। বর্তমান মেয়রের সময়েই বহুতল নগর ভবন তৈরি হবে। ভবনটি এমনভাবে নির্মিত হবে; যার সৌন্দর্য দেখতে ভিড় করবেন নগরবাসী।’

আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানালেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার। তিনি বলেন, ‘পুরো ভবনটি অপসারণ করে পাশে ও পেছনের সম্পূর্ণ জমি নিয়ে ১৫তলা ভবন নির্মিত হবে।

৪০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত হবে এটি। এতে চারটি লিফট এবং গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য দুটি স্থান করা হবে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৫ কোটি ৬৯ লাখ ১৪ হাজার টাকা। যার নকশা এবং উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। আশা করছি, বর্তমান মেয়রের সময় শেষ হওয়ার আগেই ভবনটি নির্মাণ হয়ে যাবে। কাজ শুরু হলে বিকল্প ভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে করপোরেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এজন্য আরেকটি ভবন খুঁজছি আমরা।’

এরশাদ সরকারের আমলে ১৯৮৫ সালে বরিশালে পৌরসভা ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল। তিনি বলেন, ‘সাবেক এলজিইডিমন্ত্রী নাজিউর রহমান মঞ্জু ওই সময়কার পৌরসভার চেয়ারম্যান গোলাম মাওলাকে জমি দেখতে বলেছিলেন। গোলাম মাওলা পৌরসভার জিরো পয়েন্টে খাস জমি খুঁজে বের করেন। সেখানে পৌরসভা ভবন নির্মাণ করা হয়। সেই ভবনে এখনও চলছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম। নতুন ভবন আজও হয়নি।’

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here