TT Ads

 

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা রায়হান কাওছারকে বিদায়ী বেলায় ‌‘জুতা মারো তালে তালে’ স্লোগান দিয়েছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর তারা নানা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা।

 

এ সময় তারা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলেন- ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে ফ্যাসিস্ট পতনের পর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভেবেছিলেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দালালমুক্ত হবে। বিভাগীয় কমিশনার পদাধিকার বলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক পদে অসীন হয়ে বরিশালবাসীর জন্য স্মরণীয় কিছু রেখে যাবেন কিন্তু তার ১ বছর কর্মক্ষেত্রে নগরবাসীর সাথে রুর আচরণ এবং বিভিন্ন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের সাথেও বিভিন্ন সময় অসৌজন্যমূলক আচরন করেছে। যা সকলেই অবগত আছেন। ২০০২ সালে ৫৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ সিটি কর্পোরেশন হিসাবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন আত্মপ্রকাশ বা সৃষ্টি হয়। ২০০৩ সালে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার তাদের অর্গানোগ্রামের পদ সৃষ্টির সাপেক্ষে বিভিন্ন পদে ১২১ জনকে নিয়োগ প্রদান করেন।

১/১১ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছ দেখিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাদের ভিন্ন ভিন্ন স্মারকে ২০০৭ সালের ১৮ অক্টোবর চাকুরীচ্যুত করা হয়। একই বছর ভিন্ন ভিন্ন রিটে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিবিশনে পিটিশন দাখিল করে। ২০১০ সালে হাইকোর্ট থেকে বহালের রায় পান তারা। ২০১০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের চাকরি বিধিমালার গেজেট প্রকাশ পায়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগপত্রে উল্লেখ রয়েছে সাংগঠনিক কাঠামোতে পদ সৃষ্টি সাপেক্ষে তাদের স্থায়ীকরণ করা হবে। তাদের সকলের পদ সাংগঠনিক কাঠামোতে সৃষ্টি হয়েছে এবং উল্লেখিত চাকরী বিধি মালা ২০১০ এর দশম অধ্যায়ের ৫৭ অনুচ্ছেদ এর ধারা ১ এর ক্ষমতা বলে তাদের শুন্য পদে স্থায়ীকরেণের কোন আইনগত বাধা নেই।

 

প্রশাসক সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে বারবার তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শূন্য পদে স্থায়ীকরণের আশ্বাস দিলেও শূন্য পদে স্থায়ী করেনি বরং বিভিন্ন ভাবে তালবাহানা করতে থাকে। আইন, মানবিক বিভিন্নভাবে তাকে বুঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি একাধিক বার তার রুম থেকে তাদের বের করে দেন। তাদের প্রশ্ন আইনগত বাধা না থাকলেও কেন তাদের স্থায়ীকরণ করা হচ্ছে না। বরিশালের একাধিক বিজ্ঞ আইনজীবী তাদের শূন্য পদে স্থায়ীকরণের আইনগত বাধা নেই মর্মে মতামত প্রধান করেছেন।

বিভাগীয় কমিশনার তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৫৯ জন শ্রমিককে চাকরিচুত্য করেছেন। যারা এখন মানবতার জীবনযাপন করছেন অথচ প্রশাসক শ্রমিক পদে বিভিন্ন সময় নতুনভাবে শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি বিপুল অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ, পদোন্নতি দিয়েছেন। যাদের মধ্যে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারি ফ্যাসিষ্টের দোসর হিসাবে পরিচিত। যা সাংবাদিকরা অনুসন্ধান করলেই সত্যতা পেয়ে যাবেন। ঠিকাদারী, জমি ক্রয় বিভিন্ন কাজ থেকে টাকা না নিয়ে প্রশাসক কোন ফাইল এ স্বাক্ষর করে না।

সর্বশেষ চলতি বছরের ১৭ নভেম্বর কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রশাসকের সাথে তাদের স্থায়ীকরণের বিষয়ে বলতে গেলে তিনি অসভ্য ভাষা ব্যবহার করে এবং গুলি করার হুমকি প্রদান করে।

 

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অতিরিক্ত সচিব মো. রায়হান কাওছারকে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়। ৪ নভেম্বর বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন তিনি। এরপর বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) প্রশাসকের দায়িত্বও পেয়েছিলেন। তবে তার এক বছর ৯ দিনের কার্যক্রমে বিবিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও নগরবাসী অতিষ্ঠ এমনটাই দাবি করেছেন নগর ভবনের সামনে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩ টার সংবাদ সম্মেলন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সবশেষ ১৪ নভেম্বর বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছারকে বদলি করা হয়।

TT Ads