মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মাদরাসা সুপার মাওলানা আব্দুল কাদের।
মঙ্গলবার (০৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আব্দুল কাদেরের জবানবন্দি রেকর্ড করেন কুষ্টিয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (প্রথম) আদালতের বিচারক দেলোয়ার হোসেন। জবানবন্দিতে ছাত্রীকে দফায় দফায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন মাদরাসা সুপার। আদালত ও পুলিশ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিযুক্ত মাওলানা আব্দুল কাদের কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের স্বরূপদহ চকপাড়া এলাকার সিরাজুল উলুম মরিয়ম নেসা মাদরাসার সুপার।
পুলিশ জানায়, নির্যাতিতা ওই মাদরাসার আবাসিক ছাত্রী। সপ্তাহের ছয়দিন ওই মাদরাসায় থাকে ছাত্রী। প্রতি শুক্রবার সকালে তার বাবা তাকে বাড়ি নিয়ে যান, শনিবার সকালে পৌঁছে দেন মাদরাসায়।
শনিবার সকালে মেয়েটির বাবা তাকে মাদরাসায় পৌঁছে দেন। পরদিন ভোরে ফজরের নামাজের সময় মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুল কাদের ছাত্রীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
এরপর রাত ৮টার দিকে ছাত্রীকে নিজ কক্ষে ডেকে দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণ করেন তিনি। ঘটনার পর মাদরাসার সুপার আব্দুল কাদের বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ছাত্রীকে শাসিয়ে দেন।
সোমবার সকালে এক সহপাঠীকে বিষয়টি জানায় ছাত্রী। ওই সহপাঠী ঘটনাটি নিজের বাবাকে জানালে তা এলাকায় জানাজানি হয়। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এবং শিক্ষার্থীরা মাদরাসা ঘেরাও করে আব্দুল কাদেরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন। বিষয়টি জানার পর ছাত্রীর বাবা এ ঘটনায় আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় মামলা করেন।
সোমবার রাতে আব্দুল কাদেরকে পোড়াদহ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে হাজির করা হয়। এরপর ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন আব্দুল কাদের।
আদালত সূত্র জানায়, আব্দুল কাদের জবানবন্দিতে ছাত্রীকে দফায় দফায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
মিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, অভিযুক্ত মাদরাসার সুপার আব্দুল কাদের ওই ছাত্রীকে দফায় দফায় ধর্ষণ করেছেন বলে আদালতে স্বীকার করেছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ওসি আবুল কালাম বলেন, মাদরাসাছাত্রীকে উদ্ধার করে মেডিকেল টেস্টের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।