পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কারখানা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে কারখানার তীর, পশ্চিম কাছিপাড়া ও বাহেরচর লঞ্চঘাট এলাকার আবাদি জমি, ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মঙ্গলবার সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সাত দিনের অব্যাহত ভাঙনে বাহেরচর লঞ্চঘাট, পশ্চিম কাছিপাড়া, কারখানা লঞ্চঘাট এলাকার প্রায় ১০০ একর আবাদি জমি, আকনবাড়ি, খানবাড়িসহ অর্ধশত ভিটেবাড়ি, ঈদগাহ মাঠ, বৈদ্যুতিক খুঁটি, বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় ২০ বছর ধরে ভাঙছে ওই নদীর তীরবর্তী কারখানা, পশ্চিম কাছিপাড়া ও বাহেরচর লঞ্চঘাট এলাকা।
কারখানা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম খলিফা বলেন, কারখানা নদীর অব্যাহত ভাঙনে এই গ্রামের দুই-তৃতীয়াংশ ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পাঁচ শতাধিক পরিবার সব হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে। অনেক অসহায় পরিবার এলাকা ছেড়েছে। দুই শতাধিক পরিবার কারখানার চরে ঘর তুলে বসবাস শুরু করছে। তিনি আরও বলেন, অমরখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পরবর্তী সময়ে আবার নতুন ভবন নির্মাণ করে পাঠদান চলছে। বর্তমানে ভাঙনের কবলে রয়েছে কারখানা দারুল ইসলাম সিনিয়র মাদ্রাসা, কারখানা রাহিমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারখানা সুফিয়া খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক।
কাছিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘আগুনে পুড়লে জমি থাকে। কিন্তু নদীর ভাঙনে কিছুই থাকে না। ভাঙনের কবলে পড়ে কারখানা, পশ্চিম কাছিপাড়া ও বাহেরচর লঞ্চঘাট এলাকার কত পরিবার যে নিঃস্ব হয়ে গেছে, তার হিসাব নেই।’ তিনি ভাঙন রোধে টেকসই ভাঙন রক্ষা প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পটুয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, ‘আমাদের নদীপ্রধান দেশ। প্রাকৃতিকভাবেই এক পাড় ভাঙবে, আরেক পাড় গড়বে (চর জাগবে)। এটা একটা স্বাভাবিক নিয়ম। সরকার ভাঙন রোধে ব্যাপক কাজ করছে। বাউফলেও কাজ হচ্ছে। তবে খুব শিগগির ওই এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’