ভোলায় স্ত্রী ও শিশু মেয়েকে গলাকেটে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে বিল্লাল হোসেন নামে এক ট্রাক চালককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এবিএম মাহমুদুল হক এ রায় দেন।

এসময় অভিযুক্ত বিল্লাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের দোসরা জুন ট্রাক চালক বিল্লাল হোসেন তার স্ত্রী শাহনাজ ও এক বছরের মেয়ে মোহনাকে গলাকেটে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ড ধামা চাপা দিতে তাদের কম্বলে জড়িয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় সে।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দৌলতখান থানায় একটি মামলার পর অভিযুক্ত বিল্লালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় বনবিড়ালে ৪টি ছানা উদ্ধার করেছে বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পুরে উপজেলার নৈকাঠি বাসস্টান্ড এলাকায় বস্তায় করে নিয়ে যাওয়ার সময় এক গ্রামবাসীর কাছ থেকে এ বাচ্চাগুলো উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় আনোয়ার হোসেন মিলন বলেন, চিতা বাঘের বাচ্চার মত দেখতে হওয়ায় বনবিড়ালের এ ছানা বাচ্চাগুলো বিক্রির জন্য বস্তায় ভরে বাসযোগে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল মামুন নামের একব্যক্তি। বিষয়টি আমি উপজেলা বন বিভাগকে জানাই। পরে তারা এসে ছানাগুলো উদ্ধার করে জঙ্গলে অবমুক্ত করেছেন।

রাজাপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করে ছানাগুলোকে শের-ই বাংলার জন্মভুমি সাতুরিয়া মিয়া বাড়ির গহীন জঙ্গলে অবমুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সাতুরিয়া মিয়া বাড়ির গহীন জঙ্গল থেকে ছানাগুলো ধরা হয়েছিলো। সেখানেই আবার অবমুক্ত করা হয়েছে। যাতে মা বন বিড়ালটিকে খুব সহজেই বাচ্চাগুলো খুঁজে পায়। আর যে  ব্যক্তি ছানাগুলোকে ধরেছিলেন, ভবিষ্যতে এমন কাজ করলে আইনগত শাস্তি পেতে হবে মর্মে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

পিরোজপুর শহরের খানাকুনিয়ারী এলাকায় এনায়েত মোল্লা নামে এক ব্যক্তি হত্যা মামলার আসামিদের বিচার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের টাউন ক্লাব সড়কে এনায়েত মোল্লার পরিবাব পরিজন ও এলাকাবাসী ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা এনায়েত মোল্লার হত্যাকারী খলিল মোল্লা ও মোতালেব বাহিনীর প্রধান মোতালেবসহ মামলার আসামিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারসহ বিচার ও ফাঁসির দাবি জানান।

মানববন্ধনে তার সন্তানরা বলেন, হত্যা মামলার আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে এসে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে হত্যাকারীদের বিচার ও ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন নিহত এনায়েত মোল্লার সন্তানরা।

এ সময় বক্তব্য রাখেন পিরোজপুর জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের উপদেষ্টা শিব চন্দ্র নারায়ন, নিহত এনায়েত মোল্লার ভাই বেলায়েত মোল্লা, ছেলে আল-আমিন মোল্লা, আবু বক্কর, মেয়ে খাদিজা আক্তার ও হেপী আক্তার।

উল্লেখ্য, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ২৮ জুন এনায়েত মোল্লাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক মোতালেব শেখের নেতৃত্বাধীন ১৪-১৫ জনের একটি দল। গুরুতর জখম এনায়েতকে উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে ৩০ জুন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এনায়েত। এ ঘটনায় এনায়েতের ছেলে আল আমীন বাদী হয়ে মোতালেব এবং তার দুই ছেলেসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পিরোজপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায়ের তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর এ রায় ঘোষণা করা হবে। বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ রায়ের দিন ঘোষণা করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এক আসামির পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। এরপর সব আসামির পক্ষে-বিপক্ষে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত এ রায়ের দিন ধার্য করেন।

সকালে মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম জানান, উচ্চ আদালতের আদেশে জামিনে থাকা নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিনের মেয়াদও শেষ। তার জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আবার আবেদন করা হবে।

এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। এ মামলায় ৭৬ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গত বছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে তার স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। এরপর রিফাতকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর ওই দিন বিকেলে তিনি মারা যান। পরদিন ২৭ জুন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে প্রধান সাক্ষী করা হয় মিন্নিকে।

পরে গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ২৪ জনের নামে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে পুলিশ। এরমধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন। মো. মুসা নামের এক আসামি এখনো পলাতক রয়েছেন।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আছাদুজ্জামান।

 

রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর ও কামরুল ইসলাম সাইমুন।

আগামী ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন।

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তার দফতরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত আমাদের প্রতিবেশী এবং ভালো বন্ধু। আলোচনা করার মতো অনেক বিষয়ই আমাদের রয়েছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল বৈঠকে দুই দেশের মধ্য কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সইয়েরও ইঙ্গিত দেন। এ নিয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকের কথা রয়েছে। তবে ওই বৈঠকে কোনো চুক্তি সই হবে না।

এদিকে রোববার সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে দেশে আটকেপড়া সৌদি প্রবাসী সব শ্রমিককে ফেরানো সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ার নিভৃত পল্লীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা।

ডিজিটাল ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধির বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রবক্তা স্বপ্নদর্শী এই নেত্রী ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণের পর থেকে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেন এবং ১৯৯৬ সালে প্রথম ও ২০০৮ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে দলকে দেশের নেতৃত্বের আসনে বসাতে সক্ষম হন।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। স্থায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, খাদ্যে স্বনির্ভরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো, যোগাযোগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বাণিজ্য, আইসিটি এবং এসএমই খাতে এসেছে ব্যাপক সাফল্য। এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি সম্পাদন, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতিসহ জাতীয় জীবনের বহু ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি।

করোনাভাইরাস মহামারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপ জাতিসংঘ, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বসসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে তিনি নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং করোনা মহামারির বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। একই সঙ্গে দরিদ্র মানুষকে ত্রাণ সহযোগিতার পাশাপাশি জীবিকা ও অর্থনীতি বাঁচাতে নিয়েছেন কার্যকরী পদক্ষেপ। দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখতে কৃষি ও শিল্পসহ অর্থনৈতিক খাতগুলোতে সময়োপযোগী প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়। এ কারণে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে বলে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।

দাদা শেখ লুৎফর রহমান ও দাদি সাহেরা খাতুনের অতি আদরের নাতনি শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে মধুমতি নদীর তীরবর্তী গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায়। শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা ও শেখ রাসেলসহ তারা পাঁচ ভাই-বোন। বর্তমানে শেখ হাসিনা ও রেহানা ছাড়া কেউই জীবিত নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বঙ্গবন্ধু ও শেখ ফজিলাতুন্নেছাসহ সবাই ঘাতকদের বুলেটে নিহত হন।

শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে চলে আসেন। তখন পুরনো ঢাকার রজনী বোস লেনে ভাড়া বাসায় ওঠেন তারা। বঙ্গবন্ধুু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য হলে সপরিবারে ৩, নম্বর মিন্টু রোডের বাসায় তারা বসবাস শুরু করেন। শেখ হাসিনাকে ঢাকা শহরে টিকাটুলির নারী শিক্ষা মন্দিরে ভর্তি করা হয়। এখন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শেরেবাংলা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে খ্যাত। শুরু হয় তার শহর বাসের পালা।

১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন শেখ হাসিনা। ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

শেখ হাসিনা ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজে পড়ার সময় ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন এবং ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ৬ দফা দাবিতে পূর্ববাংলায় এক অভূতপূর্ব জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি হয়। শাসকগোষ্ঠী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। শুরু হয় দমন-নির্যাতন। আটক থাকা অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। তার জীবন ও পরিবারের ওপর নেমে আসে গভীর বিপদাশংকা ও দুঃসহ দুঃখ-যন্ত্রণা। এই ঝড়ো দিনগুলোতেই বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে ১৯৬৮ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনার বিয়ে হয়।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যাওয়ার পর গোটা পরিবারকে ঢাকায় ভিন্ন এক বাড়িতে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। অবরুদ্ধ বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা গৃহবন্দী অবস্থায় তার প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের মা হন। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্ম হয় সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুলের। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার আগে ছোট বোন শেখ রেহানাসহ শেখ হাসিনা ইউরোপ যান। সেখানে অবস্থানকালে তিনি সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর নিহত হওয়ার খবর পান। তাক্ষণিকভাবে দেশে ফেরার কোনো পরিবেশ না থাকায় তিনি ইউরোপ ছেড়ে স্বামী-সন্তানসহ ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।

শেখ হাসিনার পরবর্তী ইতিহাস একবিংশ শতকের অভিযাত্রায় তিনি কীভাবে বাঙালি জাতির কাণ্ডারি হয়েছেন তার ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন সেই স্বপ্ন রূপায়নের দায়িত্ব নিয়ে বাঙালি জাতির আলোর দিশারী হওয়ার ইতিহাস। ১৯৮১ সালের ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তাকে প্রথমবারের মতো দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আর ওই বছরই ১৭ মে দীর্ঘ ৬ বছর প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি তিনটি আসন থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনের পরে তিনি পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠন করে এবং সে বছরের ২৩ জুন দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। তার সরকারের আমলেই ভারতের সাথে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি। সম্পাদিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি। বাংলাদেশ অর্জন করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা। জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৬.৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। মুদ্রাস্ফীতি নেমে আসে ১.৫৯ শতাংশে। দারিদ্র্য হ্রাস পায়। খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ক্রীড়াসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনার প্রথমবারের (১৯৯৬-২০০১) শাসনকাল চিহ্নিত হয় ’৭৫ পরবর্তী সময়ের স্বর্ণযুগ হিসেবে।

২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়। দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ওই নির্বাচনে ষড়যন্ত্র ও কারচুপির মাধ্যমে বিএনপি-জামাআত জোট ক্ষমতা গ্রহণ করে। এরপর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়। তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও ওই হামলায় ২৪ জন নিহত এবং পাঁচশ নেতাকর্মী আহত হন।

এরপর ২০০৭ সালের ১/১১-এর পর শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য হাজির করা হয় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’। শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরে আসার সময় বেআইনিভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু তিনি ২০০৭ সালের ৭ মে দেশে ফিরে আসেন। এর দুই মাস পর ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই নিজ বাসভবন ‘সুধাসদন’ থেকে শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়। জাতীয় সংসদ এলাকায় একটি অস্থায়ী কারাগারে তাকে বন্দি করে রাখা হয়। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় একের পর এক ষড়ন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা। কারাগারে তার জীবননাশের ষড়যন্ত্র চলে। তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। জীবন মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য করে চলতে থাকে গণসংগ্রাম ও আইনি লড়াই। আওয়াজ ওঠে শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন নয়। বদলে যায় দৃশ্যপট। ২০০৮ সালের ১১ জুন মুক্তি লাভ করেন তিনি।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে বিশাল বিজয় অর্জন করে। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তৃতীয়বার এবং ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রতি বছরের এই সময়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতেন। নেতাকর্মীরা সেই সময় তার জন্মদিন পালন করতো নেতাকর্মীরা। কিন্তু এইবার করোনাভাইরাসের কারণে দেশেই অবস্থান করছেন তিনি। এরই মধ্যে ঘটা করে জন্মদিন পালন না করতে নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় সভাপতির জন্মদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিকেল সাড়ে ৩টায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সীমিত সংখ্যক নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া ২৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বাদ জোহর এবং দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ৯টায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার (মেরুল বাড্ডা), ১০ টায় খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) মিরপুর ব্যাপ্টিস চার্চ (২৯ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০), ৬টায় তেজগাঁও জকমালা রাণীর গীর্জা এবং বেলা ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। এসব কর্মসূচিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। একই দিনে ঢাকাসহ সারাদেশে সকল সহযোগী সংগঠন আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, বিশেষ প্রার্থনা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ সকল কর্মসূচি যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে পালন করবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে দেশের সকল মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থণা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ সহযোগী সংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সংস্থাসমূহের সকল স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ সমস্ত শাখার নেতৃবৃন্দকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করে দিবসটি পালন করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

তথ্য দিতে বাধ্য সবাই আপনি যদি চান সরকারি আর বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান কথা গুলো আজ সত্যি বর্তমান সরকার তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আজ ২৮ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকাল ৩ টায় জেলা প্রশাসন বরিশাল এর আয়োজনে, তথ্য কমিশন ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরিশাল এর সহযোগিতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২০ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) বরিশাল মোঃ আব্দুর রাজ্জাক।

অনুষ্ঠানের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও উপপরিচালক স্থানীয় সরকার বরিশাল মোঃ শহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিভিল সার্জন বরিশাল ডাঃ মনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরিশাল জেলা শাখা এ্যাড. তালুকদার মোঃ ইউনুস, অধ্যক্ষ সরকারি ব্রজমোহন কলেজ বরিশাল প্রফেসর গোলাম কিবরিয়া, সভাপতি সচেতন নাগরিক কমিটি সনাক বরিশাল প্রফেসর শাহ্ সাজেদা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বরিশাল, প্রশান্ত কুমার দাস, বীর প্রতীক কে এস এম মহিউদ্দিন মানিক, নির্বাহী পরিচালক সেইন্ট বাংলাদেশ কাজী জাহাঙ্গীর কবির, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, এস এম ইকবাল, বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাব সভাপতি কাজী আবুল কালাম আজাদসহ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, সুধীজন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শুরুতে প্রজেক্টরের মাধ্যমে তথ্য অধিকার আইনের উপর ভিডিও ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করা হয়। এরপর অতিথিরা আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজ ৭৪তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে আজ ২৮ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ১১ টার দিকে উপজেলা প্রশাসন বরিশাল সদর বরিশাল এর আয়োজনে জেলা প্রশাসন বরিশাল এর সহযোগিতায় বরিশাল সদর উপজেলা সম্মেলন কক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বরিশালে অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় জাহিদ ফারুক শামীম এমপি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার বরিশাল সদর মোঃ মুনিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বরিশাল তৌহিদুজ্জামান পাভেল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বরিশাল সদর উপজেলা এ্যাড. মোঃ মাহবুবুর রহমান মধু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ মাহমুদুল হক খান মামুন, সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জীব সন্যামত, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডঃ যতিন চন্দ্র রায়সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 

শুরুতে অতিথিরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার ব্যক্তি জীবন ও রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে সেখানে ৩০০ জন অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন প্রধান অতিথি। এদিকে জেলা প্রশাসন বরিশাল এর আয়োজনে কালেক্টরেট জামে মসজিদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় জাহিদ ফারুক শামীম এমপিসহ জেলা প্রশাসন এর কর্মকর্তা বৃন্দ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পরে সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারসহ দেশ ও দেশের মঙ্গল কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়।

সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধু গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানসহ দু’জনকে পাঁচদিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। গ্রেফতারকৃত বাকি চার আসামিকে সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতে তোলা হবে। এদিকে সাইফুর রহমানসহ দুই আসামিকে আদালতে নেয়ার সময় স্লোগান দিয়ে তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেন সাধারণ মানুষ।

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে আদালতে হাজির করা হয় এম সি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও চতুর্থ আসামি অর্জুন লস্করকে। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে ধিক্কার দিয়ে স্লোগানে ফেটে পড়েন উৎসুক জনতা।

মাত্র ১০ মিনিট শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিট্রেট সাইফুর রহমান এ দুজনকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী জানান, ধর্ষণ মামলায় সাইফুর ও অর্জুন লস্করের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এর আগে, রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা নোয়ারাই খেয়াঘাট থেকে মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা সীমান্ত এলাকা থেকে জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্করকে গ্রেফতার করে সিলেট জেলা পুলিশ। রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে গণধর্ষণ মামলার ৩নং আসামি ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান রনি (২৮) ও ৫নং আসামি রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার সকালে ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে রাজন ও আইনুল নামে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে আটটা থেকে সাড়ে আটটার দিকে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মোট নয়জনের বিরুদ্ধে ওই তরুণীর স্বামী শাহপরান থানায় মামলা করেন। এই মামলায় এজহারভূক্ত চারজনসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হলো। যে ছয়জনের নাম উল্লেখ করেছেন, তারা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত।

এই ছয়জন হলেন- সাইফুর রহমান (২৮), তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক আহমদ (২৮), শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম (২৫)।

ছিনতাইকারী রিক্সা চালককে খুঁজে বের করে পুলিশের হাতে ধরিয়ে সাহসীকতার প্রমান দেয়া গৃহবধূ লাইজু বেগম (৪২) কে স্বীকৃতি সরুপ সম্মাননা প্রদান করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি)।

গতকাল রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) নগরীর বিএম কলেজ অডিটরিয়ামে মাসিক কল্যাণ সভায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে এ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন বিএমপি কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান-পিপিএম (বার)।

সম্মাননা পাওয়া গৃহবধূ লাইজু বেগম বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডস্থ উত্তর বাহেরচর গ্রামের মো. আমির হোসেনের স্ত্রী। ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করতে পুলিশকে সহযোগিতায় করে সম্মানিত হয়ে আনন্দিত ওই গৃহবধূ।

জানাগেছে, ‘গত ২৩ অগষ্ট ভোরে লঞ্চ যোগে ঢাকা থেকে বরিশালে আসেন গৃহবধূ লাইজু বেগম। তিনি রহমতপুরে মেয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য ব্যাটারী চালিত রিকশায় ওঠেন। প্রায় ২০ মিনিট চলার পরে চালক আব্দুস ছালাম কাশিপুর মহামায়ার পোলের পশ্চিমে লাদের সড়কে একটি কালভার্টের ওপর রিকশাটি থামিয়ে দেন।

গৃহবধূ রিকশা থামানোর কারণ জানতে চাইলে চালক তাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার গলা চেপে ধরে এবং সাথে থাকা মালামাল ছিনিয়ে নেয়। এসময় লাইজু বেগম ভয়ে চিৎকার করলে রিকশা চালক তাকে ধাক্কা দিয়ে ময়লা আবর্জনার ড্রেনের মধ্যে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে ঘটনার দিন দুপুরে মেয়েকে সাথে নিয়ে ওই রিকশা চালককে খুঁজতে বরিশাল নগরীতে আসেন। এমনকি কাকতালিয়ভাবেই নগরীর বিবির পুকুর পাড়ে ছিনতাইকারী রিকশা চালককে খুঁজে পান তিনি। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশকে অবগত করলে টহলরত এসআই বশিরসহ তার টিম রিকশা চালককে আটক করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।ৎ

অপরদিকে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ আটক রিকশা চালক আব্দুস সালামকে জিজ্ঞাসাবাদে ছিনরতাই কথা স্বীকার করে। পরে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গৃহবধূ লাইজু বেগমের ছিনতাই হওয়া স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করে। পাশাপাশি রিকশা চালকের বিরুদ্ধে মামলা এবং তার রিকশাটি জব্দ করে পুলিশ।

এদিকে বিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনে করছেন, রিকশা যাত্রী লাইজু বেগম সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারে পুলিশকে সহযোগিতা করেছে। তাই তাঁর এই সাহসিকতার স্বীকৃতি সরুপ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।