বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের জঙ্গলপট্টি গ্রামে একই পরিবারের চার সদস্য স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তারা হলেন- সমির দত্ত, যিনি ইসলাম ধর্মগ্রহণের পর নিজের নাম রেখেছেন ওমর আলী, তার স্ত্রী অঞ্জলি রানী দত্ত, নতুন নাম আয়েশা বেগম, তাদের মেয়ে স্বর্ণা রানী দত্ত, নতুন নাম মরিয়ম আক্তার এবং ছেলে শুভ দত্ত এবং নতুন নাম আব্দুল্লাহ।

তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং স্থানীয় মুসল্লি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে শাহাদাত পাঠের মাধ্যমে নতুন ধর্মীয় জীবনে প্রবেশ করেন।

ধর্মান্তরিত হওয়ার পর ওমর আলী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে ইসলামের আদর্শ ও মানবতার শিক্ষা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি। অবশেষে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইসলাম গ্রহণ করেছি। আলহামদুলিল্লাহ।’

স্থানীয় এলাকাবাসী ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা তাদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি তাদের জীবনের এক নতুন সূচনা।

শেষে তারা দোয়া কামনা করে বলেন, আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে নবীজির (সঃ) উম্মত হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় চট্টগ্রামে ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. সাইফুল ইসলামকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে তাকে ট্রাইব্যুনাল-১ এ হাজির করা হয়।

বরিশাল মহানগর পুলিশের সাবেক এই কমিশনারকে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। নগরীর চান্দগাঁও থানার একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে এতদিন জেলহাজতে ছিলেন তিনি।

তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর এলাকায় মো. ওয়াসিম আকরাম, ফয়সাল আহমেদ শান্ত ও মো. ফারুক হত্যার ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ততা এবং জুলাই আন্দোলন চলাকালে নিরীহ ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে ২৫টির অধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও নির্যাতনের প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সাইফুল ইসলাম ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ৩২তম কমিশনার। এর আগে তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ছিলেন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি ঢাকার মেট্রোরেল (এমআরটি)-এর ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।’

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষাপটে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ছাত্রসংসদ (বাকসু) নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। নির্বাচন দাবিতে কদিন ধরে তিন শিক্ষার্থীর অনশন এবং বুধবার সবশেষ সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনিক ভবন ‘শাটডাউন’ ঘোষণার হুমকি দেওয়ার পরেই কলেজ প্রশাসনের তরফ থেকে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। এবং এদিন রাতে অনুরূপ আশ্বাস দিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অভিমান ভাঙানো হয়েছে। কলেজ প্রশাসনের অভয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অনশন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করেছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, বর্তমানে বিএম কলেজের ২২টি বিভাগে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছেন। তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কথা বলার জন্য ছাত্রসংসদ থাকলেও তাতে কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী দু:শাসনের অবসান হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রসংসদ ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়।

জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পরে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজেও ছাত্রসংসদ নির্বাচনের দাবি তোলেন পড়ুয়ারা। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না মেলায় গত রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে প্রতিবাদস্বরুপ প্রথম অনশন শুরু করেন ইতিহাস বিভাগ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফেরদৌস রুমি। পরবর্তীতে তার সঙ্গে সমাজকর্ম বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম এবং ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী কে এম মাঈনুল যোগ দেন। কিন্তু কদিন অনশন করার পরে কলেজ প্রশাসন ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বুধবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনিক ভবন ‘শাটডাউন’ করে দেওয়ার হুমকি দেন।

সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন শাটডাউনের হুমকি দেওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে বিএম কলেজ প্রশাসন। এবং বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের পরে রাতেই

কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ ড. শেখ মো. তাজুল ইসলাম এবং উপাধ্যাক্ষ অধ্যাপক আবু তাহের রাশেদুল ইসলাম অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার আশ্বাস দেন। এই অভয়ের প্রেক্ষিতে অনশনরত শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেন।

বিএম কলেজ অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম জানান, ‘অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি, নির্বাচনের রোড ম্যাপ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বর প্রথম সপ্তাহে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

ছাত্রসংসদ নির্বাচনে বিএম কলেজ প্রশাসনের প্রস্তুতি আন্দোলনরত বিশেষ করে অনশনরত শিক্ষার্থীদের আশান্বিত করেছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, বাকসু নির্বাচনের দাবি দীর্ঘদিনের, কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ভোট করে কলেজে তাদের আধিপত্য হারাতে চায়নি। গত বছরের ৫ আগস্ট তাদের পতন হলে এই দাবিটি জোরালো রূপ নেয়, শিক্ষার্থীরা ছাত্রসংসদ নির্বাচন চেয়ে অনশনের মতো কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়।

অনশনরত শিক্ষার্থী রুমি জানান, শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে কলেজ প্রশাসন ছাত্রসংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব অনুধাবন করেছে। বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনিক ভবন অচল করে দেওয়ার ঘোষণার পরে কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এবং ডিসেম্বর প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এই নির্বাচন করার কথা রয়েছে, যার মধ্যদিয়ে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন।’

 

বরিশাল নগরীর বাজার রোড এলাকায় অবস্থিত কে.এম.সি হাসপাতালে সেবা নিতে গিয়ে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছে বরগুনা জেলা পাথরঘাটা উপজেলার মো: নিফুলা ইয়াসমিন নামের এক নারী।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৯ অক্টোবর সকাল আনুমানিক ৬ ঘটিকার সময়। এ বিষয় বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী নিলুফার ভাই মো: মিজানুর রহমান পরিবার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে গত ১৮ অক্টোবর মো: মিজানুর রহমান ও মোসা: নীলুফা ইয়াসমিন তাদের বৃদ্ধ মায়ের সুচিকিৎসার জন্য নগরীর কেএমসি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরদিন সকালে অর্থাৎ ১৯ অক্টোবর সকাল ৬ ঘটিকায় নিলুফা হাতমুখ ধোয়ার জন্য ওয়াশরুমে গেলে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা ছিনতাইকারীরা তার গলায় পড়ে থাকা সোয়া ভরি ওজনের একটি চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
বিষয়টি হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের কাছে জানালে তারা কোন কর্ণপাত না করে উল্টো নিলুফার অসতর্কতা বলে চুপ থাকতে বলে। এরপর নিলুফা ইয়াসমিনের ভাই মো: মিজানুর রহমান ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহয়তা কামনা করেন।
খবর পেয়ে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছে আমানগঞ্জ ফাঁড়ির দ্বায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা। এছাড়াও ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মো: মিজানুর রহমান।
এ বিষয় ভুক্তভুগী মো: মিজানুর রহমান বলেন, হাসপাতালের বাথরুমের জানালা ভাঙ্গা এটা একমাত্র তারাই জানে যারা এখানে কাজ করে। এই ঘটনার সাথে হাসপাতালের ম্যানেজার, আয়া, বুয়াসহ সিকিউরিটি গার্ড জরিত। ছিনতাই কোন ঘটনাটি সাধারণ কোন চুরি নয় এটা পূর্ব পরিকল্পিত।
তিনি আরও বলেন আমার বোনের প্রায় ২লক্ষ টাকার চেইন নিয়ে গেছে সে বিষয় কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না দিয়ে উল্টো হাসপাতালের ম্যানেজার আমাকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে আমি তাদের প্রতিষ্ঠানে পুলিশ এনেছি কেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

 

বরিশাল নগরে এক গৃহবধূকে অপহরণ করে এক লাখ টাকা ছিনতাই ও পরে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। তাঁদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহা. রকিবুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় তিনজন আসামি উপস্থিত ছিলেন, অপর এক আসামি পলাতক আছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—মো. গাজী রাসেল (৩৫), মো. রাজিব জমাদ্দার (২৫), মো. জাহিদ হাওলাদার (২৬) ও মো. রোকন খান (২৩)। তাঁদের মধ্যে আসামি রোকন খান পলাতক আছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত চারজনের বাড়ি বরিশাল নগরের সাগরদী এলাকার ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সড়কে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল মান্নান মৃধা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আদালত সূত্র জানায়, ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ (১৮) বরিশাল নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর তিনি বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে ইজিবাইকে করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর স্বামীর কাছে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ইজিবাইক চালক কৌশলে তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যান। এ সময় গৃহবধূ চিৎকার করলে ইজিবাইক চালক তাঁকে ভয়ভীতি দেখান। এ সময় মোটরসাইকেলে করে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় আসে অন্য তিন আসামি। তাঁরা মোটরসাইকেল থেকে নেমে ইজিবাইকে উঠে তাঁকে মারধর করেন। পরে চোখ, মুখ ও পা বেঁধে ত্রিশ গোডাউন এলাকার খ্রিষ্টান পাড়ার জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরদিন সকালে স্থানীয় লোকজন তাঁকে সেখানে দেখতে পান এবং উদ্ধার করেন। পরে পরিবারের সদস্যরা গৃহবধূকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা ও বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার তৎকালীন পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

আদালত সূত্র জানায়, এই মামলায় আদালত ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এরপর আজ রোববার এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

 

বরিশাল নগরী থেকে তিন মাদক ব্যবসায়ী আটক করেছেন মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর। গত মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আটক করা হয়।আটকৃত মাদক ব্যবসায়ীরা হলেন ভাটিখানা এলাকার চিহ্নিত একে এম আব্দুল্লাহ(ইফতি), মোঃ সাইফুল ইসলাম, ইব্রাহিম খান টিপু।মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,গোপন সম্পদের ভিত্তিতে জানতে পারেন ভাটিখানা এলাকায় একদল কিশোর মাদক সেবন ও বিক্রি করছেন। মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের চৌকস টিম
ভাটিখানা কাজি বাড়ি মসজিদের পাশে একেএম আবদুল্লাহ(ইফতি) বাসায় অভিযান চালিয়ে এই তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেন।পরবর্তীতে তাদের বয়স বিবেচনা করেনপ্রত্যেক কে ৫০০০(পাঁচ হাজার) টাকা করে অর্থদন্ড ও ১৫ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তারা এলাকার চিহ্নিত মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ী এবং এলাকার কিশোর গ্যাং এর সদস্য।এলাকার ছোট ছোট বিষয় নিয়ে এলাকার অনেক কিশোর একসাথে হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারিতে জড়ান।তাদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ এলাকায় থাকতে পারছেন না।
বর্তমানে এই কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিদিনই এলাকায় ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, জমিদখল, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, ধর্ষণ এবং খুন-খারাবি ইত্যাদি অপরাধের ঘটনা ঘটছে। এদের অত্যাচার নির্যাতনে সমাজ বিষিয়ে উঠেছে। মানুষ অস্বস্তিকর অশান্তির মধ্যে দিনাতিপাত করছে। সমাজের নিরীহ অংশ বিশেষ করে যাদের কোনো প্রভাব প্রতিপত্তি নেই বা প্রভাবশালী মহলের সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক ও যোগাযোগ নেই তাদের আতঙ্কই বেশি। তারা তাদের সহায়-সম্পদ ও উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটায়; কখন কারা জায়গা-জমি দখল করতে আসে বা চাঁদা দাবি করে অথবা স্কুল-কলেজে পড়–য়া মেয়েটিকে কখন কোন বখাটে বিরক্ত করে বা স্কুলে যাওয়া ছেলেটিকে তাদের গ্যাংয়ের দলে ভিড়িয়ে ফেলে। এ ছাড়া এসব গ্যাংয়ের উৎপাতে পাড়ায় পাড়ায় মারামারি কাটাকাটি তো লেগেই আছে। এই কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি বর্তমানে তরুণদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। হিরোইজম বা বাহাদুরি, কাঁচা টাকা-পয়সা, মাদকাসক্তি, সাংস্কৃতিক চর্চার নামে সস্তা ছেলে-মেয়েদের অবাধে মেলামেশার তীব্র আকর্ষণ ইত্যাদি হাতছানি দিয়ে ডাকায় দ্রুত এ সমস্ত গ্যাং এবং তাদের সদস্যসংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে টিকটক, লাইকি ইত্যাদি নানান ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পথভ্রষ্ট হয়ে তরুণরা কিশোর গ্যাংয়ে নাম লেখাচ্ছে। ফলে সমাজকে ভেতরে ভেতরে উইপোকার মতো খুবলে খেয়ে ফেলছে এই অশুভ চর্চা। উঠতি বয়সের, স্কুল-কলেজগামী কিশোরদের একটি অংশ লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে ওই দিকেই ঝুঁকছে। ফলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সুড়ঙ্গের অপরপ্রান্তে জমা হচ্ছে নিকষকালো অন্ধকার। যারা এই জাতিকে আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবে তারা যদি এই আগ্রাসী কিশোর গ্যাং সংস্কৃতির চর্চা করে বেড়ে ওঠে তবে আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ সত্যিই অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে। সুতরাং আজকের কিশোর গ্যাং কালচার দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য এক মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শহুরে জীবনের পাড়ায় পাড়ায় কিশোর-তরুণরা প্রথমে ছোট ছোট গ্রুপ করে ‘স্টার বন্ড’, ‘সাইজ কইরা দে’, ‘আমিই বস’ ইত্যাদি উদ্ভট অথচ রোমাঞ্চকর গ্রুপের নামে আড্ডারাজি শুরু করে। ধীরে ধীরে শুরু হয় ছোট ছোট দলগত অপরাধকর্ম ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার বা দলগত সেরা হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া। অন্য দল বা অন্য এলাকার কিশোরদের ওপর প্রভাবশালী হয়ে উঠার এক রোমাঞ্চকর স্বাদ তারা পেয়ে যায় কাউকে মারধর করে বা অপমান করে।

ভিকটিমরাও তখন প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ফলে ঘটে যায় খুনের ঘটনা। জড়িত হয়ে পড়ে স্থানীয় নেতারাও। তারা ‘বড় ভাই’ হিসেবে আগলে রাখেন গ্যাংগুলোকে। বিনিময়ে নিজেদের আর্থরাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে থাকেন এসব গ্যাংকে। গ্যাংয়ের সদস্যরাও ‘বড় ভাই’দের শেল্টারে থেকে নির্বিঘ্নে করে যায় নানা অপরাধ। ‘বড় ভাই’য়েরাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্পর্শ থেকে আগলে রাখে গ্যাংয়ের সদস্যদের। এভাবে একটি কিশোর গ্যাং জন্ম নিয়ে দাপটের সাথে এলাকায় বিস্তার করে ‘অপরাধ সাম্রাজ্য’।
প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছেন এলাকাবাসী এই কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে মুক্তি চাই।না হয় এলাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই এবং সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে সেরনিয়াবাত মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় রাজধানীর গুলশান-২ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বরিশালে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনসহ পেনাল কোডের বিভিন্ন ধারায় মামলা রয়েছে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি জানান, শেখ পরিবারের সদস্য হাসানাত আব্দুল্লাহর ছেলে মঈনউদ্দিন আব্দুল্লাহকে গুলশান-২ থেকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, :: সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ইংরেজি বিভাগ এলামনাই এসোসিয়েশন নতুন নেতৃত্ব পেয়েছেন তরিকুল ইসলাম এবং মো. হাফিজুর রহমান মিলন। সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি। গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এইচএম শাহাজালাল নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করেছিলেন।

সংগঠনটির সাবেক নেতৃবৃন্দ জানান, নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করা হলেও সভাপতি পদে তরিকুল ইসলাম তারেক, সাধারণ সম্পাদক পদে হাফিজুর রহমান মিলন, সাংগঠনিক পদে শহিদুল ইসলাম রায়হান, কোষাধ্যক্ষ পদে মাজহারুল ইসলাম এবং দপ্তর সম্পাদক পদে তানিম মাহামুদ খান ব্যতিত কেউ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি। এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে কেউ আগ্রহও প্রকাশ করেননি। ফলে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারী তরিক-হাফিজসহ উল্লেখিত ৫ জনকে সর্বসম্মতিক্রমে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

সংগঠনটির সাবেক আহ্বায়ক বাহাউদ্দিন গোলাপ এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সকলে নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এবং তাদের সম্মতিক্রমেই তরিকসহ সকলে আলোচিত সংগঠনটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেলেন।

জানা গেছে, বিএম কলেজসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষার প্রত্যয় নিয়ে অর্ধযুগ আগে এই সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। এতে বাহাউদ্দিন গোলাপ সভাপতি এবং রাহাত সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন।

নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনে প্রত্যাশিত পদপ্রাপ্তিতে তরিক এবং হাফিজসহ সকলে কমিটির সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এবং এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, বিএম কলেজ ইংরেজি বিভাগ এলামনাই এসোসিয়েশন একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ হচ্ছে, বিএম কলেজসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করা, নতুন নেতৃত্ব সেটিই করবে, মন্তব্য করেন সভাপতি তরিকুল ইসলাম

 

শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে রাজশাহী জেলা পরিষদের পক্ষ হতে রাজশাহী মহানগরী এবং রাজশাহী জেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপে অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
৮ অক্টোবর মঙ্গলবার ২০২৪ তারিখ সকাল ১১:০০ টায় রাজশাহী জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন মন্দির ও পূজামন্ডপের অনুকূলে এ অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা পরিষদের প্রশাসক ও রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) তরফদার মোঃ আক্তার জামীল। এসময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুঃ রেজা হাসানসহ পরিষদের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী মহানগরীর ৭৭ টি এবং জেলার ৪৬টিসহ সর্বমোট ১২৩ টি মন্দির ও পূজামন্ডপের প্রতিটিতে ৫ হাজার টাকা করে অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: স্বৈরাচ্চার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরেও বরিশালের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদীনের ত্রাসের রাজত্ব চলছেই। ছেলে-সন্তানসহ স্বজনদের নিয়ে গড়ে তোলা বাহিনী বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পুরো ১০ নং ওয়ার্ড দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, বেড়াচ্ছেন। এবং আওয়ামী লীগের শাসনামলের পুরোটা সময় ধরে কেডিসিসহ আশপাশ এলাকাসমূহের ব্যবসায়ীদের জিম্মি চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা, অভিযোগ থাকালেও আইনের আওতায় এসেছেন, এমন উদাহরণ কম আছে। বিস্মময়কর বিষয় হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের এই নেতাকে বিএপির একটি মামলায় অভিযুক্ত করা হলেও তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোহিত করা যাচ্ছে না।

 

বরং অভিযোগ আছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে এই চাঁদাবাজির মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলেছেন। তবে এবার তিনি ‘বরিশাল বিভাগীয় ট্র্যাংক লরি সংগঠনে’ চাঁদাবাজি করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়লেন। ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় সুশীল সমাজ, নির্যাতনকারী আওয়ামী লীগ নেতা জয়নালের শাস্তি চেয়ে করেছেন বিক্ষোভ, কর্মবিরতি। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সদস্যকে চাঁদার দাবিতে মারধরের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গভীর রাতে থানায় এহাজার এবং বুধবার ১৮ প্রতিবাদস্বরুপ শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে শহরের বান্দরোডে উত্তপ্ত পরিবেশ-পরিস্থিতি তৈরি হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং চাঁদাবাজির ঘটনায় জয়নালসহ জড়িত সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার অভয় দিয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের শান্ত করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের শেষের দিকে কথিত নির্বাচনের মাধ্যমে জয়নাল কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েই বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েন। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, ওই নির্বাচনে কোটি টাকা খরচ হয়েছে এবং তা এখন তুলতে হবে- এমন হুঁশিয়ারি দিয়েও ওয়ার্ডের একাধিক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি করেন, অভিযোগ আছে। রাজনৈতিক পদধারী এই মূর্তিমান সন্ত্রাস কেডিসির অভ্যন্তরে থাকা প্রিমিয়ার সিমেন্টের গোডাউনের ম্যানেজারকে ফোন করেও চাঁদা দাবি করেছিলেন। এবং হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, কেডিসি এবং চাঁদমারী সড়ক তার ওয়ার্ডে, এই সড়ক দিয়ে সিমেন্ট পরিবহন করতে হলে দিতে হবে মাসোহারা। তখন জয়নাল এবং তার ছেলে সন্তানসহ গুন্ডাবাহিনীর সাথে কোনো রুপ দ্বন্দ্ব-সংঘাতে না গিয়ে কোম্পানিটি তাদের গোডাউন শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত কালিজিরায় স্থানান্তর করে।

এর আগে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্রাহ’র অনুসারীর স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা সোহেল খানকে তার কর্মস্থল আমান গুদাম থেকে বের করে দিয়ে সেখানে জয়নালের মাদকাসক্ত ছেলে অলি নিয়ন্ত্রণ নেয়। এবং সারসহ হাঁস-মুরগি ও মাছের খাবার পরিবহনকারী ট্রাক থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলছে। জানা গেছে, কেডিসি ঘাট থেকে ট্রলারে পণ্য তুললেও কাউন্সিলর জয়নালকে দিতে হয় চাঁদা, যা উত্তোলনের দায়িত্ব আছে ওই অলিসহ কজন সন্ত্রাসী। এছাড়া কেডিসি কলোনীতে মাদক বাণিজ্যে শেল্টার দেওয়াসহ নীরিহ বহু মানুষকে অহেতুক মারধর করাসহ হয়রানি করেছে জয়নাল বাহিনী।

এই আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে আশরাফুল বেলসপার্ক মাঠে জনাকীর্ণ স্থানে গাঁজা সেবন করতে গিয়ে রক্তারক্তি পরিস্থিতি তৈরি করে। মাদক সেবনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে জয়নাল বাহিনীর হামলার শিকার হন খোদ ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট তৌহিদ মোর্শেদ টুটুলের স্ত্রী সিফাত জাহান মিম। সেই ভয়ানক ত্রাসের ঘটনায় কাউন্সিলরপুত্র আশরাফুল হকসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়েছিল (জিআর ৭১০/২৩)। এছাড়া পাশাপাশি সময়ে শহরের মুসলিম গোরস্থান এলাকায়ও একটি সন্ত্রাস তৈরি করেছিল জয়নাল বাহিনী, সেই ঘটনায়ও আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে এনা এবং অলিসহ অন্তত ২০ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হয় (জিআর নং-৫৪৬/২৩)। এছাড়া সাদিকপন্থী শ্রমিকলীগ নেতা সোহেল খানও অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে কাউন্সিলর জয়নালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে অভিযোগটি তুলে নিতে বাধ্য করেন আ’লীগ নেতা জয়নাল।

সূত্রগুলো জানায়, এতসব অপকর্ম করার পরেই জয়নালের লোলুপ দৃষ্টি যায় ‘বরিশাল বিভাগীয় ট্র্যাংক লরি সংগঠনে’। আওয়ামী লীগ সরকারের শেষান্তে এই সংগঠনে পদ বাগিয়ে নেওয়াসহ ক্যাডার বাহিনী নিয়ে দখলের পায়তারা করতে থাকেন। তখন একটি গ্রুপ বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন বরিশাল সদর আসনের এমপি জাহিদ ফারুক এবং সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহসহ পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এরপর কিছুদিন জয়নাল চুপচাপ থাকলেও ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে তিনি বোল পাল্টে নিজেকে সাবেক বিএনপি নেতা দাবি করছেন এবং অর্থবিত্তে লালে লাল হয়ে যেতে দখল সন্ত্রাসে মেতে উঠেছেন। কিন্তু বাধ সাধল শ্রমিক সংগঠনে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে, আর এতেই ধরাশয়ী হতে যাচ্ছেন কাউন্সিলর জয়নাল। তার শাস্তি দাবি করেছেন শ্রমিক সংগঠনটিসহ স্থানীয় সুশীল সমাজ।

শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগটিতে আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল, তার ভাইয়ের ছেলে রাজু, জামাতা শামীম, রিপন, আনোয়ার, সাঈদ এবং ইমরানসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

আলোচিত সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শেখ কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল গত বছরের শেষের দিকে কাউন্সিলর হয়েই ক্যাডার বাহিনী নিয়ে ‘বরিশাল বিভাগীয় ট্র্যাংক লরি সংগঠন’ দখলের পায়তারা শুরু করেন। কিন্তু তাতে তিনি ব্যর্থ হয়ে পরিশেষে সংগঠনে ঢোকার চেষ্টা করাসহ গাড়িপ্রতি চাঁদা দাবি করেছিলেন। তৎকালীন বিষয়টি বরিশাল সদর আসনের এমপি এবং মেয়রকে অভিযোগ আকারে অবহিত করা হলে জয়নাল কিছুদিন নিশ্চুপ থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে নিজেকে সাবেক বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে উৎপাত শুরু করেন। এর প্রতিবাদ করায় মঙ্গলবার সংগঠনের অর্থ সম্পাদক রানা সরদার আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল বাহিনীর ত্রাসের শিকার হয়েছেন, যে ঘটনায় সেদিন গভীর রাতেই থানায় অভিযোগ করাসহ বিষয়টি সেনাবাহিনীকে অবহিত করা হয়। এবং সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদসহ হামলাকারীদের শাস্তি দাবি জানিয়ে বুধবার সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করা শুরু করে শ্রমিকেরা। এতে বরিশাল থেকে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে দুর্ভোগের আশঙ্কা তৈরি হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী এবং কোতয়ালি পুলিশ গিয়ে পরিবেশ শান্ত করে আওয়ামী লীগ নেতা জয়নালসহ জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণের মধ্যদিয়ে।

সেনাবাহিনীর ওই পদস্থ কর্মকর্তা আল আমিন সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শ্রমিকদের জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল আছেন। এবং জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করা যাবে না, জানিয়ে সেনা কর্মকর্তা বলেন, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থাগ্রহণ করবে।

স্থানীয় সুশীলমহল বলছেন, আওয়ামী লীগ নেতা জয়নালের অপকর্মের শেষ নেই, তিনি ওয়ার্ডটিতে কাউন্সিলর হিসেবে যে কয়বার দায়িত্ব পালন করেছেন, প্রতিবারই সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছেন। তবে সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র থাকাকালীন জয়নাল তেমন একটা সুবিধা না করতে পারলেও চলতি বছরের শেষ দিকে কাউন্সিলর হয়ে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ’র সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন এবং দেদার সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি শুরু করে দেন। সবশেষ অন্তর্বর্তী সরকারের এই সময়ে শ্রমিক সংগঠনে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে নেতৃবৃন্দকে মারধরের যে দু:সাহস দেখিয়েছেন, তাতে অনেকেই রীতিমত অবাক হয়েছেন। এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থাগ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, এই সন্ত্রাসের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলার প্রস্তুতি নিয়েছে শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে কোতয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান বরিশালটাইমসকে জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে একটি অভিযোগ এসেছে, সেটি পুলিশের এসআই পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা তদন্ত করছেন। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।’