ইসরাইলের সাথে বিশ্বের কতিপয় ইসলামী রাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থাপনের প্রতিবাদে বরিশালে মানবন্ধন করেছে ফিলিস্তিনের সাধারণ ছাত্র পরিষদ।

পাশাপাশি দীর্ঘবছর ফিলিস্তিনের সাথে বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত রাখায় ধন্যবাদ জানানো হয়।

বরিশালে পড়াশুনারত অবস্থায় থাকা ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে শনিবার (০৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে এই মানববন্ধ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ডাঃ ইদ্রিস এফআই, শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী হাতিম রাবা, মো. মর্তুজা প্রমুখ।

এছাড়া মানববন্ধনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন।

এখানে বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিন আমাদের মাতৃভূমি আর ফিলিস্তিন বিশ্বের সকল মুসলমানদের। কারণ জেরুজালেমে থাকা আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের জন্য তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ। অথচ এখানে দখলদার ইসরাইল আমাদের লোকদের হত্যা করে, ভূমি দখল করে। ঠিক এমন একটা দেশের সাথে প্যালেস্টাইনের স্বার্থ লঙ্ঘন করে কিছু ইসলামী রাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থপানের বিষয়টি ধিক্কার জানাই।

আমরা দাবি করছি ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতি ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার আর বাংলাদেশ আমাদের সাথে আছে বলে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ এককথায় বিশ্বাসী, আমাদের ফিলিস্তিনের সাথে বাংলাদেশ বন্ধুতবপূর্ণ সম্পর্ক একইভাবে বজায় রেখেছে সেই ১৯৭১ সাল থেকে। যা ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে।

বরিশাল মহানগরীতে বেপরোয়াভাবে চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্রাতিরিক্ত সিএনজি-মাহিন্দ্রা। এসব যানবাহনের কারণে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার শিকার মানুষদেরকে শারীরিক ও মানসিক ক্ষত নিয়ে চলতে হচ্ছে দীর্ঘদিন। অনেকে হারাচ্ছেন জীবন।

আর এই পরিস্থিতির পিছনে বিগত দিনের সিটিবাস বন্ধ করে দেয়া, বাছবিচার ছাড়াই অতিরিক্ত রুট পারমিট (চলাচলের অনুমতি) প্রদান, দোষী চালকদের আইনের আওতায় আনতে না পারা ইত্যাদি কারু সামনে এসেছে।

তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সড়কে মাহিন্দ্রা-ইজিবাইকের বেপরোয়া হয়ে চলাচল বন্ধে সবরকম পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের আমলে নগরীতে দশটি মিনিবাসকে সিটি বাস হিসেবে পরিচালনা করা হতো। সেসময় প্রধানত সাধারণ রিকশা এবং সিটি বাসের মাধ্যমেই নগরবাসী স্বল্প দূরত্বে ভ্রমণ করতো।

পরবর্তীতে ২০১৩ সালে সিটিবাস বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর নগরীতে চলাচলের জন্য বেবি ট্যাক্সির বদলে দ্রুতগামী মাহিন্দ্রা, ইজিবাইক এবং বর্তমানে সিএনজির অনুমতি দেয়া হচ্ছে। এগুলো সবই প্রচণ্ড- দ্রুতগামী ছোট যান। বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ পুনরায় নগরীতে সিটি বাস চালু করার একটি পরিকল্পনা নিলেও এখনো তা বাস্তবতার রূপ দেখে নি।

বরিশাল নগরীসহ আশেপাশের এলাকার সিএনজি-মাহিন্দ্রায় দুর্ঘটনার শিকার মানুষেরা প্রতিদিনই ভিড় করছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতালটির পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন জানান, দ্রুতগামী অটোরিকশা দুর্ঘটনায় সামান্য কাঁটাছেড়া থেকে শুরু করে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত রোগীরাও প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে চিকিৎসারত অবস্থায় প্রাণ হারায়, অনেকে সারাজীবনের জন্য বহন করে পঙ্গুত্ব। যারা শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ হয় তারা আজীবন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে দুর্ঘটনার স্মৃতি মনে রেখে।

এই চিকিৎসক আরো জানান, বর্তমানে প্রায় প্রতিদিনই দ্রুতগামী অটোরিকশা (মাহিন্দ্রা, সিএনজি ইত্যাদি) দুর্ঘটনায় আহত মানুষেরা হাসপাতালে আসছে। মাঝখানে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময়ে কিছুদিন এই সংখ্যা কম ছিল। তবে এখন পুনরায় তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উদ্বেগজনক এই বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবার সজাগ হওয়া প্রয়োজন।

এদিকে সড়কে দ্রুতগামী অটো-রিকশাগুলোর বেপরোয়া হয়ে ওঠার মূলে দুটি কারু সামনে এনেছেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের বরিশাল আঞ্চলিক সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন শিপলু। তিনি বলেন, ‘যে সকল চালক দুর্ঘটনা ঘটায় তারা প্রভাবশালী অটোরিকশা মালিকের সহায়তা এবং আইনের তদারকির অভাবে পার পেয়ে যায়। শাস্তি না হবার কারণে বেপরোয়া ভাবে যান চালানোর অভ্যাস থেকে তারা (চালক) বের হতে পারে না।

এছাড়া বিগত দিনে শহরে চলাচল করা সিটি বাস বন্ধ করে যাচ্ছেতাই ভাবে অটোরিকশার রুটে পারমিট দেয়া হচ্ছে। যার ফলে ঘনবসতিপূর্ণ বরিশাল নগরী মাহিন্দ্রা – ইজিবাইক দুর্ঘটনার অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে সৃষ্টি হয়েছে’।

তবে গত আটমাস যাবৎ বরিশাল শহরে দ্রুতগামী অটোরিকশার দুর্ঘটনার হার কমে গেছে বলে জানান বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ জাকির হোসেন মজুমদার।

তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেবার পর থেকে নগরীতে দ্রুতগামীর অটোরিকশা বা এধরনের যানবাহনের দুর্ঘটনা বন্ধে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নির্ধারিত গতি উপেক্ষা করে চালালে, গাড়ি চালানোর যথাযথ কাগজ না থাকলে কিংবা দুর্ঘটনা ঘটালে চালকদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে’। এক্ষেত্রে যানবাহনের মালিকের প্রভাব একদমই বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বরিশালে চুরি হওয়া দু’টি গরুসহ কবির হাওলাদার (৪২) নামে আন্তঃজেলা চোর চক্রের এক সদস্যকে আটক করেছে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।

গতকাল  (২ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. খাইরুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কবির ঝালকাঠীর কাঁঠালিয়া উপজেলার আমড়াবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

খাইরুল আলম জানান, গত ৬ জুলাই দিনগত রাতে এয়ারপোর্ট থানার ডেফুলিয়া এলাকার বাসিন্দা মনির হাওলাদারের বাড়ি থেকে আটটি গরু চুরি হয়ে যায়। এ বিষয়ে গত ৯ জুলাই এয়ারপোর্ট থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করা হয়। পরে তার নির্দেশে উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রায়হানুর রহমান তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত করে কাঁঠালিয়া থানার আমড়াবুনিয়া এলাকা থেকে গত ১ অক্টোবর রাতে গরু চুরি চক্রের সদস্য কবিরকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে বাদীর চুরি হওয়া কালো দু’টি গরু উদ্ধার করা হয়। আটক কবিরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এর আগে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চোর চক্রের প্রধান সদস্য মো. শাহ আলম ও বড় রেজাউলকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কবিরকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে চোর চক্রের অন্যতম সদস্য বড় রেজাউল গরু চুরির কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, মামলার বাদীর চুরি হওয়া আটটি গরুর মধ্যে দু’টি উদ্ধার করা হয়েছে। চুরি হওয়া বাকী গরুগুলো উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- এয়ারপোর্ট থানার সহকারী কমিশনার নাসরিন জাহান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাহিদ বিন আলম, ৃপুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ মো. ফয়সাল প্রমুখ।

বগুড়ার শিবগঞ্জে পেঁয়াজের বাজারে আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। হু হু বরে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকা সত্ত্বেও এই পণ্যটির দাম কেন বাড়ছে ক্রেতার মনে প্রশ্ন থেকেই যায়। উপজেলার বাজার গুলোতে ১৫ দিন আগেও প্রতিকেজি আমদানী করা পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা এবং দেশী জাতের পেঁয়াজের দাম ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। বর্তমানে সব ধরনের পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা খেকে ১’শ টাকায়। অর্থাৎ ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। উপজেলা বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

উপজেলার মহাস্থান হাট, বুড়িগঞ্জ হাট, মোকামতলা হাট, কিচক বন্দর বাজারসহ এলাকার বিভিন্ন হাটে গিয়ে দেখা গেছে বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আছে। কিন্তু পাইকাররা চড়া দামে বিক্রি করছে পেঁয়াজ। পেঁয়াজের এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবিও বলছে, গত এক মাসে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।

মগাস্থান হাটে আসা কৃতা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, পেঁয়াজের বাজার দেখার বোধ হয় কেউ নেই। কোরবানির সময়ও ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছি। এখন সেই পেঁয়াজ এক’শ টাকা কেজি দরে কিনতে হলো। তিনি আরও বলেন, গত বছরের মতো আবারও পেঁয়াজের দাম বেড়ে আড়াই’শ-তিন’শ টাকা যাতে না হয়, সে ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ থাকা উচিত।

বুড়িগঞ্জ হাটের সবজি বিক্রেতা ইদ্রিস আলী বলেন, মোকামে এখন পেঁয়াজের দাম বেশি। সেখান থেকে ৯৫ টাকা দরে এনে ১০০ টাকা দরে খুচরা বিক্রি করছেন তিনি। ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশেও পেঁয়াজের দাম এখন বাড়তি। আমাদের কিছুই করার নাই।

বাজারে আসা গৃহিনী তহমিনা বেগম বলেন, পেঁয়াজের যে দাম তাতে আমাদের মত গরিব মানুষের পক্ষে পেঁয়াজ কেনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যে আয় করি তা দিয়ে পেঁয়াজ কিনে খাওয়া কোন মতেই সম্ভব নয়। তাছাড়া বাজারে এখন সব ধরণের জিনিসপত্রের দাম বেশি। সে তুলনায় আমাদেও মতো শ্রমজীবিদের আয় বাড়েনি। এই অবস্থায় পেঁয়াজের যে হারে দাম বাড়তেছে তাতে পেঁয়াজ বাদদিয়ে রান্না করাছাড়া কোন উপায় নেই। তিনি এক কেজি কেনার ইচ্ছা থাকলেও পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ার করনে কিনেছেন দু’শ ৫০ গ্রাম।

বাঙালির রান্নার একটি অন্যতম প্রধান উপকরণ এই পেঁয়াজের দাম যে ভাবে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এতে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছি।