বরিশাল নগরীর ডেফুলিয়া নামক স্থানে অভিযান চালিয়ে বিপুলসংখ্যক ইয়াবাসহ এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানাধীন সোনামিয়ার পুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে গতকাল মশিউর রহমান ওরফে অরিন বাবুকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিম। এসময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৫০০ পিস ইয়াবা। মঙ্গলবার বিকেলের এই অভিযান চালানো হলেও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে আজ বুধবার সাংবাদিকদের নিশ্চিত করা হয়েছে।
আটক মশিউর রহমান ওরফে (বাবু) কোতয়ালি মডেল থানাধীন মুসলিম গোরস্থান রোডস্থ ‘তাসিন ভিলা’র বাসিন্দা মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, মশিউর রহমান ইয়াবা বিক্রির উদ্দেশে সোনামিয়ার পুল এলাকায় অবস্থান করছে, এমন খবরে তাদের একটি টিম পরিদর্শক ফিরোজ আহমেদের নেতৃত্বে সেখানে হানা দেয়। এবং ঘটনাস্থল থেকে বাবুকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তার শরীরে তল্লাশি চালিয়ে ১৫০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এবং জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে ইয়াবা ক্রয়-বিক্রির সাথে জড়িত। এই অভিযানে ডিবি পুলিশের এসআই সৈয়দ খাইরুল আলমও অংশ নেন।
এই ঘটনায় ডিবি পুলিশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করেছে। এবং সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার যুবককে আদালতে প্রেরণ করলে বিচারক কারাগারে পাঠিয়ে দেন।’
 ভোলা সদরের পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে মারিয়া নামে তিন মাসের এক কন্যাশিশুকে পুকুরের পানিতে ফেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিশু মারিয়া ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাঙ্গাসিয়া গ্রামের রিকশাচালক মো. মঞ্জুর আলমের মেয়ে। আজ বুধবার (০৭ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুর বাবা মঞ্জুর আলম ও মা শাহনাজ বেগমকে আটক করা হয়েছে।
ইলিশা ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, সকালে খবর পেয়ে মঞ্জুর আলমের বাড়িতে যাই। মঞ্জুরের স্ত্রী শাহনাজ বেগম আমাকে জানিয়েছেন মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে চার ডাকাত মুখোশ পরে ঘরে ঢোকে। পরে শাহনাজ বেগমের হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলেন তারা। এ অবস্থায় শিশুসন্তান কান্না করলে ডাকাতরা ঘরের দরজা খুলে পুকুরে ফেলে দেয়। সেই সঙ্গে ঘরে থাকা ১৩০০ টাকা ও স্বর্ণের চেইন, কানের দুলসহ প্রায় এক ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায় ডাকাতরা। স্বামীর ঘুম ভাঙলে ঘটনা খুলে বলেন শাহনাজ। তবে ডাকাতদের চিনতে পারেননি বলে দাবি করেছেন শাহনাজ বেগম। বিষয়টি আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে না হওয়ায় পুলিশকে খবর দিই।
ভোলা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুটির বাবা মঞ্জুর আলম ও মা শাহনাজ বেগমকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক||বরিশাল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে করোনা প্রতিরোধে ও নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে বরিশাল জেলা প্রশাসনেরৎ পক্ষ থেকে আজ বুধবার সকালে ৩টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।
মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত হোসেন, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত ফারাবী ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রয়া ত্রিপুরা। বরিশাল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে গীর্জা মহল্লার মোবাইল বাজার দোকান সহ ২৪ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কে ২৪ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং তাদেরকে সতর্ক করে দেওয়া হয় যাতে করে ভবিষ্যতে সরকারি আইন অমান্য না করে। একটি সূত্র জানান,বরিশাল নগরীর গির্জামহল্লা মোবাইল বাজার মোবাইলের দোকান টি দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারি আইন অমান্য করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দোকানের একটি শাটার খুলে রেখে দোকানের বেচাকিনা করে আসছে।ব্যবসায়ী সমিতির লোকজন তাকে নিষেধ করলো কারো কোন কথায় কর্ণপাত না করে নিজের ইচ্ছা খুশিমতো ব্যবসা করে আচ্ছে।লোক সমাগম করে তার প্রোডাক্ট গুলো বিক্রি করছে সকাল থেকে রাত অবধি।লোকের সমাগম করে দ্রুত করোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানের মালিক।স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান,দোকানের এক শাটার খুলে রেখে দোকানের সামনে একজন কর্মচারী রেখে সে এবং তার কর্মচারীরা ভিতরে বসে মোবাইল সহ বিভিন্ন মালামাল ও বিক্রি করছে।সামনের ওই কর্মচারী, ম্যাজিস্ট্রেট দেখলে দোকানের ওই শাটার বন্ধ করে দেয় এবং ম্যাজিস্ট্রেট চলে গেলে দোকানের শাটার টি খুলে ফেলে।বরিশাল শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান গীর্জা মহল্লা।গীর্জা মহল্লার আশেপাশেই বসে প্রশাসনের একাধিক চেকপোস্ট।কোন ক্ষমতার বলে প্রশাসনের সামনে সে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দোকান খোলা রাখে।স্থানীয় বাসিন্দাদের একটাই দাবি সরকারি আইন অমান্য করলে ওই দোকান মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।সরকারি আইন আইন অমান্য করায় আজ ম্যাজিস্ট্রেট তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা খুশি হয়েছেন একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

মো:রাজিবুল হক (বরগুনা জেলা সংবাদদাতা):
সারাদেশের ন্যায় বামনায় ও করোনা পজেটিভ ব্যাপক হারে বাড়ছে। নমুনা পরীক্ষার ৫০% ই পজেটিভ। গত এক সপ্তাহে বামনায় মোট আক্রান্ত ৩৮ জন। এ দিকে ঘরে ঘরে করোনা উপসর্গ নিয়ে মানুষ মনগড়া চিকিৎসা নিচ্ছে। তারপর টেস্ট করাতে অনিহা।তবে যাদের করোনা উপসর্গ আছে তাদের অবশ্যই বামনা হাসপাতালে গিয়ে টেষ্ট করানো উচিত এবং হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা গ্রহন করা উচিত।বামনা হাসপাতালে করোনা রুগীর যথেষ্ট চিকিৎসা ব্যবস্হা রয়েছে।সরকারের নির্দেশনা একটা লোকও যেন বিনাচিকিৎসায় মারা না যায়।
বামনা হাসপাতালের আরএমও ডাঃ রিয়াজুল ইসলাম বলেন আতংকিত না হয়ে হাসপাতালে এসে টেষ্ট করান এবং সেবা নিন।প্রয়োজন হলে ভর্তি হন।আমাদের সেবা দেওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্হা রয়েছে।টেষ্ট করালে আপনী বাসায় চিকিৎসা নিলেও আলদা আইসোলেশনে থাকতে পারবেন নিজও নিরাপদে থাকতে পারেন পরিবারকে ও নিরাপদে রাখতে পারেন।
উপজেলা স্বাস্হ্য কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অসহায়দের ফ্রি টেষ্ট সহ ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্হা রয়েছে।তাই বাসায় না থেকে লক্ষন দেখা দিলেই হাসপাতালে আসুন।আমরা আপনাদের শতভাগ সেবা দিতে প্রস্তুুত আছি। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ এবং আমরা স্বাস্হ্য বিভাগ বামনাকে করোনা মুক্ত রাখতে কাজ করে যাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিবেক সরকার বলেন বামনার সকল মানুষের সহযোগিতায় আমরা লকডাউনের ৫ম দিন অতিবাহিত করলাম এবং অনেকটাই সফল হয়েছি।তবে মানুষ আর একটু সচেতন হলে বামনাকে করোনার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবো বলে আশা করছি।

 

করোনাভাইরাসের (Coronavirus) উর্ধ্বগতি না কমায় সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। আজ সোমবার (০৫ জুলাই) চলমান কঠোর বিধিনিষেধ ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

করোনা নিয়ন্ত্রণে গত ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে সারা দেশে। লকডাউনের চুতর্থ দিন রোববার চলমান কঠোর লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সুপারিশ করে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। আর আজ লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এলো সরকারের পক্ষ থেকে।

এর আগে কমিটির সুপারিশের আলোকে ২৮ জুন থেকে ৩০ জুন তিন দিন সীমিত পরিসরে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার।

এরপর ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী শুরু হয় কঠোর বিধিনিষেধ। যা শেষ হবে ৭ জুলাই। নতুন করে ৭ দিন সময় বাড়ানো হলে ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই কঠোর বিধিনিষেধ।

গত ৩০ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে লকডাউনের বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে।

লকডাউনে জরুরি সেবা দেয়া দপ্তর-সংস্থা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস, যন্ত্রচালিত যানবাহন, শপিংমল-দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। তবে শিল্প-কারখানা খোলা থাকলেও জনসমাবেশ হয় এমন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না এই সময়ে।

বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী। বিনা প্রয়োজনে বের হলেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। গত চারদিনে শুধু ঢাকায়ই সহস্রাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

বরগুনায় মায়ের কাছে চিঠি লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সামিরা (১৪) নামের এক কিশোরী। সোমবার (০৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ভাড়া বাসার বাথরুম থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই কিশোরীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগে জামাল হোসেনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা ।

নিহতের মা সুমী বেগম জানান, সামিরা তার প্রথম স্বামী রফিকের সন্তান এবং অস্টম শ্রেণির ছাত্রী। সুমী তার বর্তমান স্বামী রাশেদের অন্য সন্তানদের সঙ্গে নিয়েই পৌরসভার কলেজ রোডে আবুল বাশারের বাসায় ভাড়া থাকেন। আবুল বাশারের ছেলে জামাল হোসেন স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও কিশোরী সামিরাকে উত্ত্যক্ত করতেন। একাধিকবার সামিরাকে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করেন তিনি।

গত কয়েকদিন ধরে সামিরা ও জামালকে জড়িয়ে প্রতিবেশীরা অনৈতিক সম্পর্কের কথা বলাবলি করছিল। গতকাল রোববার রাতে বাসার মালিক আবুল বাশারকে ফোন করে তার ছেলের কর্মকাণ্ডের কথা জানান সুমী বেগম। আবুল বাশার গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরে এসে জামালকে শাসন করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। জামালের সঙ্গে সামিয়ার কোনো ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ নেই, এ কথা তার মা ছাড়া অন্য কেউ মেনে নিচ্ছিলেন না। মা ছাড়া সবাই সামিরাকে গালমন্দ করছিল। আত্মহত্যার আগে সামিরা তার মায়ের কাছে চিঠি লিখে রেখে যায়।

ওই চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘মা, আমার নামে তারা যে বদনাম উঠিয়েছে, তাতে আমি এ পৃথিবীতে থাকতে পারছি না। আমি একটা খারাপ মেয়ে। আমি নাকি খুব খারাপ। মা তুমি ভালো থেকো। আমাকে কেউ বিশ্বাস করে না। কেউ না তুমি ছাড়া। ইতি তোমার সামিরা।’

এ বিষয়ে বরগুনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম জানান, জামালকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করা হয়েছে। সামিরার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

 

কঠোর লকডাউনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় গত ৫ দিনে বরিশাল জেলায় ৫৮৮ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ৭ লাখ ৮০ হাজার ৪৫০ টাকা। বরিশাল মহানগর এবং জেলার ১০টি উপজেলায় এই অভিযান পরিচালনা করেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। বরিশাল জেলা প্রশাসনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সোমবার রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়- লকডাউনের পঞ্চম দিনে সোমবার (০৫ জুলাই) জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের নেতৃত্বে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৮৯টি অভিযান পরিচালনা হয়। এ সময় ৮৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারার পৃথক মামলায় ৭৫ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে বরিশাল মহানগরে ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে ৪৬ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অপরাধে ৩০ হাজার ৩৫০ টাকা জরিমানা আদায় করেন। পাশাপাশি জেলার ১০টি উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করেন ৯ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তারা ৪৩ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পৃথক মামলায় ৪৪ হাজার ৯৫০ টাকার জরিমানা আদায় করেন।

এর আগে রোববার (০৪ জুলাই) জেলায় ২১টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১৫০টি মামলায় ১৫০ জনকে ২ লাখ ২৫ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগে ৩ জুলাই লকডাউনের তৃতীয় দিনে বরিশালে ২১টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১৮০টি মামলায় ১৮০ জনকে ৩ লাখ ২২ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়। ২ জুলাই লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে বরিশালে ২০টি অভিযানে ১১১ মামলায় ১১৩ জনকে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। ১ জুলাই লকডাউনের প্রথম দিনে ২০টি অভিযানে ৫৬টি মামলায় ৫৬ জনকে ৩৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। বরিশাল নগর এবং জেলার সব কটি উপজেলায় লকডাউন কার্যকর করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। এ অভিযান আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে।’

 

রিমান্ডে নিয়ে হত্যা মামলার নারী আসামি মিনতি বিশ্বাস ওরফে মিতু অধিকারীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে বরিশালের উজিরপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি/তদন্ত) প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ তথ্য বরিশালটাইমসকে মুঠোফোনে নিশ্চিত করেন ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান।‍

এদিকে সোমবার (০৫ জুলাই) আদালতের নির্দেশনা অনুসারে নির্যাতিতা নারী বাদী হয়ে প্রত্যাহার হওয়া দুই কর্মকর্তাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ‍মামলা দায়ের করেছেন।

সোমবার দুপুর ১টায় প্রত্যাহারকৃত ওসি হলেন- জিয়াউল আহসান এবং পরিদর্শক (তদন্ত) মাইনুল ইসলাম। পরিদর্শক ওই নারী আসামির মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন।

বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান বরিশালটাইমসকে বলেন, দায়িত্বে অবহেলায় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। একইসাথে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও দায়ের করা হবে।

তিনি ‍আরও বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুসারে নির্যাতিতা নারীর বর্ণনা অনুযায়ী প্রত্যাহারকৃত দুই কর্মকর্তাসহ নির্যাতিতা নারী মোট ৫ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। তবে অপর ৩ জনের নাম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। এ কারণে গঠিত তদন্ত কমিটির দেয়া রিপোর্ট অনুসারে অপর ৩ জনকে শনাক্ত করে তাদেরও এই মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

এদিকে আদালতের নির্দেশে রোববার দুপুরে শের ই বাংল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম সাইফুল ইসলাম চিকিৎসাকালীন সময় আসামি মিতুর শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। ওই প্রতিবেদনে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

এর আগে গত ২৬ জুন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকা থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ভাই বরুন চক্রবর্তী ওইদিনই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামি করা হয় মিতুকে; যার সাথে তার ভাইয়ের পরকীয়া সম্পর্ক ছিলো বলে দাবি করেন বরুন।

এই মামলার আসামি হিসেবে ওইদিন সেই মিতুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। থানা পুলিশের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজিরপুর আমলী আদালত নারী আসামির ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২ জুলাই ওই নারীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

এ সময় তাকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটতে দেখে এর কারণ জানতে চান আদালত। ওই নারী আদালতের কাছে তাকে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন পুলিশের বিরুদ্ধে। আদালত একজন নারী কনস্টেবল দিয়ে তার দেহ পরীক্ষা করে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা পান।

 বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ||
পটুয়াখালীর বাউফলে সালিশ বৈঠকে এক কিশোরীকে বিয়ে করে সমালোচিত সেই ইউপি চেয়ারম্যানের বডিগার্ড কাম-গাড়ির ড্রাইভার রুবেলের হাতে পিস্তলের ছবি ভাইরাল হয়েছে। আর এই পিস্তলের উৎস নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। পিস্তলটি বৈধ নাকি অবৈধ?
জানা গেছে, রুবেল হোসেন ৪ বছর ধরে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারাম্যান শাহিন হাওলাদারের বডিগার্ড কাম-মোটরসাইকেলের ড্রাইভারের দায়িত্ব পালন করছেন। চেয়ারম্যান যেখানেই যান সেখানেই রুবেলকে সঙ্গে করে নিয়ে যান।
সম্প্রতি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার এক প্রেমিক-প্রেমিকার সালিশ করতে গিয়ে কিশোরীকে পছন্দ হওয়ায় বিয়ে করেন। ৬০ বছর বয়সে এক কিশোরীকে বিয়ে করে তিনি ব্যাপক সমালোচিত হন। এ নিয়ে যুগান্তরসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। এরপর বিয়ের একদিন পরেই চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে তালাক দেন ওই কিশোরী।
এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের বডিগার্ড কাম-বাইকচালক রুবেলের পিস্তল হাতে ছবি ভাইরাল হয়েছে। অলোচনায় চলে এসেছেন রুবেল।
রুবেলের বাবার নাম রাজ্জাক সিকদার। তার বাড়ি কনকদিয়া ইউনিয়নের কুম্ভুখালি গ্রামে। রুবেলের হাতে পিস্তলের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর পিস্তলের উৎসহ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। পিস্তলটি বৈধ নাকি অবৈধ?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কনকদিয়া ইউনিয়নের এক সাবেক ইউপি সদস্য বলেন, পিস্তলটি আসল না নকল তা জানি না। তবে তাদের কাছে পিস্তল আছে এটা জানি। আর এই পিস্তলের ভয়ের কারণে এলাকার মানুষ শাহিন চেয়ারম্যানের অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
অভিযোগ রয়েছে এই পিস্তলের ভয় দেখিয়ে কিশোরী নাছমিন আক্তার ওরফে নছিমনকে চেয়ারম্যান শাহিনের সঙ্গে বিয়েতে বাধ্য করা হয়েছে। নছিমনের প্রেমিক রমজান একই অভিযোগ করেছেন যুগান্তরের কাছে।
রোববার দুপুরে তিনি বলেন, গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে কনকদিয়া গ্রামের চুনারপুল এলাকা থেকে চেয়ারম্যানের অনুসারী সিজান নামের এক যুবক তাকে পিস্তল ঠেকিয়ে জোর করে বাইকে তুলে পটুয়াখালী নিয়ে যায় এবং চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের এক ভাগ্নের বাসায় আটকে রাখে। সেখান থেকে চার দিন পর কৌশলে সে পালিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের বডিগার্ড কাম-বাইকের ড্রাইবার রুবেল হোসেনের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসার পরে পিস্তলের ছবিটি সংগ্রহ করেছি। ছবিটি দেখে প্রথম পর্যায়ে আমার কাছে খেলনা পিস্তলের মতো মনে হচ্ছে। তবে এ ব্যাপরে বিস্তারিত অনুসন্ধান করে আনগত ব্যবস্থা নেব।
বরিশালে এক হত্যা মামলায় একজন নারীকে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
রিমান্ড শেষে বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১লা জুলাই পুলিশ হাজির করে ঐ নারীকে।
ঐ নারীর আইনজীবী মজিবর রহমান বলেন, এই সময় তিনি আদালতের সামনে খুড়িয়ে হাঁটছিলেন।
এরপর ম্যাজিস্ট্রেট তার কাছে জানতে চান তার উপর কোন নির্যাতন করা হয়েছে কিনা। উত্তরে তিনি জানান তার যৌনাঙ্গে আঘাত করা হয়েছে।
মি. রহমান বলেন “জিজ্ঞাসাবাদের নামে তার শারীরিক এবং গোপনীয় জায়গায় নির্যাতন করেছে। তাকে যখন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আনা হয় তখন ম্যাজিস্ট্রেট দেখতে পান যে তিনি খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটচ্ছেন।”
“তখন তাকে জিজ্ঞেস করেন আপনাকে কি মারধর করছে? আপনাকে কি নির্যাতন করেছে? তখন তিনি উত্তর দেন- জী। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট একজন নারী কনস্টেবলকে সাথে নিয়ে খাসকামরায় নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন তার শরীরের গোপনীয় জায়গাসহ বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতের চিহ্ন।”
এদিকে উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল হক এই অভিযোগ নাকচ করে দেন।