পূর্ব বিরোধের জেরে জাকির হোসেনে সাগর (২০) নামের এক তরুণকে কুপিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় রাস্তায় ফেলে গেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।

শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। শনিবার (১ মে) বিকেল গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

আহত সাগর উপজেলার জয়াগ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাহরকোট গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির ইউছুফ ওরফে লাল মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্ব বিরোধের জের ধরে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে কিশোর বয়সী ১০-১৫ ছেলে সাগরকে বাড়ি থেকে মোবাইলে ডেকে নেয়। পরে তারা তাকে জয়াগ ইউনিয়নের বাহরকোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নিয়ে শরীরের গোপনাঙ্গ, কপাল, হাত, কব্জি, পেট, পিঠ, পা ও হাতের তালুসহ ১৪টি কোপ দেয় এবং পিটিয়ে একটি পা ভেঙে দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, সাগর এখনও অজ্ঞান অবস্থায় আছে। এজন্য হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের নাম এখনও জানা যায়নি। এজন্য তারা এখনও এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগও দায়ের করতে পারেননি।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, মারামারি হয়েছে বলে আমরা। হামলার শিকার যুবক এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।’’

প্রধানমন্ত্রী পক্ষ থেকে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত খেলোয়াড়দের মধ্যে দেড় লাখ টাকার আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১ মে) দুপুরে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল স্টেডিয়ামে বরিশাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা বরিশালের সহযোগিতায় কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত খেলোয়াড় ও স্টাফদের মধ্যে এ অনুদান প্রদান করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জসীম উদ্দীন হায়দার।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিথি জেলা প্রশাসক সার্বিক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব প্রশান্ত কুমার দাস।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক আলমগীর খান আলো, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (এনডিসি) মো. নাজমূল হুদা, সহকারী কমিশনার সুব্রত বিশ্বাস দাস প্রমুখ।

সংক্ষিপ্ত এক আলোচনা সভা শেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে অর্থিক সাহায্য তুলে দেন জেলা প্রশাসক।

এসময় ফুটবল, ক্রিকেটার খেলোয়াড় ও স্টেডিয়ামের স্টাফসহ অন্যান্যদের মধ্যে দুই হাজার টাকা করে মোট এক লাখ ৫০ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়।

ফুটফুটে বাচ্চাটি, কথার শব্দ পেলেই তাকিয়ে থাকেন। মনে হয় খুঁজছে তার আপনজনকে। হয়তোবা সে এটা জানেন না যে এ দেশে জন্মানোই তার আজন্ম পাপ। বলছিলাম ধর্ষণের শিকার সেই কিশোরীর গর্ভে জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তানের কথা।

গত ২২ এপ্রিল বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার গারুড়িয়া ইউনিয়নের বান্ডারকাঠী গ্রামে জন্ম হয় সেই সন্তানটির। হতাশা আর সামাজিক ভয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে পরিবারটি। দুঃসময়ে তাদের পাশে নেই কেউ। কথা গুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন ধর্ষণের শিকার সেই কিশোরী।

এদিকে মাত্র ১৪ বছর বয়সে সন্তান প্রসব করায় চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে ওই কিশোরী। অর্থাভাবে চিকিৎসাও করাতে পারছে না বলে জানান তার পরিবার।

জানা যায়, অর্থ সাহায্যের কথা বলে উপজেলার গারুড়িয়া ইউনিয়নের বান্ডারকাঠী গ্রামের মো. মজিদ মোল্লার ছেলে গ্রামপুলিশ আবুল কালাম আজাদ ওই কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এতে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এ ঘটনা ওই কিশোরী তার মাকে জানালে নির্যাতিত ওই কিশোরীর মা ৫ এপ্রিল বাকেরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।

ওই দিনই অভিযুক্ত আবুল কালাম আজাদকে পুলিশ গ্রেফতার করেন। বর্তমানে আবুল কালাম আজাদ কারাগারে আছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আলাউদ্দিন মিলন জানান, এ ঘটনায় ধর্ষক আবুল কালাম আজাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে আছেন। মামলার কার্যক্রম চলমান। ওই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলেও তিনি যুগান্তরকে জানান।

কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে খেলনা গাড়িতে কৌশলে ইয়াবা বরিশালে এনে গ্রহণের সময় প্রায় পাঁচ হাজার ইয়াবাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর বাংলাবাজারস্থ কুরিয়ার সার্ভিস এসএ পরিবহণের সামনে থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- নগরীর কাউনিয়া থানার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের সজল খান, ঝালকাঠির নলছিটির শামীম হাওলাদার ও সজলের স্ত্রী এ্যানি আক্তার লামিয়া।

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, নগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সুজিত গোমস্তার নেতৃত্বে একটি দল এসএ পরিবহণের সামনে থেকে খেলনা সাইকেলসহ দুই যুবককে গ্রেফতার করে। এসময় খেলনা সাইকেলের ভেতর থেকে তিন হাজার ৮৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

রাতে গ্রেফতারদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সজলের দেওয়া তথ্যে আরো এক হাজার ইয়াবাসহ তার স্ত্রীকে ঝালকাঠির নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়ন থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এসআই সুজিত গোমস্তা জানান, চক্রটি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ইয়াবা এনে বরিশালের জেলাগুলোতে সরবরাহ করতো। এ ঘটনায় গ্রেফতার তিন জনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানান তিনি।

 

২৫ মার্চ কালো রাত , ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকহানাদার বাহিনীরা গভীর রাতে হামলা চালায় নিরস্ত্র বাঙ্গালিদের উপর করা হয় গনহত্যা । এই দিনটিকে গভীর ভাবে স্মরণ করে সকল স্তরের মানুষ । একদিকে চলছে বরিশাল মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ওয়াপদা কলোনীর টর্চার সেলে জাতির সূর্য সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন অন্যদিকে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাতের আধারে সরকারী গাছ লুট করেছে এক ছাত্রলীগ নেতা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সহ সভাপতি শওকত হোসেন অপু বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সফল মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র নাম বলে সরকারের লাগানো শিশু গাছ লুট করে। এ যেনো ছাত্রলীগ নেতা নয় গাছের ব্যাপারি।

কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে গভীর রাতে সরকারি রাস্তার পাসের শিশু গাছ কাটার সময় চোখ পড়ে যায় গণমাধ্যমকর্মীদের। জানতে চাওয়া হয় কারা গাছ কাটছে এবং এত রাতে কেন? এসময় পাশের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে ওই ছাত্রলীগ নেতা। বলে উঠেন ভাইয়ের বাসার ফার্নিচারের কাজে লাগবে তাই। কোন ভাই জানতে চাইলে তিনি রেগে উঠে বলেন, সাংবাদিকতা করেন আর ভাইকে চিনেন না এটা কেমন কথা? এর পরেও জানতে চাওয়া হয় কে সেই ভাই তিনি উচ্চস্বরে বলেন সাদিক ভাই।

এরপরে গণমাধ্যম কর্মীরা বরিশালের সফল মেয়রের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি বলেন আপনারা চেষ্টা করে দেখেন। এসময় মেয়েরের নাম বলায় সাংবাদিকদের তোপের মুখে পরেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। হঠাৎ গাছ কাটা লেবারসহ দৌড়ে পালিয়ে যায় ওই ছাত্রলীগ নেতা। সাংবাদিকরা বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জকে ফোন করে বিষয়টি জানালে তিনি তার একটি মোবাইল টিম ওখানে পাঠায়। সেখানে হাজির হন বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার চৌকস উপ-পুলিশ পরির্দশক(এসআই) পিন্টু পাল।

তিনি গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে সরকারী গাছ ভর্তি নছিমন ও গাছ কাটায় ব্যবহৃত কুরাল, শাপল, গাছ কাটা করাত সহ অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করে জব্দ করেন। রাতে আটককৃত নছিমন থানায় নিয়ে যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলা বরিশাল মহাসড়েকর চাঁদপুরা ইউনিয়নের রায়পুরা গ্রামের সোনালী পােল ও পণ্ডিত বাড়ির মাঝ খানে হিন্দু সম্প্রদায়ের জমিতে রোপিত সরকারী শিশু গাছ কাটা অবস্থায় পড়ে আছে এবং বেশ কয়েকটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চলছে সড়ক উন্নয়নের কাজ।

সড়কের জায়গা সরকার অধিগ্রহন না করায় স্থানীয়রা কাজে বাধা এবং মামলা দায়ের করেছে। যার ফলে রাস্তার উত্তর পাশে পরিধি বাড়ানোর কাজ চলছে। কিন্তু রাতের আধারে ওই ছাত্রলীগ নেতা সড়কের দক্ষিনপাশ দিয়ে গাছ কেটে নিয়ে যায়। এবিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপনারা লেখেন সব ভাই দেখবে বলে ফোনের লাইন কেটে দেয়।

সদর উপজেলা ছাত্রলীগ নেতার ঘটনা নিয়ে কথা হয় বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের পরিচয়ে কেউ অপকর্ম করে তার দায়ভার আমার নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং সদর উপজেলা ছাত্রলীগ নেবে না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে আমাদের কোন সহযোগীতা তিনি পাবে না।

এব্যাপারে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, গভীর রাতে আমাদের টহলগাড়ি সরকারী গাছসহ নছিমন যাচ্ছিল পুলিশের গাড়ি দেখে পালায়ি যায় দুবৃত্তরা।এসময় আমাদের অফিসার নছিমন থানায় নিয়ে আসছে। আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

ওড়নায় ‘তোমাকে ভালোবাসি’ লিখে কুলসুম বেগম (১৮) নামের এক নববধূ আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে পটুয়াখালী সদর উপজেলার হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকায় বাবার বাড়ির বসতঘর থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত গৃহবধূ পশ্চিম হেতালিয়া বাঁধঘাটের কবির গাজীর মেয়ে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পাঁচ মাস আগে কুলসুমের সঙ্গে আউলিয়াপুর এলাকার মাসুদের সঙ্গে বিয়ে হয়। কিন্তু কুলসুমের সঙ্গে অন্য এক ছেলের সম্পর্ক থাকায় তিনি এ বিয়ে মেনে নেননি। বুধবার গভীর রাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অভিমান করে ওড়নায় ‘আর তোমাকে ভালোবাসি’ লিখে আত্মহত্যা করেন কুলসুম।

নিহতের মা ফরিদা বেগম বলেন, প্রতিদিনের মতো রাতে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ে কুলসুম। সকালে ঘুম থেকে উঠে কুলসুমের রুমে গেলে আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়া লাশ দেখতে পাই। আমার মেয়েকে ৫ মাস আগে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাসুদের সঙ্গে বিয়ে দেই। ঈদুল ফিতরের পর পারিবারিকভাবে তুলে দেয়া হবে মেয়েকে। এরই মধ্যে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে কুলসুম।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পটুয়াখালী সদর থানার ওসি আখতার মোর্শেদ বলেন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। যে ওড়না দিয়ে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন, তাতে ‘আর তোমাকে ভালোবাসি’ লেখা রয়েছে। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

প্রায় ২ কোটি টাকার মসজিদ ও ঈদগাহের জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্যে দুলালের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দুলাল মেম্বার ও তার সেনাসদস্য ভাই মোসলেম গং কর্তৃক কাসেমগঞ্জ বাজার সংলগ্ন উত্তর মাদ্রাজ মৌজার ৮৪ জেএল নং-এর এসএ ২৪৪নং খতিয়ানের ৪০ শতাংশ জমি মসজিদ ও ঈদগাহের জন্য স্থানীয় দানবীর মিনহাজ উদ্দিন তালুকদার গং দান করেন।

দানকৃত ওই জমি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জিন্নাগড় ইউনিয়নের ইউপি সদস্য দুলাল মেম্বার ও তার ভাই মোসলেমসহ পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে বাজার মার্কেট নির্মাণে জবরদখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে।

মসজিদের স্থানীয় একাধিক মুসল্লি ও এলাকাবাসী জানান, মৃত ফজলুল হক মাস্টার গং থেকে মৃত মিনহাজ উদ্দিন তালুকদার ৪০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরে ওই জমি মিনহাজ গংরা কাশেমগঞ্জ বাজার মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠের জন্য দান করেন। দীর্ঘদিন ধরে মসজিদ ও ঈদগাহের ওই জমি দখলে থাকলেও জিন্নগড় ইউপি সদস্য দুলাল গংরা ওই জমিতে অবস্থিত মসজিদের পুকুরের উত্তরপ্রান্তে অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণে গাইডওয়ালসহ পাকা স্থাপনা নির্মাণে কাজ করছে।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান বলেন, আমার পিতা মৃত মিনহাজ উদ্দিন তালুকদার মসজিদ ও ঈদগাহকে নামাজের কাজে ব্যবহারের জন্যে ৪০ শতাংশ জমি দান করেছেন, যার সব কাগজপত্র রয়েছে।

ইউপি সদস্য দুলালের ভাই মোসলেম এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার আত্মীয়স্বজনরা এই জমি দান করেছেন। এ জমিতে মার্কেট নির্মাণে এবং মার্কেটের সৌন্দর্যবর্ধনে জমি নেয়া হলেও মসজিদ কমিটি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং চরফ্যাশন থানার ওসির সমঝোতায় কিছু টাকার বিনিময়ে ওই জমিতে আমরা স্থাপনা নির্মাণ করছি।

জিন্নগড় ইউপি সদস্য মো. দুলাল মোবাইল ফোনে জানান, ঈদগাহ মাঠ কমিটির সঙ্গে সমঝোতায় কাজ করছি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. হোসেন মিয়া বলেন, দুলালগং ওই জমির বিনিময়ে অন্য জায়গা দিয়ে ইদগাহ মসজিদের টয়লেটের জন্য ৫ শতাংশ জমি দিচ্ছে এবং ঈদগাহ কমিটিকে কিছু টাকাও দেবে। এই শর্তে দুলালরা সেখানে মার্কেট নির্মাণ করছেন।

ঈদগাহ ও মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক বলেন, দুলাল মেম্বার গং কীভাবে মার্কেট নির্মাণ করছে এটা আমার জানা নেই। আমি বাধা দিলে ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন কিছু টাকা দিয়ে দেবে। এর বাহিরে আমি কিছু জানি না।

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মোকাবেলায় কঠোর ভূমিকা পালন করছেন। পাশাপাশি করোনায় কর্মহীন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে মানবিক ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করছেন। কিন্তু করোনা প্রতিরোধে নিজের স্বাস্থ্য নিজেকেই সুরক্ষিত রাখতে হবে। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল সদর উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে ডায়রিয়া রোগীদের আইভি স্যালাইন ও কর্মহীনদের মাঝে ত্রাণ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

বরিশালের জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন- জেলা সিভিল সার্জন ডা মনোয়ার হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মধুসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতা, ডাক্তার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সদর জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের ১ হাজার আইভি স্যালাইন, করোনায় কর্মহীন ১০০ পরিবারকে চাল, ডাল, লবণ, তেল, আলু ও পেঁয়াজ ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ১ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ১০০ হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়৷

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ দক্ষিনাঞ্চলে করেনা সংক্রমণ পরিস্থিতি অবনতি অব্যাহত থাকার মধ্যে পর পর দুদিন ৪ জন করে মৃত্যু হল। মৃতদের মধ্যে বরিশাল মহানগরীতে ৩জন ছাড়াও সদর উপজেলায় একজন এবং ভোলা ও বরগুনাতে দুজন করে।

এনিয়ে দক্ষিনাঞ্চলে মৃতের সংখ্যা ২৬১ জনে উন্নীত হবার সাথে সরকারীভাবে আক্রান্তের সংখ্যাও ১৪ হাজার ৪৭৫ জনে পৌছল। বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশাল মহানগরীর কাজীপাড়া ও বাংলাবাজারে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

এদের বয়স ৭০ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে। আগের দিন দক্ষিনাঞ্চলে আরো ৪জনের মৃত্যু হয়। যার দুজন বরিশালে অপর দুজন বরগুনায়। মঙ্গলবার মহানগরীর কলেজ এভিনিউতে ৭৫ বছর বয়স্কা এক নারীর মৃত্যু হয়। এছাড়া সদর উপজেলার কড়াপুরেও ৬৫ বছরের এক পুরুষ মারা গেছেন মঙ্গলবারে।

বরিশালের সবারই মৃত্যু হয়েছে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হসপাতালে। এছাড়া মঙ্গলবারে বরগুনাতে দুজন ও বুধবারে ভোলাতে আরো ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে মৃত্যুহার ১.৮০%-এ উন্নীত হল। যা এ সপ্তাহের শুরুতে ছিল ১.৭৫। আর চলতি মাসের ২৯ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্ত ৩ হাজার ১৫২ জনের মধ্যে ৪৯ জনের মৃত্যু হল। যে সংখ্যাটা পূর্ববর্তি ৪ মাসে চেয়েও বেশী।

বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ৪১৩ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৭২ জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়। দক্ষিনাঞ্চলে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৯৫ হাজার ৩৫৪ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১৪ হাজার ৪৭৫ জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হল। সনাক্তের গড় হার এখন ১৫.৩১ %।

বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশালে নতুন ৪১ জন সহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিনাঞ্চলের সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৫৭৪ জনে উন্নীত হল। তবে আক্রান্তের এ সংখ্যার মধ্যে মহানগরীতেই প্রায় ৫ হাজার ৭শ। জেলায় এ পর্যস্ত যে ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, তারমধ্যে মহানগরীতেই সংখ্যাটা প্রায় ৬৫। গত ৪৮ ঘন্টায় জেলাটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৯। সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলের মধ্যে বরিশাল মহানগরীর পরিস্থিতিই এখনো যথেষ্ঠ ঝুকিপূর্ণ।

দ্বীপজেলা ভোলার পরিস্থিতির অবনতিও অব্যাহত রয়েছে। জেলাটিতে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ জন সহ বিগত ৪৮ ঘন্টায় ৩২ জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময়ে মারা গেছেন দুজন। ফলে জেলাটিতে মোট আক্রান্ত ১ হাজার ৭৪৪ জনের মধ্যে ২৪ জনের মৃত্যু হল। জেলাটিতে সনাক্তে হার ১৩.২৫% হলেও মৃত্যুহার ১.৩৮%। চলতি মাসেই ভোলাতে করোনা সংক্রমন ও মৃত্যু সংখ্যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

পটুয়াখালীতেও গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৯জন আক্রান্তের ফলে মোট সংখ্যাটা ২ হাজার ১০৭ জনে বৃদ্ধি পেল। জেলাটিতে মৃত্যু সংখ্যা ৫০। সনাক্তের তুলনায় যা দক্ষিণাঞ্চলের সর্বোচ্চ। এ জেলায় সনাক্তের হার ১১.৯৫% হলেও মৃত্যুহার ২.৩৭%। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীর পরিস্থিতিও অনেকটাই উদ্বেগজনক। গত ২৪ ঘন্টায় জেলাটিতে নতুন ৫ জন সহ মোট অক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ২৬২।

মারা গেছেন ২৪ জন। জেলোটিতে গত ৪৮ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৮। সনাক্তের হার দক্ষিনাঞ্চলের সর্বোচ্চ ১৯.৬৭%-এর বিপরিতে মৃত্যুহার ১.৯০ %।
পিরোজপুরে গত ২৪ ঘন্টায় দুজন সহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৫৭৬ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৩১ জন। জেলাটিতে গত ৪৮ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯ জন।

আর সনাক্তের হার দক্ষিণাঞ্চলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮.৩৯%-এর বিপরিতে মৃত্যু হার ১.৯৭%। বরগুনাতও গত ২৪ ঘন্টায় এক জন সহ মোট আক্রান্ত ১ হাজার ২১২ জনের মধ্যে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলাটিতে সনাক্তের হার ১০%। মৃত্যুহার ১.৯৮ %। মঙ্গলবারেই বরগুনা সদরে দুজন কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়।

আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে আরো ১০৪ জন সহ সর্বমোট ১১ হাজার ৭৪৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ অঞ্চলে সুস্থ্যতার হার ছিল বৃহস্পতিবারে ৮১.১৩ %। যা আগের দিনের চেয়ে দশমিক ১৩ ভাগ বেশী।

বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘন্টায় ৯৭ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আর এ সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন চার জন।এ নিয়ে বিভাগটিতে মোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়ালো ২৫৭ জনে।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকালে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয়ের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, করোনার প্রথম ঢেউয়ে বরিশাল বিভাগে সংক্রমণের হার কম ছিল।

কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের হার বেশি। এ অবস্থায় শুধু করোনার টিকা গ্রহণ করলেই চলবে না সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি করোনা শনাক্ত হয়েছে বরিশাল জেলায় ৩৮ জন।

এরপর ঝালকাঠিতে ২৩, ভোলায় ২০ জন, পিরোজপুরে ৯, পটুয়াখালীতে ৬ জন ও বরগুনায় ১ জন । এ নিয়ে গত ১৩ মাসে বিভাগটিতে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৪০৩ জন। এরমধ্যে সর্বোচ্চ বরিশালে আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৫৩৩ জন, এরপর পটুয়াখালীতে দুই হাজার ৯৮ জন, ভোলায় এক হাজার ৭৩০ জন, পিরোজপুরে এক হাজার ৫৭৪ জন, ঝালকাঠিতে এক হাজার ২৫৭ জন এবং বরগুনায় এক হাজার ২১১ জন।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে করোনা আক্রান্ত ৭৯ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে বিভাগটিতে মোট সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৬৩৯জন। আর বিভাগটিতে করোনা আক্রান্ত দুই হাজার ৭৬৪ জন রোগী চিকিৎসাধীন। এরমধ্যে কিছু রোগী হাসপাতালে ও অন্যরা নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন।বিভাগটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ২৫৭ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন বরিশাল জেলায় ১০৬ জন।

এরপর পটুয়াখালীতে ৫০ জন, পিরোজপুরে ৩১ জন, ঝালকাঠিতে ২৪ জন, বরগুনায় ২৪ জন ও ভোলায় ২২ জন।প্রসঙ্গত, বরিশাল বিভাগের মধ্যে সর্বপ্রথম ২০২০ সালের ৯ মার্চ নারায়ণগঞ্জ ফেরত পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার এক শ্রমিকের প্রথম করোনা শনাক্ত হয়।