চাকুরির মেয়াদ শেষ দুই মাস আগে। তবুও দায়িত্ব ছাড়েননি। নিজের চেয়ারে বসেই বহাল তবিয়তে ঘুষ বাণিজ্য চালাচ্ছেন। মসজিদ-মাদ্রাসার বরাদ্দেও বসাচ্ছেন ভাগ। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হোক বা অন্যকিছু তাতে তার কিছুই যায় আসে না। বরাদ্দের ৩০ থেকে ৪৫ ভাগ টাকা নিজ হাতেই কেটে রাখেন তিনি। এজন্য আছে নানা খরচের অজুহাত।

এই ঘুষ বাণিজ্যের নেপথ্যে শামছুল হক (৬০)। তিনি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক।

জানা গেছে, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি তার চাকুরিজীবন শেষ হয়েছে। কিন্তু তিনি অফিস ছাড়েননি। নিজ চেয়ার-টেবিলে বসেই তিনি ঘুষ বানিজ্য করে চলছেন।

অভিযোগ রয়েছে, শামসুলকে টাকা না দিলে পিআইও অফিসের ফাইল নড়ে না। তার দাবি মেটালেই অসাধ্যকে সাধন করতে পারেন তিনি। শামছুল হকের এই কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধান শুরু করে যুগান্তরের এ প্রতিবেদক। আর এই অনুসন্ধানেই বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতি প্রকল্প থেকে হিসাব রক্ষণ অফিস, স্ট্যাম্প, রেজুলেশন ও অফিস খরচের অজুহাতে শামসুল বরাদ্দের ৩০ থেকে ৪৫ ভাগ টাকা কেটে রাখেন। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা নিয়ে বিপাকে পড়ছেন প্রকল্প সভাপতি ও সংশ্লিষ্টরা।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, টিআর কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চতলাখালী গাজী আয়জদ্দিন মাস্টার বাড়ির জামে মসজিদ মেরামত প্রকল্পের জন্য ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারা পেয়েছেন ৩১ হাজার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং প্রকল্প সভাপতি ফোরকান শিকদার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমাকে ফোন দিয়ে অফিসে নেয়। হিসাব নিকাশ করে আমাকে ৩১ হাজার টাকা দিছে। আমি জিজ্ঞেস করেছি, আর টাকা? তিনি (শামসুল) বলেন, এটা আমাদের অফিসের খরচ। পরে আমি চলে আসছি।’

শুধু কি একটি প্রকল্পে এমন ঘটনা? না, এবিষয়ে আরও অনুসন্ধান করে যুগান্তর।

সোমবার দুপুরে পিআইও অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অবসরে যাওয়া অফিস সহকারি শামসুল হক নিজের ডেস্কে বসে কাজ করছেন।

এসময় বরাদ্দের টাকা কম দেওয়া নিয়ে শামসুলের সঙ্গে মৌডুবি ভূইয়াকান্দা জামে মসজিদ সংস্কার প্রকল্পের সভাপতি মাসুদ রানার কথা কাটাকাটি হচ্ছিল।

জানতে চাইলে মাসুদ রানা বলেন, রবিবার পিআইও অফিসের সহকারি শামসুল আমাকে ২১ হাজার টাকা দিয়েছে। অথচ মসজিদের বরাদ্দ ছিল ৩৭ হাজার টাকা। আমি জানতে চেয়েছি ১৬ হাজার টাকা গেল কই? আমাকে কিছু না বলে সে বলছে, আপনি এখন যান, এই টাকাই। বিষয়টি আমি পিআইও স্যারকে জানালে আজ (সোমবার) আমাকে ১২ হাজার টাকা ফেরত দেয়। কিন্তু মোট বরাদ্দের ৪ হাজার টাকা খরচ বাবদ রেখে দিছে।’

কথা হয় ছোটবাইশদিয়া সোহেল দফাদার বাড়ির মসজিদের প্রকল্প সভাপতি সোহেলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার মসজিদের বরাদ্দ ৪৫ হাজার টাকা। কিন্তু আমাকে দিয়েছিল ৩২ হাজার ৫০০ টাকা। পরে পিআইওকে কে বা কারা অবগত করার পর শামসুল সাহেব বাজারে এসে আরও ৮ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে যায়। তবুও ৪ হাজার টাকা খরচ বাবদ রেখে দেয়।’

তিনি বলেন, ‘বরাদ্দের টাকা আনতে পিআইও অফিসে গিয়ে দেখলাম, অন্যান্যদের কাছ থেকেও ৩০%-৪৫% যার কাছ থেকে যেরকম খুশি টাকা রেখে দিচ্ছে। এভাবে হলেতো অফিসের টাকা দিয়ে প্রকল্পের কাজ করা সম্ভব হবে না।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচিতে দ্বিতীয় পর্যায় উপজেলার মসজিদ ও মাদ্রাসাসহ ২২টি প্রকল্পের জন্য ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৪৮৯ টাকা এবং গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় ৮টি প্রকল্পে ২৩ লাখ ৬৪ হাজার ২১৪ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

পিআইও অফিসে শামসুলের এ ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি ওপেনসিক্রেট। তবুও অনেকে মুখ খুলতে নারাজ। কারণ তাহলে ফাইল আটকে যেতে পারে শামসুলের টেবিলে।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এসব শামসুল করছে। তার বিরুদ্ধে তো আমরা কথা বলতে পারি না। যা খুশি তাই করছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিআইও অফিসের এক কার্যসহকারি বলেন, ‘টাকা দেয়, কিছু টাকা রাখে মাষ্টাররোলের।’

এবিষয়ে অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত পিআইও অফিসের অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক শামসুল হক বলেন, ‘আমারে আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ করো। যা বলার পিআইওরে বল। আমি মাফ চাই। এগুলো আমার মত চুনোপুটির সঙ্গে আলাপ করে কোন লাভ আছে?।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এই মুহুর্তে অফিসের কার্যক্রম চালানোর লোক নেই। জুন পর্যন্ত শামসুল সাহেবকে রাখা হয়েছে। তবে তিনি অফিসে এ ধরণের কর্মকাণ্ড করে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশাল নগরীতে একটি তুলার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২৮এপ্রিল) বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পরে ফায়ার সার্ভিস এসে প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।

কারখানার মালিক রফিকুল ইসলাম জানায়, আনুমানিক সকাল ৭টা নাগাত আগুন লাগে। মিলের পিছন থেকে আগুন লাগা শুরু হয়।

তবে কোন কারনে আগুন লাগে তার সঠিক কারন এখনও জানা যায়নি। এতে আমি অনেক টাকার ক্ষতি শিকার হয়েছি।

মো:রাজিবুল হক(বরগুনা সংবাদদাতা):
বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার পশ্চিম চিলা গ্রামে (২৬ এপ্রিল) সোমবার জমির ধান কাটাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ফেরদৌসকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ৯ জনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জানাগেছে, উপজেলার পশ্চিম চিলা গ্রামের মজনু মাতুব্বর তার চাচাতো ভাই আবুল মাতুব্বরের নিকট থেকে ১৫ শতাংশ জমি নগদ টাকায় ক্রয় করেন। ওই জমিতে মজনু এ বছর হাইব্রিড ধান চাষ করেছে। সোমবার দুপুরে ওই জমির ধান কাটতেছিল মজনু। এ সময় সোহরাফ মাতুব্বর ও বশির মাতুব্বর এসে জমির ধান কাটতে বাঁধা দেয়। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত সালমা (৩২), হালিমা (৫০), জাকারিয়া (৩০),মজিবুর (৬০), মজনু (৩২), ফেরদৌস (৩৫), সোহরাফ মাতুব্বর (৫৫), বশির মাতুব্বর (৪০), সগির (২৫) ও এলিচকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ফেরদৌসকে সঙ্কটজনক অবস্থায় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয়রা বলেন, মজনু মাতুব্বর তার জমির ধান কাটতে গেলে সোহরাফ মাতুব্বর বাধা দেয়। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
আহত মজনু মাতুব্বর বলেন, আমি আবুল মাতুব্বরের কাছ থেকে নগদ টাকায় ১৫ শতাংশ জমি এক বছরের জন্য ক্রয় রেখেছি। ওই জমির ধান করতে গেলে সোহরাফ মাতুব্বর ও তার লোকজন বাঁধা দেয়। পরে তারা আমাকেসহ আমার ৮ জনকে কুপিয়ে আহত করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আহত সোহরাফ মাতুব্বর বলেন, আমার জমির ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছিল মজনু মাতুব্বর। এতে আমি বাঁধা দিলে আমাকে ও আমার ছেলেকে মারধর করেছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক|| বরিশাল জেলা বিএনপি এর সাবেক সভাপতি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আহসান হাবীব কামালের সুস্থতা কামনা করে দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে। নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ড ছাত্রদল ও যুবদলের নেতৃত্ব এই আয়োজন করা হয়। তখন সেখানে ১৪ নং ওয়ার্ড বি এন পি ও অংগসংগঠনের নেতাকর্মীরা তার সুস্থতা কামনা করেন এবং অনতিবিলম্বে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার সহ নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ সন্তানের সঙ্গে হাতে ব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে সড়কের পাশ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন আনিকা ড্রিম হাউসের সত্ত্বাধিকারী আনিকা তাহসিন। হঠাৎ করে একটি মোটরসাইকেলের পেছনের সিটে বসা এক ছিনতাইকারী নারী ব্যাগটি টান দিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় শুধু আনিকাই নন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও হতবাক হয়েছেন।
এরইমধ্যে ভুক্তভোগী আনিকা বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পাশাপাশি তিনি তার ফেসবুক আইডি থেকেও বিষয়টি নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। আর ওই পোস্টে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পাওয়া ছিনতাইকারীদের দু’টি ছবিও জুড়ে দিয়েছেন। যেটি এখন নগরজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলতে শুরু করেছে।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে আনিকা তাহসিন বলেন, রোববার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় আমি বাসা থেকে বাংলাবাজার সংলগ্ন একটি কুরিয়ার সার্ভিসের অফিসে যাওয়ার জন্য বের হই। সঙ্গে আমার নিজের ও বোনের ছেলে ছিল। রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা মেয়েটি আমার হাতের ব্যাগটি টেনে নেন। সঙ্গে সঙ্গে চালক মোটরসাইকেলের গতি বাড়িয়ে পালিয়ে যান।

ব্যাগের মধ্যে তিনটি ব্যাংকের কার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্ড, নগদ টাকাসহ জরুরি কিছু কাগজপত্র ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় এক ছেলের মাধ্যমে জানতে পারি ওই ছেলে ও মেয়েটি এরআগেও আশেপাশে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরাঘুরি করেছেন। তারা আমাকে টার্গেট করে ছিনতাই করলো কিনা তা বুঝতে পারছি না। যাহোক এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেছি।

তিনি বলেন, বাইক চালিয়ে ছিনতাই হয়, তবে মেয়েরা যে এতে সম্পৃক্ত সেটি দেখে আমি হতবাক হয়েছি। আর বাইক যাদের আছে তারা অভাবের তাড়নায় এ কাজ করতে পারেন না। হয়তো স্বভাবের কারণে নয়তো নেশার কারণে এ কাজ করেছেন।

তিনি বলেন, আমার হয়তো অল্প টাকার মালামাল খোয়া গেছে, তবে ওদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে যদি ৫ হাজার টাকা খরচ হয় তাতেও আমি দ্বিধাবোধ করবো না। কারণ সমাজের এ অবক্ষয় রোধে ওদের আইনের আওতায় আনা উচিত বলে আমি মনে করছি।

ডিস্ট্রিক্ট উইমেন্স বিজনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বরিশালের পরিচালক রেবেকা সুলতান বলেন, এ ধরণের কাজে মেয়েদের জড়িয়ে যাওয়া সত্যিই উদ্বেগের বিষয়। অর্থনৈতিক কারণ অর্থাৎ অভাবজনিত কারণ ছাড়া এ ধরণের কাজে জড়ানোটাও একধরনের মানসিক সমস্যা। এজন্য কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজন। আর সেটা আইনের আওতায় এনে হোক কিংবা পরিবারের মাধ্যমেই হোক। নয়তো একসময় এটি অভ্যাসে পরিণত হবে।

 

ভৈরব মেঘনা নদীর পাড় এলাকার রিভার ভিউ হোটেলের সামনে থেকে আজ সোমবার সকালে ১২ কেজি গাঁজাসহ দুই নারী মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে ভৈরব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সদস্যরা।

আটককৃতরা হলো- ঝালকাঠি জেলার নলসিট থানার কাঠিপাড়া গ্রামের রাসেল মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম (২৮) ও জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানার ফুলকারচর গ্রামের মোশাররফের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৪৫)। তারা দুজন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাইনবোর্ড এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে।

সোমবার সকাল ৮টায় তারা দুজন ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার চৌরাস্তায় অপেক্ষমাণ মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দুটি ব্যাগে গাঁজা নিয়ে গাজীপুর এলাকায় পৌঁছে দিতো এবং বিনিময়ে দুজনে ২০ হাজার টাকা পেতো বলে নারীরা জানিয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সদস্যরা জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভৈরব মেঘনা নদীর পাড়ের খেয়া ঘাটের নিকট রিভার ভিউ হোটেলের সামনে থেকে দুই নারীকে গ্রেফতার করে তাদের সাথে থাকা ব্যাগ ও লাগেজ তল্লাশি করলে ১২ কেজি গাঁজা পাওয়া যায়। পরে তাদেরকে আটক করে কমলপুর নিউটাউন সার্কেল অফিসে নিয়ে আসা হয়।

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ভৈরব সার্কেলের পরিদর্শক সেন্টু রঞ্জন নাথ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুইজন নারীকে ১২ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা প্রদান করে কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালামের বিরুদ্ধে।

তিনি শনিবার দুপুরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে তার শিশুপুত্রকে চিকিৎসাসেবা দেয়ার নামে চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান খানের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।

একপর্যায়ে ওই চিকিৎসক থানায় ফোন দেয়ার চেষ্টা করলে তার ফোন ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগ নেতা কালাম। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করে।

এ ঘটনায় ডা. মনিরুজ্জামান খান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে ওই ছাত্রলীগ নেতা দাবি করেছেন, চিকিৎসক তার মুমূর্ষু শিশুকে চিকিৎসাসেবা দিতে মানবিকতা দেখাননি।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মনিরুজ্জামান খান রোববার বলেন, বাকেরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এর ওপর করোনা আতঙ্কও রয়েছে।

শনিবার বেলা দেড়টার দিকে এসব বিষয় মনিটরিং করছিলেন তিনি। হঠাৎ ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালাম ইমার্জেন্সি রুমে তার ৩ বছরের শিশুপুত্রকে নিয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় স্টাফরা কালামকে মাস্ক পরে আসতে বলেন।

পরে ছাত্রলীগ নেতা কালাম জানান, তার বাচ্চার তিনবার পাতলা পায়খানা হয়েছে। তিনি বাচ্চার হাতে ক্যানুলা পরিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন।

ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, তারা ওই বাচ্চাকে দেখে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখেননি। যে কারণে ভর্তি ছাড়া ক্যানুলা পরাতে চাননি।

এতে ছাত্রলীগ নেতা কালাম উত্তেজিত হয়ে চিৎকার করতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি থানায় ফোন দেয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ নেতা তার হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নিয়ে হুমকি ধামকি দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে কালাম সটকে পড়ে।

এ প্রসঙ্গে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ইশরাত জেরিন জুঁই বলেন, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। এটা নিয়ে তারা এখনো বসতে পারেননি। সোমবার বসে সিদ্ধান্ত নেবেন কী ব্যবস্থা নেয়া যায়।

তবে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, তার গোটা পরিবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।

তিনি শনিবার তার অসুস্থ শিশুপুত্রকে হাসপাতালে নিয়ে ডা. মনিরুজ্জামানকে বাচ্চাকে বাঁচাতে অনুরোধ করেন।

কিন্তু তিনি মাস্ক পরার জন্য তাড়া দেন। পরে মাস্ক পরে এসে বাচ্চাকে দেখতে চিকিৎসককে অনুরোধ জানান।

কিন্তু ডা. মনিরুজ্জামান সীমিত বেডের অজুহাতে এখানে ভর্তি করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

একপর্যায়ে তিনি ক্যানুলা পরিয়ে দেয়ার কথা বললেও ডা. মনিরুজ্জামান বাচ্চাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। এ নিয়ে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছে।

ছাত্রলীগ নেতা কালাম বলেন, তার মুমূর্ষু শিশুকে সেবা দিতে মানবিকতা দেখাননি চিকিৎসক।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) নকিব আকরাম বলেন, তিনি থানায় ছিলেন না। তাই বিষয়টি নলেজে নেই।

এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবী রায় বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সোমবার এ নিয়ে তার সাথে বৈঠক করবেন। তবে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নেতা এভাবে একজন চিকিৎসককে নিয়মের বাইরে চিকিৎসা দিতে বলতে পারেন না।

শামীম আহমেদ ॥ বরিশাল নগরীর ৫ নং ওয়ার্ড পলাশপুরের ইসলাম নগরে নবম শ্রেনীর ছাত্রী রুমি আক্তারের মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল। পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে এ মৃত্যু নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। কেউ বলছে পরিকল্পিত হত্যা আবার কেউ বলছেন আত্মহত্যা।

তাই ময়না তদন্তর রির্পোটের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে প্রশাসনকে। যদিও আপাতত বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন দাফন কাজ শেষ করা হয়েছে।

অনুসন্ধানী তথ্যে জানা যায়, পলাশপুর ইসলাম নগর দ্বিতীয় গল্লিতে ভাড়া বাসায় বসবাস করা জামাল মোল্লার মেয়ে স্থানীয় দলিল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী রুমী আক্তার (১৬) তার নিজ বাসায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রহস্যজনক আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন তার পরিবার।

এদিকে এলাকাবাসীর মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে পারিবারিক আর্ন্তকোন্দলের কারনে ওই কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিজেদের আইনী ফাঁদ থেকে রক্ষা করতে আত্মহত্যা বলে প্রশাসন সাধারন মানুষের কাছে জানান দেওয়া হয়েছে।

মিডিয়ার কাছে এ ধরনের একটি তথ্য আসলে এ হত্যার রহস্য নিয়ে উঠে আসে নানান ধরনের তথ্য উপাত্ত। মৃত কিশোরীর বাবা জামাল মোল্লা জানান, ২২ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে রুমি আক্তার তার মায়ের কাছে নতুন জামার আবদার করে, কিন্তু তার মা লকডাউনে পারিবারিক অবস্থা ভালো না থাকায় নিজ মেয়েকে রাগের বশত একটি চামচ দিয়ে প্রহার করে।

তাতেই নিজ মাতা পিতার সাথে অভিমান করে পলাশপুরে আছরের পর নিজ বাসায় রুমের ভিতরে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে রুমি আক্তার। ওড়না পেঁচানো অবস্থায় রুমি আক্তারকে দেখে তার পিতা দ্রুত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরে তাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। তবে ভাড়াটিয়া বাসার মালিক কবিতা বেগম জানালেন ভিন্ন কথা।

তিনি জানান, নতুন জামার জন্য আত্মহত্যা এ ধরনের কথা রটানো ছাড়া আর কিছুই না। মারা যাওয়ার তিন দিন আগে রুমী আক্তারের মা রুমীকে বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে মা-মেয়ের মধ্যে কথাকাটাটি হয়েছিলো। ঈদের এক সপ্তাহ পরেই স্থানীয় মৃদুলের সাথে রুমী আক্তারের পারিবারিক ভাবে বিয়ের বিষয়ে সিদান্ত ছিলো। এ সংক্রান্ত ঘটনা এবং লাশের পাশে থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানিয়েছে মারা যাওয়ার আগ মুহুর্তের মোবাইলের কল লিস্টে চারটি ভিন্ন ভিন্ন নাম্বারের কথা হয়েছে রুমীর। সেটিই এখন পর্যবেক্ষনে রেখেছে প্রশাসন। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের মতে এই মৃত্যুর রহস্যে বিয়ে এবং প্রেম ঘটিত দ্বিপাক্ষিক একটি বিষয় রয়েছে। এজন্যই এলাকাবাসী মনে করছে রুমী আক্তার আত্মহত্যা করেনি, তাকে কেউ মেরে ওড়না পেচিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে।

সন্দেহর মাত্রা বাড়ার আরো একটি জটিলতর কারন হচ্ছে ঝুলানো লাশ নামানোর সময় কেউ বলছে জীবত ছিলো আবার কেউ বলছে মারা গেছে। আরো একটি সূত্র মিডিয়াকে নিশ্চিত করে বলেন, ওই ভাড়াটিয়া বাড়ির মালিক কবিতা বেগমের দুই মেয়েও কিছু দিন পূর্বে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলো।

পরক্ষণে হাসপাতালের চিকিৎসায় তারা সুস্থ হন। তাই রুমী আক্তারকে মেরে ফেলা হয়েছে নাকি আত্মহত্যা করেছে তা জানতে এলাকাবাসীর আগ্রহের যেন শেষ নেই।

বরিশাল নগরীর খালগুলো মাসব্যাপী পরিস্কার কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

সোমবার দুপুরে নগরীর চৌমাথা বাজার সংলগ্ন নবগ্রাম খালের ময়লা ভেকু দিয়ে মেয়র নিজে পরিস্কার করে উদ্বোধন করেন। এছাড়া কাটা দিয়েও (কোদালের মত) তিনি পরিস্কার কাজের শুরু করেন।

উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপককালে মেয়র বলেন, বরিশালের খালগুলোর বেশির ভাগই প্রায় হারিয়ে গেছে। এ কারনে বর্ষার সময় নগরীর বড় একটি অংশ হাটু পানির নিচে থাকে। এবছর বর্ষার আগে খাল পরিস্কার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। যাতে বর্ষার সময় কিছুটা হলেও পানি নেমে যেতে পারে। আজ থেকে শুরু হওয়া এই পরিস্কার কার্যক্রম চলবে মাসব্যাপী। ভেকু ( এ্যাসকাভেটর ) ছাড়াও দেড়শ শ্রমিক পরিছন্নতা কাজে অংশ নিচ্ছে।

এসময় বরিশালের জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফারুক হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বরিশালে ছাত্রলীগ পরিচয়ে সেলুন ব্যবসার আড়ালে মাদক কারবার চালানো একটি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। বেলতলার আউটলুক সেলুনে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে ২২ পিস ইয়াবাসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- রেদোয়ান হোসেন তানভীর, মোহাম্মদ নোমান ও জয়।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় ‘আউটলুক সেলুন’ এর আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করছে স্থানীয় একটি চক্র। এই চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন বরিশাল ওজোপাডিকোর কর্মচারী শামিম মাহামুদের দুই ছেলে মেহেদী হাসান ও রেদোয়ান হোসেন তানভীর।

মেহেদী হাসান নিজেকে ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে সহযোগীদের মাধ্যমে ইয়াবা বিক্রি করে আসছিলো। রোববার রাতে ওই সেলুনে অভিযান চালিয়ে ২২ পিস ইয়াবাসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় মূলহোতা মেহেদীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি গোয়েন্দা পুলিশ।

এ ঘটনায় এসআই খায়রুল আলম বাদী হয়ে গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।