শামীম আহমেদ ॥ বরিশাল নগরীর ৫ নং ওয়ার্ড পলাশপুরের ইসলাম নগরে নবম শ্রেনীর ছাত্রী রুমি আক্তারের মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল। পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে এ মৃত্যু নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। কেউ বলছে পরিকল্পিত হত্যা আবার কেউ বলছেন আত্মহত্যা।
তাই ময়না তদন্তর রির্পোটের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে প্রশাসনকে। যদিও আপাতত বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন দাফন কাজ শেষ করা হয়েছে।
অনুসন্ধানী তথ্যে জানা যায়, পলাশপুর ইসলাম নগর দ্বিতীয় গল্লিতে ভাড়া বাসায় বসবাস করা জামাল মোল্লার মেয়ে স্থানীয় দলিল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী রুমী আক্তার (১৬) তার নিজ বাসায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রহস্যজনক আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন তার পরিবার।
এদিকে এলাকাবাসীর মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে পারিবারিক আর্ন্তকোন্দলের কারনে ওই কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিজেদের আইনী ফাঁদ থেকে রক্ষা করতে আত্মহত্যা বলে প্রশাসন সাধারন মানুষের কাছে জানান দেওয়া হয়েছে।
মিডিয়ার কাছে এ ধরনের একটি তথ্য আসলে এ হত্যার রহস্য নিয়ে উঠে আসে নানান ধরনের তথ্য উপাত্ত। মৃত কিশোরীর বাবা জামাল মোল্লা জানান, ২২ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে রুমি আক্তার তার মায়ের কাছে নতুন জামার আবদার করে, কিন্তু তার মা লকডাউনে পারিবারিক অবস্থা ভালো না থাকায় নিজ মেয়েকে রাগের বশত একটি চামচ দিয়ে প্রহার করে।
তাতেই নিজ মাতা পিতার সাথে অভিমান করে পলাশপুরে আছরের পর নিজ বাসায় রুমের ভিতরে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে রুমি আক্তার। ওড়না পেঁচানো অবস্থায় রুমি আক্তারকে দেখে তার পিতা দ্রুত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরে তাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। তবে ভাড়াটিয়া বাসার মালিক কবিতা বেগম জানালেন ভিন্ন কথা।
তিনি জানান, নতুন জামার জন্য আত্মহত্যা এ ধরনের কথা রটানো ছাড়া আর কিছুই না। মারা যাওয়ার তিন দিন আগে রুমী আক্তারের মা রুমীকে বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে মা-মেয়ের মধ্যে কথাকাটাটি হয়েছিলো। ঈদের এক সপ্তাহ পরেই স্থানীয় মৃদুলের সাথে রুমী আক্তারের পারিবারিক ভাবে বিয়ের বিষয়ে সিদান্ত ছিলো। এ সংক্রান্ত ঘটনা এবং লাশের পাশে থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানিয়েছে মারা যাওয়ার আগ মুহুর্তের মোবাইলের কল লিস্টে চারটি ভিন্ন ভিন্ন নাম্বারের কথা হয়েছে রুমীর। সেটিই এখন পর্যবেক্ষনে রেখেছে প্রশাসন। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের মতে এই মৃত্যুর রহস্যে বিয়ে এবং প্রেম ঘটিত দ্বিপাক্ষিক একটি বিষয় রয়েছে। এজন্যই এলাকাবাসী মনে করছে রুমী আক্তার আত্মহত্যা করেনি, তাকে কেউ মেরে ওড়না পেচিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে।
সন্দেহর মাত্রা বাড়ার আরো একটি জটিলতর কারন হচ্ছে ঝুলানো লাশ নামানোর সময় কেউ বলছে জীবত ছিলো আবার কেউ বলছে মারা গেছে। আরো একটি সূত্র মিডিয়াকে নিশ্চিত করে বলেন, ওই ভাড়াটিয়া বাড়ির মালিক কবিতা বেগমের দুই মেয়েও কিছু দিন পূর্বে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলো।
পরক্ষণে হাসপাতালের চিকিৎসায় তারা সুস্থ হন। তাই রুমী আক্তারকে মেরে ফেলা হয়েছে নাকি আত্মহত্যা করেছে তা জানতে এলাকাবাসীর আগ্রহের যেন শেষ নেই।