নলছিটিতে ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলীর খাম্বা বাণিজ্য : অতিষ্ঠ জনতা।

ঝালকা‌ঠির নলছিটিতে ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলী মো. সোহেল রানার খাম্বা বাণিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ আবারও আলোচনায় এসেছে। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় তিনি প্রভাব খাটিয়ে সরকারি খুঁটি সরবরাহে অনিয়ম ও বাণিজ্যিক লেনদেনে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চরজাগুয়া এলাকার বাসিন্দা বাকি মৃধার কাছ থেকে তিনটি বৈদ্যুতিক খুঁটি দেওয়ার কথা বলে ৫১ হাজার টাকা নেন প্রকৌশলী সোহেল রানা। কিন্তু বাস্তবে তিনি দিয়েছেন মাত্র দুটি খুঁটি। বাকি একটি খুঁটি অবৈধভাবে বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় সরবরাহ করা হয়েছে যা তার দায়িত্ব ও এখতিয়ার বহির্ভূত।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, তার নেতৃত্বে কয়েকজন চিহ্নিত দালালচক্র সক্রিয় রয়েছে। ওই চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে তিনি খুঁটি ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সরবরাহের নামে অনিয়ম ও অবৈধ আর্থিক লেনদেন করে থাকেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবাসিক প্রকৌশলী মো. সোহেল রানা সাংবাদিকদের বলেন, “লাইনের বিষয় আমি কিছু জানি না, জেনে জানাতে পারবো,” বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে একই কর্মস্থলে থেকে তার এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ সাধারণ গ্রাহক ও স্থানীয় জনগণ। তারা দ্রুত তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

 

 

আসাদুজ্জামান শেখ//বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কলস গ্রামে সাবেক প্রেমিকার মোবাইলে প্রেমিকের গোপন তথ্য থাকায়,চক্রান্ত করে তুলে এনে বন্ধুর বাসায় ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ধর্ষিতা নারী মরিয়ম আক্তার নিশী (ছদ্মনাম) ।

অভিযোগ সুত্রে জানাযায়,বরিশালের লাকুটিয়া এলাকার ফারুকুল ইসলাম এর ছেলে অন্তু (৩০) সাথে উজিরপুর উপজেলার মরিয়ম আক্তার নিশী নামের একটি মেয়ের অনলাইনে সম্পর্ক হয়।কিছুদিন পরে নিশী জানতে পেরে ছেলেটির চরিত্র ভাল নয়,মাদকাসক্ত ও লম্পট।এমন তথ্য জানার পরে নিশী সম্পর্ক ছিন্ন করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।কিন্তু অন্তু ভিবিন্ন ভাবে নিশীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়।

বরিশালের আলোচিত-সমালোচিত ল্যাডি টিকটকার মারিয়া আক্তারকে ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করে। মারিয়া অন্তুর সোর্স হিসেবে নিশীর সাথে ফেইসবুকে বন্ধুর সম্পর্ক তৈরী করে।গত ৪ নভেম্বর মারিয়া অন্তুর হৃদয় উজিরপুর জান। হৃদয়ের বাসা কাশিপুর ইউনিয়নের কলস গ্রামে। নিশীর উজিরপুরের বাড়িতে গিয়ে মোবাইল করে অনুষ্ঠানের কথা বলে বাসা বের হতে বলেন মারিয়া।

নিশী বের হলে মারিয়া,অন্তু ও রিদয় মিলে ছক করে বরিশালের এয়ারপোর্ট থানাধীন কাশিপুর ইউনিয়নের কলস গ্রামের অন্তুর বন্ধু রিদয়ের বাসায় আটকে রেখে মারধর করে,এবং কৌশলে নেশা খাইয়ে দেয়া হয় ও ধর্ষণ করে।
পরের দিন ৫ ই নভেম্বর দুপুরের দিকে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি সুজোক বুজে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী এয়ারপোর্ট থানায় এসে অভিযোগ করেন।

এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন মহিলা পুলিশ দিয়ে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা যাচাই করে মামলা রুজু করতে বলেন এবং আসামীদের গ্রেফতার করার আদেশ দেন।যার মামলা নং ০৯/০৫নবেম্বর ২৫।
অভিযোগকারী মেয়ে মরিয়ম আক্তার নিশীকে সাথে নিয়েই বিমানবন্দর থানার এস আই আক্তার হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযানে নামে।প্রথমে ভিকটিমের তথ্য অনুযায়ী অন্তুর বন্ধু ও যেই বাসায় ধর্ষণ করা হয়েছে সেই বাসা থেকে রিদয়কে গ্রেফতার করেন,পরে রিদয়ের স্বীকারোক্তি অনুসারে অন্তুকে হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা হতে গ্রেফতার করে বিমানবন্দর থানা পুলিশ।এই ঘটনার সাথে জড়িত অন্যতম সদস্য মারিয়া আক্তার এখনো পালাতক রয়েছে।

এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান,নিশী নামের একটি মেয়ে থানায় এসে ধর্ষণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন,আমরা ঘটনাটি আমলে নিয়ে মামলা নেই,এবং ধর্ষক সহ দুইজন আমরা গ্রেফতার করি এবং এর সাথে জড়িত অপর একজন মারিয়া আক্তারকেও গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এ বিষয়ে ভিকটিমের এক ভাই(কাজিন) তুষার জানান,অন্তু নামের ছেলের পুর্বে এক স্ত্রী ও সন্তান আছে,একাধিক মামলার আসামি। সেই স্ত্রীর সাথে ডিভোর্স হয়ে যায়।ডিভোর্স হয়ে যাওয়া স্ত্রীর খোজ এবং সন্তানের কাছে যেতে নিশীর সাথে পরিচয় হয়,এবং নিশীও ডিভোর্স প্রাপ্ত জেনে সেই সুজোক কাজে লাগিয়ে ভিবিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিশীর সাথে সম্পর্ক করেন অন্তু।নিশী যখন জানতে পারে অন্তু একজন মাদকাসক্ত তখন অন্তুর থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।তখন অন্তুর একটি গোপন ভিডিও নিশীর মোবাইলে ধারন করা ছিলো।সেই গোপন ভিডিও নেওয়ার জন্য এত পরিকল্পনা করে নিশীকে তুলে আনে,এবং ধর্ষণ করে।

এ বিষয়ে অন্তুর বন্ধু রিদয়ের মা জেসমিন বেগম জানান,ঘটনার দিন তিনি এবং তার ছোট ছেলে তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলো।ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানেন না,তবে তার ছেলে ধর্ষনের সাথে জড়িত নন বলে দাবী করেন রিদয়ের মা।
এদিকে ধর্ষকদের ছারাতে বেশ কয়েকটি মহল ভিবিন্ন ভানে তদবির চালাচ্ছে।সাংবাদিকদের উপস্থিতির কারনে তাদের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।

এ বিষয়ে অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন আসামীদের সকালেই চালান করে দেওয়া হবে।এটা সমাজের জন্য একটা বেদী। কোন অসাধুচক্রকে তদবির কিংবা ছারানোর সুযোগ দেওয়া হবে না।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভিকটিমকে শেরই বাংলা মেডিকেলে ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে মেডিকেল টেষ্টের জন্য।এবং আসামীদের ডিএন এ টেষ্ট করানো হবে,যাদের প্রমান মিলে যাবে তাদের বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যাবস্থা নিবেন বলে জানান ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন।

 

বরিশালের নীরব পাড়ায় শান্তিময় এক বারান্দা। সেখানেই বসে পর্দাশীল, স্বল্পশিক্ষিত মেহেরুন্নেছা তার জীবনের সঞ্চয় হারানোর কথা বলতে গিয়ে চোখের কোণা ভিজিয়ে ফেলেন। ছেলের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন, মেয়ের ভবিষ্যৎ, বয়সের শেষভাগে নিশ্চিন্ত জীবন। সব মিলিয়ে একটুকরো আশ্রয়ের মতো ছিল প্রায় আটষট্টি লাখ টাকা। সেই টাকা তিনি বিশ্বাস করে বড় কর্মকর্তা মনে করে জমা রাখেন বরিশাল ডাক বিভাগের আর্মগার্ড আলাউদ্দিন শিকদার ও তার সহকর্মী শহিদুলের হাতে। যদিও এই চক্রের কাজই এমন যে,তারা সিভিল পোশাখে চলতেন একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার মতই।

অভিযোগ অনুযায়ী, নিজেদেরকে কর্মকর্তা ও সহকারী পোস্ট মাস্টার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীর সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করতেন তারা। মেহেরুন্নেছা জানান, তিনি ব্যাংকে যেতে জানতেন না, আর পর্দাশীল হওয়ায় সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে লেনদেনও করতেন না। আলাউদ্দিন ও শহিদুলই বারবার আশ্বস্ত করেন, তার নামে একাউন্ট খোলা হয়েছে, টাকা নিরাপদে জমা থাকছে।

“তারা আমার ছেলে-মেয়ের নামেও একাউন্ট খুলে দিয়েছে বলে বলত। আমি বিশ্বাস করেছি। এত টাকা হাতে হাতে দিতে আমারও ভয় হতো। কিন্তু তারা বলত, আমরাই সব করি,” বলেন মেহেরুন্নেছা।

প্রমাণ হিসেবে তার কাছে রয়েছে আলাউদ্দিন শিকদারের হাতের লেখা হিসাবের কাগজ এবং ভয়েস রেকর্ড যেখানে অভিযোগকারী দাবি করেন, আলাউদ্দিন টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন সাক্ষীদের সামনে। ভুক্তভোগীর ছেলে ইব্রাহিম মুন ও মেয়ে শারীকা মোস্তফাও ঘটনাটি সম্পর্কে জানেন এবং মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সংবাদকর্মী, মানবাধিকার কর্মীদের সামনেই আলাউদ্দিনের ফোনের কথা লাউড স্পিকারে সরাসরি শোনান ভুক্তভোগী।

এ নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব চলছে এবং ডাক বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তিনজনের নামে কোনো একাউন্ট খোলা হয়েছে কি না ও করলে তার স্টেটমেন্ট চেয়ে আবেদন দেওয়া হয়েছে ভুক্তভোগীর । লক্ষ্য একটাই: আটষট্টি লাখ টাকা কোথায় গেল, কিভাবে গেল এবং কাদের হাতে গেল তা সরকারি নথিতে পরিষ্কার করা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায়ই দেখা যায় বিভিন্ন সরকারি অফিসে কর্মরত ব্যক্তি পরিচয়ের সুবিধা নিয়ে অসহায় মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়। “বিশ্বাসের দেয়ালটাই ভেঙে গেছে,” বললেন এক প্রতিবেশী।

বরিশাল ডাক বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত আলাউদ্দিন শিকদার মেহেরুন্নেছাকে ফোন দিয়ে অনুরোধ করেন বিষয়টি চেপে যেতে আগামী রবিবার সব টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়ে।

মেহেরুন্নেছা শুধু টাকা চান না, চান বিচার। “টাকা গেছে, কিন্তু ইজ্জতও গেছে। আমাকে বোকা ভাবা হয়েছে। আল্লাহর কাছে দোয়া করছি সত্য যেন প্রকাশ পায়,” বলেন তিনি।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আলাউদ্দিন টাকা,বই কিছুই ফেরত দেননি ভুক্তভোগীকে।

 

বরিশাল কর কমিশনারের কার্যালয়ে ৩ ভাইয়ের রাজ্যের অঘোষিত রাজা।বরিশালের সাবেক বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজ কর কর্মকর্তা নেফাউল ইসলাম সরকারের দোসর মোঃ রতন মোল্লা।স্টেনো টাইপিস্ট পদে কর্মরত।তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী হলেও নিজ স্বার্থ আদায়ে কর কমানো -বাড়ানোসহ তদবির ও সুপারিশের মাধ্যমে করের যাবতীয় কার্য্যক্রম সম্পন্ন করেন।এক সময়ের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মচারী কর বিভাগে স্টেনো টাইপিস্ট পদে চাকুরী লাভের পরেই ভাগ্য খুলে যায়। এখন তিনি অসংখ্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক,বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার এফডিআর, কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র,জায়গা-জমি,বহুতল ভবনের মালিক।আলাদিনের চেরাগও যেন হার মানিয়েছে রতন মোল্লার কাছে।এখন তিনি একজন ধনকুব।সহায়-সম্পদে ছুয়েঁছেন পাহাড়।

রতন মোল্লার বিরুদ্ধে কর কমিশনার ও এনবিআরের চেয়ারম্যানের নিকট একাধিকবার অভিযোগ দেয়া হলেও রহস্যজনক কারনে নেয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা। ক্লিনিক,ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তারদের করের ফাইল আটকিয়ে জিম্মী করে অনৈতিকভাবে ঘুস আদায় করাই যেন রতন মোল্লার পেশা।তিনি কাউকে থোরাই কেয়ার করেন না।ঘুস আদায়ে বেপরোয়া । কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলার কারনে একজন প্রিয় কর্মচারীতে পরিনত হয়েছেন বরিশাল কর বিভাগে।একই কর্মস্থলে সার্কেল -২ ও সার্কেল -৮ এ রয়েছেন ১০ বছর।সকলের বদলী হলেও রতন যেন কর ভবনের স্থায়ী কর্মচারী।তার বদলী না হওয়ায় কর বিভাগের সকলেই বিস্মিত।

কে এই রতন মোল্লা :

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বরিশাল কর কমিশনারের কার্যালয় সার্কেল-৮ এ স্টোনো পদে মোঃ রতন মোল্লা চাকুরী নেয়ার পূর্বে বরিশাল নগরীর সদর রোড সংলগ্ন বাটার গল্লির একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকুরী করতেন। এ সময় তিনি জমির দালালিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। কর বিভাগে চাকুরী হবার পরও পূর্বের অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। বরিশাল পূর্ব বগুড়া রোড ‘সাউথ ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিসেস’ নামক প্রতিষ্ঠানে শেয়ার রয়েছে।

যেভাবে জড়িয়েছে দুর্নীতিতে :

রতন মোল্লা।স্টোনো টাইপিস্ট পদে থাকায় অফিসের নির্দেশে তার দায়িত্ব বিভিন্ন ক্লিনিক,ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ ডাক্তারদের কর এর তালিকা করার। তালিকা অনুযায়ী রতন মোল্লা সকল ডায়াগনস্টিক ,ক্লিনিক থেকে সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন। বরিশালের ছোট-বড় ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তারদের আয়ের অনুকূলে কর দেয়ার সঠিক তালিকা করেন না। অফিসের বড় বড় ফাইলের ট্রাক্স কমানো, অডিটের কথা বলে ব্যবসায়ীদের হয়রানী, কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বদলি বাণিজ্য করাই যেন তার পেশা । বরিশালে কর অফিসে রতনকে অর্থ দিলে নিয়মের কাজ অনিয়মে হয়, আবার অনিয়মের কাজ নিয়মে হয়। দীর্ঘদিন ধরে একতরফাভাবে এ সব কার্যক্রম করে আসছেন রতন মোল্লা। একাধিক স্থানে ক্রয় করেছেন জমি, হয়েছেন ভবন মালিক।

রতন মোল্লার যত সহায় সম্পদ :

কর অফিসে তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী হয়েও রতন মোল্লার সম্পত্তি আকাঁশছোঁয়া।তিনি বরিশাল নগরীর সাউথ ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিসেস’ নামক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার মালিক,গ্রামের বাড়ি চরফ্যাশনে ৫ একর জায়গা ক্রয় করেছেন। বরিশাল নগরীর নবগ্রাম রোডে ২ কোটি টাকা দিয়ে জায়গা ক্রয় করেছেন। সেখানে ৫ তলা ভবন নির্মাণাধীন। এছাড়া চরফ্যাশন শহরে একটি দ্বিতল ভবনের কাজ নির্মাণাধীন। রতন মোল্লা সার্কেল -২ ও সার্কেল-৮ এই দুই সার্কেলে কর্মরত থাকাকালিন কমপক্ষে ২৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন । যার বড় অংশ অফিসারদের দিয়ে বাকি অংশ নিজে নিয়েছেন। তিনি তার শ্বশুর বাড়ি ভোলায় শ্বশুর এবং শ্বাশুড়ির নামে ১ কোটি টাকায় ৩০ শতাংশ জায়গা ক্রয় করেছেন। অজপাড়াগায়ের কৃষক বাবার সন্তান স্টেনো টাইপিস্ট রতন মোল্লার চালচলন যেন মস্তবড় অফিসার। বরিশাল সোনালী ব্যাংক এর কর্পোরেট শাখা, সিএন্ডবি রোড শাখা, জনতা ব্যাংক-বাংলা বাজার শাখায় তার ২ কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। নিজ ও স্ত্রীর নামে ১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে।কর আইনজীবীদের থেকে করদাতাদের ফাইল নিয়ে তিনি ঢিল করেন।কর বিভাগে তিনি একজন অঘোষিত কর আইনজীবীও।

রতন মোল্লার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ :

মোঃ রতন মোল্লা। একজন স্টেনো টাইপিস্ট, যিনি বর্তমানে সার্কেল-৮ কর অঞ্চল বরিশালে কর্মরত। ২০১৩ সালে নিয়োগের পর থেকে তিনি একমাত্র স্টেনো-টাইপিস্ট যিনি বরিশালের সার্কেল-২ এবং সার্কেল-৮ ব্যতীত অন্য কোনো সার্কেলে চাকুরি করেননি। এ দুই সার্কেলে কর্মরত থাকার কারণে সে সবসময় হেডকোয়ার্টার এডমিন ও টেকনিক্যাল এর সাথে থাকেন। যে কারণে তার দুই সার্কেল ব্যতিত অন্য কোথাও পদায়ন হয় না। এই দুই সার্কেলে বেশিরভাগ ফাইলই তার দখলে। এই দুই সার্কেলে বড় বড় করদাতাদের সাথে যোগসাজসে অনেক ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া ফাইল গায়েব করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে । বড় বড় দাবি নিস্পত্তি করেন বড় অংকের ঘুস নিয়ে। বিভিন্ন ডাক্তারদের ফাইল অডিটের ভয় দেখিয়ে তিনি নিয়মিত হারে চাঁদাবাজি করছেন। ডাক্তাররা সংশ্লিষ্ট সার্কেলের অফিসারের নাম না জানলেও স্টেনো টাইপিস্ট রতন মোল্লার নাম মুখস্থ।এ বিষয়ে বরিশালের কর আইনজীবীরা একাধিকবার মৌখিক ও লিখিতভাবে কর কমিশনারকে অবগত করানোর পরেও কোন এক অদৃশ্য কারণে তিনি বহাল তবিয়তে থেকে যান বলে একাধিক আইনজীবী জানিয়েছে।

সম্প্রতি হেমায়েত উদ্দিন নামে একজন এনবিআরের চেয়ারম্যানের নিকট রতন মোল্লার দুর্নীতি ও অনিয়মের ব্যাপারে লিখিত আবেদন করেছেন।আবেদনে তার ভয়ংকর দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়।আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বরিশালের বেশিরভাগ ডাক্তারদের ফাইল করেন মাহমুদুর রহমান তপু নামক একজন এ্যাডভোকেট। তার বোনের বিবাহে সহযোগিতা করে রতন মোল্লা তার খুব কাছের লোক হয়ে গেছেন। তপু এবং রতন মোল্লা যোগসাজসে
বেশিরভাগ ডাক্তারদেরকেই বিপদগ্রস্থ করেন। কোনো কোনো ডাক্তারদের অফিসে ডেকে বড় অঙ্কের ঘুসের বিনিময়ে দফারফা করেন। এক্ষেত্রে রাজস্বের পরিবর্তে সবটাই তাদের নিজস্ব। লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়,তদন্ত করলেই যার সত্যতা পাওয়া যাবে। রতন মোল্লার ক্ষমতার প্রভাবে তার ভাই নাইটগার্ড ইব্রাহিম দীর্ঘদিন যাবৎ সার্কেল-১৬ লালমোহনে কর্মরত। তার আরেক ভাই লিটন মোল্লা নোটিশ সার্ভার, কর সার্কেল-১৯, গলাচিপায়।

রতন মোল্লা ও তার ভাই ইব্রাহিম মোল্লা, লিটন মোল্লাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি -অনিয়মের ব্যাপারে ২০২৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন বরিশাল নগরীর বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা মোঃ আতাহার উদ্দিন।এছাড়া  রতন মোল্লার বিরুদ্ধে কর আইনজীবীগন রেজুলেশন করে অভিযোগ দিয়েছিলেন কর কমিশনারের নিকট।সর্বশেষ চলতি বছরের ১০ আগষ্ট এনবিআরের চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি।

সূত্র : বরিশাল খবর

 

 

বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের কুতুবপুর ফাজিল মাদ্রাসায় প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে দাতা সদস্যের ছেলের বউকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ নিজাম উদ্দিন আকনের যোগসাজশে দাতা সদস্য আব্বাস মৃধার ছেলের বউ আল্পনা আক্তারকে নিয়োগ দিতে দুই লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন ফাঁস করেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও ডিজির প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।

পরীক্ষার্থী তামান্না ও সাবিনা আক্তার অভিযোগ করেছেন, প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে সাজানো নিয়োগ পরীক্ষায় আল্পনাকে চাকরি দেওয়া হয়। তাঁরা জানান, অধ্যক্ষ আল্পনাকে চাকরি দেওয়ার জন্য দাতা সদস্যের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁরা সোমবার মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, দুদক, বরগুনা জেলা প্রশাসক ও আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ১১ জন প্রার্থী আবেদন করলেও লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয় ৯ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অধ্যক্ষের ছেলে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রেদওয়ানুল ইসলাম আবির আকন, ভাগ্নে আরিফুর রহমান এবং দাতা সদস্য আব্বাস মৃধার ছেলের বউ আল্পনা আক্তার।

গত শনিবার ৩৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ অনুসারে, পরীক্ষার আগেই আল্পনার কাছে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ না করেই পরদিন মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং রবিবার আল্পনাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা বলেন, এটা একটি সাজানো নিয়োগ বোর্ড। অধ্যক্ষের ছেলে, ভাগ্নে ও দাতা সদস্যের ছেলের বউ—এই তিনজনই উত্তীর্ণ হয়েছেন। এতে অনিয়ম হয়েছে, পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নিতে হবে।

অধ্যক্ষ মাওলানা নিজাম উদ্দিন আকন বলেন, আল্পনা নামের একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তবে তিনি দাতা সদস্যের ছেলের বউ কি না, তা আমি জানি না। আমার ছেলে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, কিন্তু সবই বিধি মোতাবেক হয়েছে।

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গুলিশাখালী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মোঃ জিয়াদুল কবির বলেন, লিখিত পরীক্ষায় আবির, আরিফুর রহমান ও আল্পনা উত্তীর্ণ হয়েছেন। আল্পনা প্রথম হওয়ায় তাকেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে অধ্যক্ষের ছেলে ও দাতা সদস্যের ছেলের বউ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কি নিয়মসঙ্গত—এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ মিথ্যা। সব কিছু নিয়ম মেনে হয়েছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

সাংবাদিকতার পবিত্র পেশাকে কলঙ্কিত করা তথাকথিত “চাঁদাবাজি, দালালি, নিয়ন্ত্রণ হুমকি ও অপসাংবাদিকতা” বন্ধে করণীয় নির্ধারণে পেশাদার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বিকাল ৪টায় বরিশাল সদর রোডে কিং ফিসার রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত হয়।এই সময় বরিশালের স্থানীয় প্রিন্ট পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং অনলাইন মাল্টিমিডিয়া বিভিন্ন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে দেশের পেশাদার সাংবাদিকদের ৩৫টি সংগঠন। সভায় অংশগ্রহণকারী সিনিয়র সাংবাদিক ও সম্পাদকরা বলেন, সংবাদপেশার মর্যাদা রক্ষা করতে হলে আত্মশুদ্ধি, নীতিনিষ্ঠা ও সংগঠনভিত্তিক শৃঙ্খলা জোরদার করতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, কিছু অসাধু ব্যক্তি সাংবাদিকতার পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, দালালি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এতে প্রকৃত সাংবাদিকরা যেমন অসম্মানিত হচ্ছেন, তেমনি জনগণের আস্থা হারাচ্ছে গণমাধ্যম খাত।

সভায় প্রস্তাব গৃহীত হয়— সাংবাদিকদের পেশাগত পরিচয় যাচাইয়ে কঠোর মানদণ্ড নির্ধারণ, ভুয়া সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা জোরদার,গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও নৈতিকতা উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ, প্রতিটি সাংবাদিক সংগঠনকে আত্মনিয়ন্ত্রণ নীতিমালা বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো।

সভায় বক্তারা সবাইকে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানান।

 

বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামকে অপহরণ করে মুক্তিপন না পেয়ে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় ৩ নং আসামি পঁচাকোড়ালীয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের কালাম তালুকদারের পুত্র সন্ত্রাসী তোতা মিয়াকে গ্রেফতার করেছে আমতলী থানা পুলিশ। পুলিশ জানায় তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে আমতলী ও তালতলী থানায় আরও ৫ টি মামলা চলমান রয়েছে।

জানা যায়, চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে অপহরণ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এটিএম কার্ডের ৮১ হাজার টাকা, ল্যাপটপ ও মোটরসাইকেল নিয়ে রাতভর নির্যাতন শেষে বিদ্যালয়ের কাছে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক মামলা দায়ের করলে মামলার ৩ নং পলাতক আসামি তোতা মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, শিক্ষক অপহরণ ও চাঁদাবাজি মামলার ৩ নং আসামিকে পটুয়াখালী থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চলছে।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুখ্যাত ড্রাগ মাফিয়া মেহেদী হাসান রায়হান ও তার সহযোগীদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) এর প্রধান কার্যালয়ের অপারেশনস্ ও গোয়েন্দা শাখা।

অধিদপ্তরের উপ—পরিচালক সোমেন মণ্ডল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, রায়হানের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে সুতা, টিভি, গাড়ির পার্টস ও গার্মেন্টস পণ্যের আড়ালে অভিনব কায়দায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশে মাদক পাচার করে আসছিল। বিদেশ থেকে আনা এসব অবৈধ মাদক দেশের বিভিন্ন স্থানে মজুদ রেখে সুবিধাজনক সময়ে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হতো।

২০২২ সালের ২২ জুলাই ভোরে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী পথে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের টিপুরদী এলাকায় র‍্যাব—১১ এর একটি অভিযানিক দল দুইটি কনটেইনার ভর্তি ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করে। উদ্ধার করা মদের আনুমানিক বাজারমূল্য ৪৬ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ সময় রায়হানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী, শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুল ইসলামের ছেলে আবদুল আহাদসহ ৩ জনকে আটক করা হয়।

পরে র‍্যাব সংবাদ সম্মেলনে জানায়, চক্রটি আইপি জালিয়াতি করে কুমিল্লা ও ঈশ্বরদী ইপিজেডের দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বিদেশি মদের চালান খালাস করে। এ ঘটনায় র‍্যাব—১১ এর উপ—পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় মেহেদী হাসান রায়হানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

তদন্ত সূত্রে জানা যায়, রায়হান একাধিক মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে রয়েছে—বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ এর ১৫(৩) ধারায় মামলা (চট্টগ্রাম সিএমপি, ২০২৩)

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬(১) সারনীর ১০(ক) ধারায় মামলা (হালিশহর থানা, ২০২২),দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪১৩ ধারায় মামলা (খুলশী থানা, ২০২১)

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর অধীন মামলা (বন্দর থানা, ২০২২্‌মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২)(৪) ধারায় মামলা (সোনারগাঁও থানা, ২০২৩)

এছাড়া দেশের বিভিন্ন থানায় রায়হানের বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে।

তবে আশ্চর্যজনকভাবে সব মামলায় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে জামিনে মুক্ত হন বলে অভিযোগ সূত্রের।

রায়হানের বাবা মো. আলী আহমেদ, মা রেখা বেগম। স্থানীয়রা জানান, একসময় আলী আহমেদ শহরের নতুন বাজারে কাটা কাপড়ের ছোট দোকান করতেন। পরে মালয়েশিয়া গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসে ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা শুরু করেন। কিছুদিনের মধ্যেই তার আর্থিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটে।
বর্তমানে তার রয়েছে—মহিলা কলেজ রোডে কোটি টাকার “পায়রা ইলেকট্রনিক্স শপ”,রহমতপুরে ৫ হাজার বর্গফুটের ৪ তলা ভবন (মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা),নীলগঞ্জ ইউনিয়নে একাধিক জমি,স্থানীয় সূত্রের দাবি, এই বিপুল সম্পদের উৎস তার ছেলে রায়হানের ড্রাগ ব্যবসার অবৈধ অর্থ।

জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে রায়হানের নামে সম্পদ অনুসন্ধানের চিঠি পাঠালে, আলী আহমেদ প্রভাব খাটিয়ে প্রতিবেদন পরিবর্তনের তদবির করেন। ফলে ছেলের নামে কোনো সম্পদ নেই—এমন প্রতিবেদন পাঠানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া

সম্মিলিত নাগরিক অধিকার জোট, কলাপাড়া শাখার সভাপতি সৈয়দ রেজাউল করিম রেজা বলেন,“আলী আহমেদ একসময় দর্জির কাজ করতেন। হঠাৎ তার এত সম্পদ, বহুতল বাড়ি—এটা অবিশ্বাস্য।”

কলাপাড়া বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজমুল আহসান বলেন,“তার কিছুই ছিল না। ছেলের ড্রাগ ব্যবসার টাকায় রাতারাতি ধনী হয়ে গেছে।”

কলাপাড়া থানার উপ—পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান জানান,“রায়হানের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে জীবননাশের হুমকির অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।”

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনার্স তৃতীয় বর্ষের ২০২১-২২ সেশনের ফরম পূরনের ফি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির প্রতিবাদে রোববার (২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বরিশাল সরকারি বজ্রমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা।

কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালীন সময় অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ফরম পূরনের ফি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির প্রতিবাদ করেন। পাশাপাশি ফরম পূরনের ফি কমানোর দাবি করেন।

অবিলম্বে তাদের দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলনেরও হুশিয়ারি দেওয়া হয়।

ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক কলেজ ছাত্র শাকিল আহমেদ ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (পহেলা নভেম্বর) দিবাগত রাত নয়টার দিকে বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের বোর্ড স্কুল ক্লাব ঘর নামকস্থানে।

ঢাকার মিরপুর কলেজের ছাত্র নিহত শাকিল আহমেদ বানারীপাড়া সদর উপজেলার মাছরং দরবেশ গেট এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রবের ছেলে ও লন্ডন প্রবাসী এটিএন বাংলার সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম শামিমের ছোট ভাই।

নিহতের স্বজন কাজী তমাল জানিয়েছেন-শাকিল আহমেদ মোটরসাইকেলযোগে রাত নয়টার দিকে বরিশাল থেকে বানারীপাড়া আসার পথিমধ্যে বোর্ড স্কুল ক্লাব ঘর নামকস্থানে পৌঁছলে বিপরীতদিক থেকে আসা বেপরোয়াগতির ট্রাকের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।