বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। তার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে এ আদেশ দেন।

সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে দ্বৈত নাগরিকত্ব ও হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলে সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে আপিল করেছিলেন একই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

এরপর গত ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে শুনানি শেষে তার প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এরপর হাইকোর্টে রিট করে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হাইকোর্টের দেওয়া সে রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর ফলে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাবেন না।

 

গত ২১ বছর ধরে পৌরসভা ভবনে চলছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) কার্যক্রম। বিভিন্ন সময়ে ভবনের কক্ষ এবং বাইরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে কার্যক্রমে গতি আনার চেষ্টা চালিয়েছেন মেয়ররা। এক যুগ আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা ভবনে বছরের পর বছর চলছে নগরবাসীর সেবা। তবে বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত দায়িত্ব নেওয়ার আগে এটি অপসারণ করে বহুতল ভবন তৈরির উদ্যোগ নেন। এজন্য সরকার থেকে প্রায় ১৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ নিতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন ঘোষণা করা হয়। ওই সময় দোতলা পৌর ভবনে শুরু হয় কার্যক্রম। মেয়রসহ ২৪টি দফতরের তিন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। এরপর ভবনটিকে তিনতলায় রূপ দেওয়া হয়েছিল।

তাতেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জায়গা দেওয়া এবং নগরবাসীকে সেবা দিতে সমস্যায় পড়তে হয়। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সাবেক মেয়র মরহুম শওকত হোসেন হিরন নগরীর তিন স্থানে পৃথক তিনটি অফিস স্থাপন করেন। কিন্তু নতুন অফিসে যেতে নগরবাসীর অনীহা থাকায় পরবর্তীতে ওসব অফিস সরিয়ে নেওয়া হয়।

এদিকে দিন দিন পৌর ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। পলেস্তারা খসে পড়তে থাকে। এজন্য ২০১১ সালে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ভবন কর্তৃপক্ষ। তৎকালীন মেয়র শওকত হোসেন হিরন জরাজীর্ণ ভবন থেকে উত্তরণে পৌর ভবনকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেন। ওই সময় ভবনের ভেতর-বাইরে চাকচিক্য আনা হয়।

কিন্তু সেই চাকচিক্য ধরে রাখা যায়নি। বৃষ্টির সময় ভবনের দেয়াল পানি চুষে নেওয়ায় পলেস্তারা খসে পড়ে। ফাটল আরও বড় আকার ধারণ করে। পিলারের রড বের হয়ে মরিচা ধরে। এমনকি ছাদের রড বের হয়ে মরিচা পড়ে। তার পরের মেয়রের সময়ে নিচতলা ও দোতলার চার কক্ষ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে। এ কারণে আমানতগঞ্জে সিটি করপোরেশনের দুটি শাখা এবং এনেক্স ভবনে প্ল্যান শাখা স্থানান্তর করা হয়। এ অবস্থায় নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে মেয়রের একান্ত সচিব রুবেল হাওলাদার বলেন, ‘বর্তমান মেয়র দায়িত্ব নেওয়ার আগেই জরাজীর্ণ ভবন সংস্কার করা হয়। ভবনের নিচ থেকে ছাদ পর্যন্ত জরাজীর্ণ ছিল। ছাদে বড় বড় গাছ ছিল। মেয়রের কক্ষের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এখন প্রতিটি কক্ষ সংস্কার করা হয়েছে। বর্তমান মেয়রের সময়েই বহুতল নগর ভবন তৈরি হবে। ভবনটি এমনভাবে নির্মিত হবে; যার সৌন্দর্য দেখতে ভিড় করবেন নগরবাসী।’

আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানালেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার। তিনি বলেন, ‘পুরো ভবনটি অপসারণ করে পাশে ও পেছনের সম্পূর্ণ জমি নিয়ে ১৫তলা ভবন নির্মিত হবে।

৪০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত হবে এটি। এতে চারটি লিফট এবং গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য দুটি স্থান করা হবে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৫ কোটি ৬৯ লাখ ১৪ হাজার টাকা। যার নকশা এবং উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। আশা করছি, বর্তমান মেয়রের সময় শেষ হওয়ার আগেই ভবনটি নির্মাণ হয়ে যাবে। কাজ শুরু হলে বিকল্প ভবন ভাড়া নিয়ে সেখানে করপোরেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এজন্য আরেকটি ভবন খুঁজছি আমরা।’

এরশাদ সরকারের আমলে ১৯৮৫ সালে বরিশালে পৌরসভা ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল। তিনি বলেন, ‘সাবেক এলজিইডিমন্ত্রী নাজিউর রহমান মঞ্জু ওই সময়কার পৌরসভার চেয়ারম্যান গোলাম মাওলাকে জমি দেখতে বলেছিলেন। গোলাম মাওলা পৌরসভার জিরো পয়েন্টে খাস জমি খুঁজে বের করেন। সেখানে পৌরসভা ভবন নির্মাণ করা হয়। সেই ভবনে এখনও চলছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম। নতুন ভবন আজও হয়নি।’

 

ঝালকাঠি শাহী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুনা খানমকে আদালত থেকে হত্যাচেষ্টা মামলা তুলে নেয়ার জন্য উপর্যপুরি হুমকি দিয়ে যাচ্ছে মামলার আসামী মো. আতিকুল ইসলাম ওরফে স্বপন (৩৮)। আতিক ও তার সহযোগীদের হুমকিতে দুটি নাবালক শিশু সন্তান নিয়ে রুনা খানম নিরাপত্তাহীনতায় আতংকে দিন কাটাচ্ছে। এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি করা হলেও হুমকি দাতা আসামী আতিককে আটক করা হয়নি।

গত ৪ এপ্রিল সকাল ১০ টার দিকে শহরের রোনাল্ডসে রোডের নিজ বাসা থেকে বাহের রোডে শাহী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে সেকশন কালিবাড়ির সামনে রুনা খানমের (৩০) পথরোধ করে তার পেটে ও বুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৬টি আঘাত করে গুরতর জখম করে তার সাবেক স্বামী আতিকুল ইসলাম। রক্তাক্ত জখম হয়ে শিক্ষিকা রুনা খানম রাস্তায় লুটিয়ে পরে।

স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার সময় সাধনার মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের এটিএসআই শাখাওয়াত হোসেন স্থানীয়দের সহযোগিতায় রক্তমাখা ছুরিসহ আতিকুল ইসলামকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়।

ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আহত রুনা খানমের বড় বোন রোজি খানম (৩৮) বাদী হয়ে আতিকুল ইসলামকে একমাত্র আসামী করে ঝালকাঠি থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করে। এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ৫ এপ্রিল ২০২৩ আতিকুল ইসলামকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রায় চারমাস জেল হাজতে থাকার পর হাইকোর্ট থেকে জামিন লাভ করে আতিক।

এদিকে এরই মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার এস আই মাসুদ রানা গত ৩০ জুন আতিককে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ঝালকাঠির আমলী আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে মামলাটি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করে। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. পারভেজ শাহরিয়ার আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন। সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পরার পর থেকেই আতিক এবং তার সহযোগিরা স্কুলে যাওয়া আসার পথে রুনা খানমকে নানা রকম হুমকি এবং রাস্তাঘাটে অনুসরন করা শুরু করে।

রুনা খানম অভিযোগ করে বলেন, “ জামিন পাওয়ার পর থেকে আতিক একাধিকবার আমাকে সরাসরি মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছে। আমার বাসায় লোক পাঠিয়ে আমার শিশু দুই সন্তানকে অপহরণের হুমকি দিয়ে বলেছে “ একবারতো জানে বেচেঁ গেছো, এবার আর জানে বাচঁতে পরবিনা ”।

রুনা খানম আরও বলেন, আতিকের ভয়ে শিশু সন্তানদের নিয়ে বাসার বাইরে বের হই না, শুধু ভয়ে ভয়ে স্কুলে যাই। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন বাতিলের আবেদন করেছি কোন লাভ হয়নি। আতিক হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছে তাই ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁর জামিন বাতিল করেনি। সর্বশেষ আতিক গত ২৪ নভেম্বর রুনা খানমকে স্কুলে যাওয়ার পথে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি প্রদান করে। ওই দিনই রুনা খানম ঝালকাঠি সদর থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নং ১০৩৩ তারিখ ২৪/১১/২০২৩।

উল্লেখ্য গত ২০২১ সালের ১৮ জুলাই তারিখ আতিক ও রুনার দ্বিতীয় বিয়ে হয় এবং পারিবারিক কলহের কারনে পরের বছর ২০২২ সালের ১৫ জুন বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। রুনার আগের ঘরের দুটি সন্তান আছে। আতিক পুনরায় রুনাকে নিয়ে ঘর সংসার করতে চাইলেও রুনা তা প্রত্যাখান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার জন্য রুনার ওপর হামলা চালায় আতিক।

অভিযুক্ত আতিকুল ইসলাম আতিক বলেন, জামিন পেয়ে আমি তাকে (রুনাকে) কোন হুমকি দেইনি, তবে লোক মারফত সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য অনুরোধ করেছি, এটা অপরাধের কিছু নয়। ঝালকাঠি সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান ইয়েন বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে আতিকুল ইসলাম আমাদের সমিতির সদস্য রুনা খানমকে কুপিয়ে হত্যার চেস্টা করেছে।

আমরা আতিকের কঠোর বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। এখন আবার হুমকি দিচ্ছে। প্রশাসন যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে আমরা আবার রাস্তায় আন্দোলন করবো। রুনা খানমের জিডির তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার এস.আই মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জিডির তদন্তের অনুমতি চেয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেছি। এখনও অনুমতি পাইনি।

 

 

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া রোগীর স্বজনকে মারধরের প্রতিবাদ করায় উল্টো প্রতিবাদকারী ববি শিক্ষার্থী রাজুর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ৫ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে হাসপাতালের পরিচালক বরাবর অভিযোগ দিতে তার রুমে গেলে ডা. মুহিত আহত রাজুকে প্রাণনাশের হুমকি দেন ও ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনায় জড়িত চিকিৎসকসহ অন্যান্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে হাসপাতালের পরিচালক এইচএম সাইফুল ইসলাম বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভূক্তভোগীর চার সহপাঠী। আহত শিক্ষার্থী রাজু ববির ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।
ঘটনার অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময় দায়িত্বরত চিকিৎসকরা খাবার খাচ্ছিলেন। তখন মৃত রোগীর স্বজন গিয়ে বলেন, ‘আমার রোগী মরে যাচ্ছে। আর আপনাদের ভাত খেতে হবে?’। এরপরই দুইপক্ষের তর্কাতর্কি শুরু হয়।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, শেবাচিমের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন গৌরনদীর রিজিয়া বেগম অসুস্থ হয়ে পরে। তখন ব্যক্তিগত কাজের অজুহাত দেখিয়ে চিকিৎসা প্রদানে অসম্মতি জানায়। পরে বিনাচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হলে রোগীর স্বজন ত্রিশ বছর বয়সী এক যুবক ডাক্তারের রুমে কথা বলতে যায়। এসময় আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় দায়িত্বরত চিকিৎসকরা হামলা চালায়।
এই ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন চিকিৎসক মুহিত। এই ঘটনা দেখতে পেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তামিম ইকবাল রাজু ও তার বন্ধু মুজাহিদ প্রতিবাদ করেন। এসময় রাজুকে ৫ জন চিকিৎসক আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় মারধর করে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ জানাতে হাসপাতালের পরিচালকের রুমে গেলে সেখানে ডা. মুহিত রাজুকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে অনুমতি ছাড়াই ভিডিও ধারণ করে। এরপর ববির শিক্ষার্থীরা মেডিসিন ওয়ার্ডে গেলে দায়িত্বরত ইন্টার্নি নারী চিকিৎসক অশ্রাব্য ভাষা প্রয়োগ করেন। তাই ঘটনার সময় ওই ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এই বিষয়ে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক এইচএম সাইফুল ইসলাম জানান, এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি, যা তদন্তাধীন। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাবো। তখন প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

 

পরিবারের ৩ সদস্য নিয়ে ৪৮৬ কিলোমিটার পথ যেতে লাখ টাকারও বেশি যাতায়াত বিল নিয়েছেন ঝালকাঠির সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামিম আহমেদ। এখানেই শেষ নয়, অচল জেনারেটর আর বসে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের বিপরীতেও তেল কিনে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

যোগদান করার পর থেকেই সদর হাসপাতালকে টাকা আয়ের মেশিন বানিয়েছেন আরএমও শামিম-এমনই আলোচনা এখন পুরো ঝালকাঠিজুড়ে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডা. শামিম। অনৈতিক সুবিধা নিতে ব্যর্থ হয়ে একটি চক্র এসব অপ-প্রচার চালাচ্ছে বলে দাবি তার।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বরাবর দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আরএমও ডা. শামিম চলতি বছরের ৭ মার্চ রংপুর থেকে ঝালকাঠিতে বদলি হন। ১১ মার্চ তিনি যোগদান করেন।

রংপুর থেকে ঝালকাঠি আসতে বদলি ভ্রমণ বিল বাবদ ১ লাখ ১০ হাজার ২শ টাকা খরচ দেখিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রংপুর সদর থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কপথে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৩৫শ টাকা।

এরপর ঢাকা হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (ডমেস্টিক) বিমান বিল দেখানো হয়েছে ১১ হাজার ৭শ টাকা ও ২৯ হাজার ২৫০ টাকা।

পরে বরিশাল বিমানবন্দরে বিমান বিল দেখানো হয়েছে ৯ হাজার টাকা ও ২২ হাজার ৫শ টাকা। সেখান থেকে ঝালকাঠি সদরে সড়কপথে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৩ হাজার টাকা। এছাড়া রংপুর সদর থেকে ঝালকাঠি পর্যন্ত মালামাল আনার ব্যয় দেখানো হয়েছে ৩১ হাজার ২৫০ টাকা।

গর্ভবতী বহনের ভুয়া ঠিকানা দেখিয়ে আরএমও নিজের ভ্রমণে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতি মাসে ২৫-৩০টি ভুয়া গর্ভবতী রোগী বহন দেখিয়ে অ্যাম্বুলেন্স জ্বালানির সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করছেন তিনি। এ ছাড়াও হাসপাতালের জেনারেটর মেরামতের চিঠি ইস্যু করে তিনিই আবার জেনারেটরের তেল ক্রয়ের ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।

ডা. শামিমের প্রায়ই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তিনি চলতি বছরের ১১ মার্চ যোগদান করে এ পর্যন্ত ৮০ দিন অবৈধ ছুটি ভোগ করেন। তিনি লাভবান না হওয়ায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারি ওষুধ সরবরাহ খাতের প্রায় ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ফেরত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

যথাসময়ে এ টাকার ওষুধ ক্রয়ে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারি সরবরাহের ওষুধ সংকটের কারণে বঞ্চিত রোগীরা। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস অনুষ্ঠানের খরচ দেখিয়ে ৬৫ হাজার টাকা বিল তুলেছেন তিনি। যদিও শোক দিবস অনুষ্ঠানে ৪টি সংগঠন (সিভিল সার্জন, সদর হাসপাতাল, বিএমএ, সাচিব) মিলে উদ্যাপন করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামিম আহমেদ বলেন, বদলির ভ্রমণ বিল সরকারি নিয়মেই নিয়েছি। অভিযোগে ১ লাখ ১০ হাজার ২শ টাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে আমি ব্যয়ভার নিয়েছি ৯৫ হাজার টাকা। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা। এ ব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, এমন অভিযোগের কোনো চিঠি আমার কাছে এখনো আসেনি। এলে তদন্ত করে দেখব। যদি প্রমাণ হয় তবে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বরিশালে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় জেলা প্রশাসকের দপ্তরের সামনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি নামফলকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরিশাল জেলা শাখার সহ-সভাপতি কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি এবং বরিশাল সিটি কপোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।

এ সময় বরিশাল জেলা আওয়ামী আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাড. লষ্কর নুরুল হক, বরিশাল মহানগর আওয়ামী যুবলীগ এর আহবায়ক মোঃনিজামুল ইসলাম নিজাম, যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খান মামুন, মেজবাহ উদ্দিন জুয়েল, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন বিসিসি’র ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবীর, ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ, ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক বাহারসহ বরিশাল সিটি করপোরেশন বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বৃন্দ ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ,বরিশাল মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, বরিশাল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য বৃন্দ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জোবায়ের আব্দুল্লাহ জিন্নাহ, বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগ এর সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন,বরিশাল কলেজ ছাত্রলীগ এর সাবেক সভাপতি আল-মামুন,বরিশাল সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহিদুর রহমান মাহাদ, বিএম কলেজ বাকসুর সাবেক নেতা ফয়সাল আহমেদ মুন্না, প্রিন্স সরদার, বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগ নেতা রেজানুর রহমান নিয়নসহ বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখার আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের উদ্যোগে বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত এর আয়োজন করা হয়েছে ।

 

মোঃ শাহীন আলম
তালতলী,প্রতিনিধিঃ

বরগুনার তালতলীতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজার তদারকি অভিযানে চার প্রতিষ্ঠানকে ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বাজার তদারকি অভিযান পরিচালনা করেন, জেলা জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাস। এ সময় উপজেলার উজ্জ্বল চত্বর এলাকার মুদি ব্যাবসায়ী শাহীন মিয়া পিয়াজের মূল্য বেশি রাখায় ৩ হাজার, গ্যাসের মূল্য বেশি রাখায় মিম স্টোরের সোবাহান মিয়াকে ৪ হাজার। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন না করায়
মায়ের দোয়া হোটেল ৩ হাজার ও রুচিতা হোটেল ৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এসময় তার সাথে ছিলেন প্রকিসিশন অফিসার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো.রফিকুল ইসলাম।

জেলা জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাস বলেন, প্রতিটা দোকানে মূল্য তালিকার চার্ট টানানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং সকল ক্রেতা ভাইদের অনুরোধ করবো কোন পণ্য ক্রয় করার সময় অবশ্যই পাকা রশিদ নিয়ে নিবেন। তিনি আরো বলেন,আমাদের অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হবে।

বরিশাল নগরীর ৩নং ওয়ার্ড গাওয়ারসার এলাকায় রাহাত খান এর বাড়ির সম্মুখে পাকা রাস্তায় অবস্থান করা কাউনিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছয় কেজি গাঁজা সহ একজনকে আটক করেছে।

সোমবার ১১ ডিসেম্বর সকাল সোয়া ৬টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গাঁজাবহনকারী মোঃ রমজান আলী (৫৪)কে অটক করে এসময় তার কাছ থেকে তিনকেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

মোঃ রমজান আলী বি-বাড়িয়া জেলার কুইয়াপানিয়া, কসবা থানা এলাকার মৃত্যুঃ জাহেদ মিয়ার ছেলে।

আজ সোমবার দুপুরে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যলয় থেকে এক মেইল বার্তায় তথ্য পাঠিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।এব্যাপারে আটক মোঃ রমজানের বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানায় মাদক দ্রব্য আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়ে বলে জানায়।

 

বরগুনার তালতলীতে বিয়ের দাবিতে প্রাইভেট শিক্ষকের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন এক কলেজছাত্রী (১৮)। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের তালুকদার পাড়া এলাকার প্রাইভেট শিক্ষক আল মামুনের বাড়িতে অনশনে বসেন ওই কলেজছাত্রী। তিনি একাদশ শ্রেণির ছাত্রী বলে জানা গেছে।

দাবি করে অনশনরত ওই কলেজছাত্রী বলেন, ‘৬ বছর আগে আল-মামুনের কাছে প্রাইভেট পড়ার সময় আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর আল-মামুন বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন সময় আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন।এখন বিয়ের করার কথা বললে তিনি টালবাহানা করছেন। এখন আমাকে বিয়ে না করলে নিজেকে শেষ করে ফেলব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে বিয়ে না করে অন্য মেয়েকে বিয়ের করার কথা রয়েছে। এজন্য আমি তার বাড়িতে এসে অনশন করছি। আমাকে রেখে অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে দিব না।’

এ বিষয়ে আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ না হলে তার বাবা আমির হোসেন বলেন, ‘ওই মেয়ে আমাদের বাড়িতে এসেছে। তাদের প্রেমের সম্পর্কের কথা আমরা জানি না। আমার ছেলের বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে গেছিলাম। ওই মেয়ের পরিবার ডেকে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।’ তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীকালে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পিরোজপুর থেকে পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ শফিউর রহমানকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার এ সংক্রান্ত একটি পত্র ঢাকা থেকে পিরোজপুরে এসে পৌঁছেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ শেখ মোস্তাফিজুর রহমান।

সূত্র জানায়, ঢাকা এসপিবিএন-২ কার্যালয় থেকে ২০২৩ সালের ৩ জুলাই মোহাম্মাদ শফিউর রহমান পিরোজপুরে পুলিশ সুপার পদে যোগদান করেন। তিনি পিরোজপুরে প্রায় ৫ মাস অবস্থানকালে কয়েকটি হত্যা মামলার ক্লু উদঘাটনসহ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অবিচল ছিলেন। ইসির অপর একটি দ্বায়িত্বশীল সূত্র মনে করে, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন এবং নির্বাচনের স্বার্থে’ এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রত্যাহার হওয়া কর্মকর্তাদের স্থলে নতুন কর্মকর্তাদেরকেও দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।