TT Ads

 

আসাদুজ্জামান শেখ |

সারা দেশে শহীদ শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যখন শোক ও ক্ষোভে উত্তাল জনমত, ঠিক সেই সময়ে বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা–কড়াপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশ উপেক্ষা করে নতুন অফিস উদ্বোধনের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন এক থেকে দেড়শ লোকের অংশগ্রহণে খিচুড়ি পার্টির আয়োজন করা হয়, যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, দেশের এমন সংকটময় মুহূর্তে আনন্দ আয়োজন করে তারা শহীদ হাদির আত্মার মাগফিরাত ও দোষীদের বিচারের দাবির প্রতি চরম অবহেলা প্রদর্শন করেছেন।

এই আয়োজনে ইউপি সদস্য নাঈমকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন সোহাগ কাজী, মানিক হাওলাদার, ফিরোজ তালুকদার, বাদু সোলনা, কাউসার খলিফা, জাহাঙ্গীর মল্লিকসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি।

এ বিষয়ে মানিক হাওলাদারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে অফিস উদ্বোধনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে তিনি বলেন, “আমি শুনেছি মিলাদ মাহফিল হবে।” তিনি আরও স্বীকার করেন যে এক থেকে দুইশ লোকের জন্য খিচুড়ির আয়োজন করা হয়েছে। এটি কিসের আয়োজন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মিলাদের জন্যই এই ব্যবস্থা।”

অন্যদিকে ইউপি সদস্য নাঈম বলেন, “বিএনপির একটি অফিস উদ্বোধনের কথা ছিল, যেখানে সাবেক চেয়ারম্যান আমিন ভাইয়ের ছোট ভাই মিলন ভাই উপস্থিত থাকার কথা ছিল।” তবে তিনি দাবি করেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না এবং সবকিছু মানিক হাওলাদার ও সোহাগসহ ১০–১২ জন ব্যক্তি আয়োজন করেছেন। প্রশ্ন করা হলে কেন হাই কমান্ডের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করা হলো—এ বিষয়ে তিনি কোনো স্পষ্ট জবাব না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি মাদারীপুরে ছিলেন, যদিও স্থানীয়দের মতে তিনি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, এই আয়োজনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের একাধিক ব্যক্তি অর্থসহায়তা করেছেন। এ সংক্রান্ত তথ্য ও মুঠোফোনের কল রেকর্ডিং প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তারা জানান, “আমরা বর্তমানে শহীদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে ব্যস্ত। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে কোনো অনুষ্ঠান বা অফিস উদ্বোধনের প্রশ্নই আসে না।” তারা আরও বলেন, “যদি দলের কেউ এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, তারা বিএনপির আদর্শের প্রতিনিধি নন। আমরা ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে রয়েছি, যাতে হাদির পরিবার ন্যায়বিচার পায়।”

ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে নজর রাখছেন রাজনৈতিক মহল।

TT Ads