#

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঘর ছেড়ে যাওয়া বিদ্রোহী স্ত্রীর সাথে ফেসবুক লাইভে নিজের ভুল স্বীকার করে অনুতপ্ত এবং ফিরে আসার আকুতি জানিয়ে সায় না পাওয়ায় জ্যোতি নামক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শনিবার দিবাগত রাত ২টায় রাগ-অনুরাগের অর্ধঘণ্টার স্বামী-স্ত্রীর এই বাতচিত শেষে ওই যুবককে মৃত অবস্থায় ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।

#

কাউনিয়া জানুকিসিংহ সড়কের মুন্সিবাড়ির এই ট্রাজেডিময় ঘটনা ওই রাতেই জানাজানি হয়ে যাওয়ার পর পুলিশ সকালে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে।

এক সময়কার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা প্রয়াত কাশেম মুন্সির পুত্র ৪৫ উর্ধ্ব যুবক জ্যোতি পেশায় কসমেটিক সরবরাহকারী। সেই সূত্রে ঢাকায় বসবাস অবস্থায় পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে সেখানকার এক পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে সন্তানসহ বাগিয়ে এনে বিবাহ করে। এর পর থেকেই এই দম্পতি কাউনিয়ার নিজ বাড়িতে বসবাস করলেও তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না, প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। পড়শীরা জানায়, অতি সম্প্রতি অভিমান কারে স্ত্রী সন্তানসহ ঢাকায় বাবার বাড়িতে চলে যায়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতে জ্যোতি ঘরে ফিরে একাকী অবস্থান করার একপর্যায় ফেসবুক ভিডিওকলে স্ত্রীর অভিমান ভাঙাতে প্রায় অর্ধঘণ্টা ডাক-চিৎকার দিয়ে কথা বলতে থাকেন। তার অনুরোধ ছিলো বরিশালে ফিরে আসার।

অনেকটা অভিনয়ের আদলে এ সময় জ্যোতি গলায় ফাঁস দিয়ে ফ্যানের সাথে টাঙিয়ে স্ত্রীকে নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়ার স্পর্শকাতর আলাপচারিতায় তাকে ফিরে আসার অনুরোধ রেখে চলছিলো। জ্যোতি তার নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ দৃশ্য লাইভ আকারে তখন প্রকাশ ও করে। কিন্তু জ্যোতির স্ত্রীর ধারনা ছিলো এ ধরনের কাহিনীর ইতিপূর্বে আশ্রয় নিয়ে তার মন দুর্বল করেছিল। এবারও বুঝি সেই কৌশল নিয়েছে। একপর্যায় জ্যোতির মানসিকতা মৃত্যুকেই আলিঙ্গন করতে যাচ্ছে, অনুমান করে দ্রুত তিনি জ্যোতির পার্শ্ববর্তী নিকট আত্মীদের বিষয়টি জানায়। স্বজনরা খবর পেয়ে ডাকাডাকি শুরু করলে ততক্ষণে যুবক সত্যিই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে। ডাকাডাকিতে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে দেখে ঘরের ফ্যানের সাথে জ্যোতির মৃতদেহ ঝুলছে।

নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে এই প্রতিবেদককে বলেন, জ্যোতির এটা দ্বিতীয় বিবাহ। এর আগে ঢাকায় থাকা অবস্থায় প্রভাবশালী একটি পরিবারের এক মেয়েকে বছর আট এক পূর্বে বিবাহ করেছিল। ওই ঘরে তার একটি কণ্যাসন্তান রয়েছে। সেই অবস্থায় প্রথমা স্ত্রীর অগোচরে পরকীয়া প্রেম অত:পর বিয়ে করলে তার ঢাকায় থাকা দায় হয়ে পড়ে। প্রথমা স্ত্রী সেচ্ছায় ডিভোর্স দিয়ে তার বিরুদ্ধে অবস্থান অন্যদিকে জনৈক এক পুলিশ সদস্য তার বউ বাগিয়ে নেওয়ায় তিনিও জ্যোতির পিছু নেয়। পরিস্থিতিগত কারণে এই যুবক দ্বিতীয় ও সেই ঘরের এক সন্তান নিজ এলাকা বরিশালে এসে স্থায়ী বসবাস শুরু করে। কিন্তু প্রেমের বিবাহে সুখের বদলে বিরহে প্রায়শই এই দম্পতির মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো।

গত শনিবার গভীর রাতে শেষবারের মতো ফেসবুক লাইভে এসে সিনেমা স্টাইলে স্ত্রীকে ঘরে ফিরে আনার অভিনয়ের শেষান্তে সত্যিই মৃত্যুকে বেছে নিলেন, হয়তো স্বদিচ্ছায় নয়, অভিনয় করতে গিয়ে গলায় ফাঁস এটে মারা গেলেন কিনা তা নিয়ে চলছে এলাকায় কানাঘুষা। পুলিশ রোববার সকালে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত শেষে গতকালই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। বিকালে তার দাফন কাজ সম্পন্ন হয়। কিন্তু দুই স্ত্রীর কেউ মৃতদেহ দেখতে আসেনি।’

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here