বাস শ্রমিককে মারধরের অভিযোগে বরিশালের নথুল্লাবাদ ও রুপাতলী বাস টার্মিনালে সড়ক অবরোধ করেছেন মালিক ও শ্রমিকরা। বন্ধ হয়ে গেছে বরিশাল থেকে সব রুটের বাস চলাচল।
মারধরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ চলবে বলে জানিয়েছেন বাস মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে বিসিকের শিল্প কারখানার শ্রমিকরা সোহাগ হাওলাদার নামে এক যুবককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে।
এক নারী শ্রমিককে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদে ওই যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দের কথা জানিয়েছেন ফরচুন গ্রুপের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
এ ঘটনার পর সন্ধ্যা ৭টা থেকে বরিশালের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও রুপাতলী বাস টার্মিনালের মালিক শ্রমিকরা এক যোগে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। একইসঙ্গে সড়ক অবরোধ করেন তারা।
এছাড়া মারধরের শিকার সোহাগ আওয়ামী লীগ কর্মী হওয়ায় বরিশালের কাউনিয়া থানা ঘেরাও করেছে তার দলের কর্মীরা।
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে জানান, নগরীর বিসিক রোডের একটি ফ্যাক্টরির লোকজন পরিবহন শ্রমিক সোহাগ হাওলাদারকে দুপুরে আটক করে মারধর করে। একপর্যায়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে শ্রমিকরা থানা ঘেরাও করলে পুলিশ সোহাগকে ছেড়ে দেয়। তবে ওই শ্রমিককে মারধরের প্রতিবাদে জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলার আবেদন করা হলে পুলিশ মামলা নিতে চায়নি বলে দাবি করা হয়। মামলা নেওয়ার দাবিতে থানা ঘেরাও ও সড়ক অবরোধ করা হয়।
এদিকে টেম্পু, মাহিন্দ্রা ও থ্রি হুইলার মালিক শ্রমিক সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন মোল্লা লিটন জানান, মামলা না নেওয়া এবং মারধরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ অব্যাহত থাকবে।
বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ হোসেন জানান, তাদের শ্রমিকের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। সে আহত হয়েছে। এ ঘটনার আইনানুগ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।
এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা করা যাত্রীরা আটকা পড়েছেন বাস টার্মিনালে। সড়কের দুপাশে গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়েছে।
রুপাতলী মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন জানান, শ্রমিককে মারধর করায় আমরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
ফরচুন গ্রুপের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান দাবি করেন, তার এক নারী কর্মীকে উত্ত্যক্ত করেছিল সোহাগ নামে এক যুবক। তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় ফরচুন গ্রুপের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানমহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আলোচনা চলছে, অল্প সময়ের মধ্যে বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।