#

বরিশালের বানারীপাড়ায় তিন সন্তানের জননীকে ধর্ষণের ঘটনায় সাক্ষীর স্থলে ইউপি চেয়ারম্যান খিজির সরদারের ভাই সেলিম সরদারকে আসামি করায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

#

১০ জানুয়ারি ভিকটিম (৪৫) বাদী হয়ে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে এ মামলা দায়ের করার পর এলাকায় এ তোলপাড় শুরু হয়।

উপজেলার চাখার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খিজির সরদারের ভাই সেলিম সরদারকে সাক্ষীর স্থলে ভুলবশত ৩নং আসামি করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ভিকটিমকে আটকে রাখা এবং মীমাংসা করে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

বাদী (ভিকটিম) ওই মামলায় তার ছোট দেবরের শ্বশুর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খিজির সরদারের ছোট ভাই সেলিম সরদারকে সাক্ষী করতে চাইলেও ভুলবশত ৩নং আসামি করা হয়েছে বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন। তিনি এ ব্যাপারে ৮ মার্চ আদালতে পরবর্তী ধার্য তারিখ লিখিত আবেদন করবেন বলেও যুগান্তরকে জানান।

এ ব্যাপারে ওই মামলার বাদী (ভিকটিম) ও তার স্বামী যুগান্তরকে জানান, ২৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় উত্তর চাখার গ্রামের মাদকাসক্ত আন্টু হাওলাদার (৪৫) পার্শ্ববর্তী ভিকটিমের বাড়িতে একা পেয়ে তার হাত-মুখ বেধে ধর্ষণ করে। এ সময় ভিকটিমের স্বামী চাখার বাজার থেকে বাড়ি ফিরে ধর্ষক আন্টু হাওলাদারকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে।

পরে ভিকটিমের স্বামী মোবাইল ফোনে তার ছোট ভাইয়ের চাচা শ্বশুর সেলিম সরদারকে ঘটনা স্থলে ডেকে আনে। এদিকে সেলিম সরদার ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর তাদের ওপর হামলা চালায় আন্টু হাওলাদারের ভাই সান্টু হাওলাদার, সেলিম হাওলাদার ও তার ছেলে মাইনুল হাওলাদার। পরে সেখানে আন্টু হাওলাদারকে ঘটনাস্থল থেকে ছাড়িয়ে নেয়। পরে ভিকটিমের পরিবার এ ঘটনাটি সেলিম সরদারের বড় ভাই ইউপি চেয়ারম্যান খিজির সরদারকে জানান।

এ সময় ধর্ষণের শিকার ওই নারীর স্বামী তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে রাজি না হলে ইউপি চেয়ারম্যান খিজির সরদারের সামনে তিনি আত্মহত্যা করার ঘোষণা দেন। ইউপি চেয়ারম্যান খিজির সরদার তাকে সান্ত করার পাশাপাশি তাদেরকে ধর্ষকের বিরুদ্ধে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন।

এ সময় পুত্রবধূকে (ভিকটিম) বাড়ি নিয়ে যান শ্বশুর এবং সেখানে তার ভাতিজা পুলিশ সদস্যর ঘরে রাখেন। পরে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হলে পুনরায় তারা ঘটনাস্থলের নিজ বাড়িতে ফিরে যান।

এ ঘটনার ১৭ দিন পর ১০ জানুয়ারি ভিকটিম বাদী হয়ে ধর্ষক আন্টু হাওলাদার, ভাই সেলিম হাওলাদার ও ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাই সেলিম সরদারকে আসামি করে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খিজির সরদারকে সরাসরি আসামি না করা হলেও আর্জিতে তার বিরুদ্ধে ভিকটিমকে আটকে রাখা ও মীমাংসা করে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খিজির সরদার  জানান, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলের প্রার্থীরা তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মামলার আর্জিতে তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনতে ষড়যন্ত্র করছেন।

তিনি  জানান, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ভিকটিমকে আইনি সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করেছি। তিনি ওই মামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

এদিকে আদালতে দায়ের করা ওই মামলাটি বরিশাল ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দিন  জানিয়েছেন।

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here