বরিশাল নগরীতে পুলিশ সার্জেন্টের হামলায় দুই সংবাদকর্মী গুরুত্বর আহত হয়েছেন।
শনিবার বিকেলে নগরীর আমতলা মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও বাস শ্রমিকদের আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করার উদ্দেশ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয় দৈনিক আজকের তালাশ এর প্রতিবেদক ফাইজুল ইসলাম ও শিক্ষণবিশ প্রতিবেদক হাসিবুল ইসলাম।
তারা আমতলার মোড় এলাকায় পৌঁছালে সেখানে দায়িত্বরত সার্জেন্ট কাওছার হামিদ তাদের রুপাতলী এলাকায় যেতে বাঁধা দেয়।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে যাওয়ার কথা জানালে ওই দুই সংবাদকর্মীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন সার্জেন্ট কাওছার হামিদ।
পরে কাওছার হামিদ সংবাদকর্মীদের গাড়ির কাগজপত্র থাকা স্বত্তেও গাড়ির চাবি নিয়ে যায়, তখন ওই দুই সংবাদকর্মী গাড়ির চাবি নেয়ার কারন জানতে চাইলে সংবাদকর্মীদের মারতে শুরু করেন।
এক পর্যায়ে ওই সার্জেন্ট আমতলার মোড় পুলিশ বক্সে সংবাদকর্মী ফাইজুল ইসলাম ও হাসিবুল ইসলামকে নিয়ে বেধরক মারধর করেন।
এ ঘটনা জানতে পেরে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরত্বর আহত অবস্থায় ফাইজুল ইসলামকে উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বর্তমানে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণের ব্যবস্থা চলছে বলে জানায় দৈনিক আজকের তালাশ কর্তৃপক্ষ।
গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই নাটকীয়তা জন্ম দেয় সার্জেন্ট কাওছার হামিদ। নিজেকে বাঁচাতে উল্টো নিজের পোষাক ছিঁড়ে ওই দুই সংবাদকর্মীর উপর দোষ চাপাতে শুরু করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া সাংবাদিকদের সাথেও ক্ষিপ্ত হয়ে সার্জেন্ট কাওছার হামিদ বলতে থাকেন, ‘যত বড় সাংবাদিক হউক না কেন ওগো পক্ষে যে সাফাই গাইবে আজকে তারই খবর আছে।
গুরুত্বর আহত সংবাদকর্মী ফাইজুল ইসলাম সহকর্মীদের জানায়, আমরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমতলার মোড়ে পৌঁছালে সার্জেন্ট কাওছার আমাদের গাড়ি আটকে দেয়।
এসময় সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ার কথা বললে সার্জেন্ট কাওছার ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এ পর্যায়ে গাড়ির চাবি নিয়ে যায়।
পরে আমরা গাড়ির চাবি নেয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি অকথ্য ভাষায় গালাগালি দিয়ে আমাদের মারতে মারতে পুলিশ বক্সের ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানে লাইট বন্ধ করে আমাদের দুজনকে বেধরক মারধর করেন।
এক পর্যায়ে কাওছার তার হাতে থাকা ওয়ারলেস দিয়ে আমার মাথায় বেশ কয়েকবার আঘাত করে। আহত শিক্ষনবিশ সংবাদকর্মী হাসিব জানায়, আমাদের পুলিশ বক্সে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে চর-থাপ্পর ও লাথি দেয়ার পাশাপাশি আমার অন্ডকোষ চেপে ধরে।
আমি সার্জেন্ট কাওছারের কাছে আকুতি-মিনতি করার পরেও সে আমাকে মারতে থাকে আর বলতে থাকে দেখি তোগো সাংবাদিকরা তোগে কিভাবে রক্ষা করে।
অন্যদিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা উপস্থিত হলেই নাটকীয়তার মাধ্যমে নিজেকে বাঁচাতে নিজের উপর হামলার ঘটনা সাজিয়ে শিক্ষণবিশ সংবাদকর্মী হাসিবকে চিকিৎসা না দিয়ে উল্টো কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করে সার্জেন্ট কাওছার হামিদ।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সার্জেন্ট কাওছার হামিদের মারধরে গুরুত্বর আহত সংবাদকর্মী হাসিবকে কোন চিকিৎসা না দিয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় তিব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বরিশালের সাংবাদিক মহল।