TT Ads

গ্রাহকের সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বরিশাল শাখার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় করা হয়েছে পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি। অভিযোগে সঞ্চয়পত্রের ৬টি বইয়ের বিপরীতে জমা ও লভাংশ মিলিয়ে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনেছেন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা নিগার নারিছা। এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযোগকারী বহু আগেই তার সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে টাকা নিয়ে গেছেন। তারপরও কেন তিনি এই অভিযোগ করছেন বুঝতে পারছি না।

ষাটোর্র্ধ্ব নিগার নারিছা জানান, ১০-১২ বছর আগে পৃথক পৃথক ৬টি বইয়ে তিনি আলাদা করে মোট ৬ লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনেন বাংলাদেশ ব্যাংকের বরিশাল শাখা থেকে। অসুস্থতার কারণে বেশ কিছুদিন তিনি মুনাফা নিতে পারেননি। সুস্থ হয়ে মুনাফা নেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যাংকে যেতে চাইলেও সঞ্চয়ের বইগুলো খুঁজে পাননি। এই ঘটনায় তিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন। কিছুদিন পর তার মনে পড়ে সর্বশেষ মুনাফা তোলার সময় তিনি সঞ্চয়ের বইগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের বরিশাল শাখাতেই রেখে এসেছেন। বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অবসরপ্রাপ্ত এই স্কুল শিক্ষিকা বলেন, ব্যাংকে মুনাফা তুলতে গেলে সঞ্চয় বিভাগের কর্মকর্তারা বইগুলো নিয়ে নেয়। মুনাফা দেওয়ার পাশাপাশি বইগুলোতে হিসাব লেখার জন্য নেওয়া হয় ভেতরে। দাপ্তরিক কাজ শেষে সেগুলো ফেরত দেওয়া হয় প্রায় ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা পর।

এই দেরি করে ফেরত দেওয়ার কারণেই মনের ভুলে আমি বইগুলো ব্যাংকে রেখে চলে আসি। কিন্তু ফেলে এলেও সেসব বইয়ের প্রতিটিতেই আমার মোবাইল ফোনের নম্বর লেখা আছে। তারা খুব সহজেই আমাকে ফোন দিয়ে বইগুলো ফেরত দিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে মুনাফাসহ মূল সঞ্চয়ের টাকাগুলো আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি নিয়ে ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মইনুদ্দিন আহম্মেদের সঙ্গে দেখা করলে তিনি আমাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। লিখিত অভিযোগ দিয়ে মাসের পর মাস তিনিসহ সঞ্চয় বিভাগের লোকজনের পেছনে ঘুরলেও আমার সমস্যার সমাধান হয়নি।

এমনকি সঞ্চয়ের বইগুলো পর্যন্ত দেখানো হয়নি আমাকে। ডিজিএম পদমর্যাদায় বাংলাদেশ ব্যাংক বরিশাল শাখার সঞ্চয় বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা গাজী সাইদুর রহমান বলেন, উনি আসলে সঞ্চয়পত্রগুলো ভাঙিয়ে টাকা নিয়ে গেছেন। আমাদের কাছে থাকা নথিপত্রে তার প্রমাণ রয়েছে। আমরা উনার অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম এবং নমুনা স্বাক্ষর পরীক্ষা করে দেখেছি। সেখানে স্বাক্ষরে মিল রয়েছে। অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগের তদন্ত চলছে। আশা করি, শিগগিরই রহস্য বের করে ফেলতে পারব। বাংলাদেশ ব্যাংক বরিশাল শাখার নির্বাহী পরিচালক মইনুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ফোনে কিছু বলাও বাঞ্ছনীয় নয়। অভিযোগের পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর বলতে পারব যে, আসলে কী হয়েছে।

TT Ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *