আমতলী প্রতিনিধি ॥ বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশান বাড়িয়া গ্রামে বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পর শুক্রবার রাতে প্রেমিকের বাবা ভাইয়ের মারধরের অপমান সইতে না পেরে মতি হাওলাদার (২৫) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
মতি হাওলাদার তেতুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত্যু মজিদ হাওলাদারের ছেলে। মতির পরিবারের অভিযোগ তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে।
জানাগেছে, উপজেলার তেতুঁলবাড়ীয়া গ্রামের হারুন সিকদারের কন্যা ময়ূরীর (১৬) সাথে একই গ্রামের মৃত্যু মজিদ হাওলাদার ছেলে মতি হাওলাদার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত চার মাস ধরে চলে আসছে তাদের প্রেমের সম্পর্ক।
গত বুধবার মতি হাওলাদার তার এক স্বজনের মাধ্যমে প্রেমিকা ময়ূরীর বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়।
কিন্তু এ বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন হারুন সিকদার। শুক্রবার বিকেলে প্রেমিকা ময়ূরীর বাড়ীর সামনের রাস্তা দিয়ে প্রেমিক মতি হাওলাদার হেটে যাচ্ছিল।
এমন সময় প্রেমিকার ভাই দ্বীন ইসলাম, শহীদুল ইসলাম এসে মতিকে গালাগাল করে। এতে যুক্ত হয় প্রেমিক ময়ূরীর বাবা হারুন সিকদার।
এক পর্যায় হারুন সিকদার ও তার দুই ছেলে, শ্যালক ফারুক ও শ্যালকের ছেলে মিরাজসহ ৫-৬ জনে মিলে প্রেমিক মতি হাওলাদারকে মারধর করে।
পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে। এতে ক্ষুব্দ হয় মতি। ওইদিন রাতে স্থানীয় শহিদ খাঁন নামের এক জেলে পায়রা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে একটি রেইন্ট্রি গাছের সাথে মতির ঝুলন্ত মরদেহ দেখে স্বজন ও পুলিশে খবর দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মতির মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। মঙ্গলবার মতির মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে।
এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এ ঘটনার পরপর হারুন সিকদার ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, শুক্রবার বিকেলে হারুন সিকদার ও তার দুই ছেলে দ্বীন ইসলাম, শহীদুল ইসলাম, শ্যালক ফারুক ও শ্যালকের ছেলে মিরাজসহ ৫-৬ জনে মিলে মতিকে মারধর করেছে।
আমরা এগিয়ে না গেলে মতিকে ওই সময়েই তারা মেরেই ফেলতো। তারা আরো বলেন, এখন শুনছি মতি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
নিহত মতি হাওলাদারের চাচা মাহতাব হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইয়ের ছেলেকে হারুন সিকদার ও তার লোকজন মেরে গলায় ফাঁস দিয়ে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে।
তিনি আরো বলেন, আমার ভাইয়ের ছেলের সাথে হারুন সিকদারের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
ওই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হারুন সিকদারের বাড়ীতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম কিন্তু তারা তা ফিরিয়ে দিয়ে মতিকে মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।