ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী এলাকায় কোন প্রকল্প গ্রহণ, অনুদান, ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের জন্য নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যু কার্যক্রমসহ নতুন কোন ধরনের অনুদান বা ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। ইসির উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত নির্দেশনাটি ইতোমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে।
আগামী ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে দেশব্যাপী ইউপি নির্বাচন। প্রথম দফায় ৩৭১ ইউপিতে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন রমজানের আগে প্রথম দফায় ভোটের পর রমজানের পুরো মাসে আর কোন ভোট অনুষ্ঠিত হবে না। রমজানের পর ব্যাপক পরিসরে কয়েক দফায় সারাদেশে সাড়ে ৪ হাজার ইউপিতে ভোটগ্রহণের জন্য তফসিল দেয়া হবে। ইতোমধ্যে যেসব ইউপিতে নির্বাচনের জন্য তফসিল দেয়া হয়েছে কেবল সেসব নির্বাচনী এলাকায় এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে। বাকি নির্বাচনী এলাকায় তফসিল ঘোষণার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইসির নির্দেশনায় ইউনিয়ন পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ (সংলগ্নী-১) এর বিধি ৪ এর বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, নির্বাচন-পূর্ব সময়ে অর্থাৎ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল সরকারী গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত কোন প্রার্থী বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষ থেকে অন্য কোন ব্যক্তি, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ বা ইউনিয়নগুলোর এলাকায় অবস্থিত কোন প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন ধরনের চাঁদা-অনুদান দেয়া বা দেয়ার অঙ্গীকার করতে পারবেন না। এ বিধিমালার বিধান লঙ্ঘন দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং এ ধরনের অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্টরা উল্লিখিত আচরণ বিধিমালার বিধি ৩১ অনুযায়ী দ-িত হবেন।
তবে পূর্বে অনুমোদিত ও চলমান প্রকল্পগুলোর অর্থ অবমুক্ত, অর্থছাড় ও বিল পরিশোধ, অনুমোদিত প্রকল্পের প্রশাসনিক আদেশ জারি, চলমান প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রকল্পের খাত পরিবর্তন (রাজস্ব-মূলধন) এবং অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ বা কাজ সম্পাদন অথবা আচরণবিধি প্রতিপালনের শর্তে চলমান প্রকল্পের দৈনন্দিন কার্যক্রম গ্রহণে নির্বাচন কমিশনের সম্মতির প্রয়োজন নেই বলে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী ইউপি নির্বাচন হবে দলীয় ভিত্তিতে। শুধু চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী দলীয় প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন। এর বাইরের সদস্য পদে ভোট হবে নির্দলীয়। আইনানুযায়ী চেয়ারম্যান পদের কোন প্রার্থীকে দলীয় পরিচয়ে ভোট করতে চাইলে তাকে অবশ্যই ইসির নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের হয়ে ভোটে অংশ নিতে হবে। দল থেকে আগে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে হবে। দলের প্রত্যয়ন নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করতে হবে। এর বাইরে অন্য প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন। দল থেকেও প্রার্থী মনোনয়নের জন্য দলের ক্ষমতা প্রাপ্ত ব্যক্তির নাম পদবি এবং নমুনা স্বাক্ষর ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। প্রথম দফায় ইউপি নির্বাচনে অংশ নিতে আগামী ১৮ মার্চের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই মার্চ ১৯, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২৪ মার্চ। ভোটগ্রহণ ১১ এপ্রিল। ইসির তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে ভোট হবে কক্সবাজার, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সুনামগঞ্জ, মাদারীপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী ও রংপুর জেলার ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদে। এর মধ্যে ৩০টিতে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
এদিকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ পর্যায়ের ভোটকেন্দ্রের তালিকা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে কেন্দ্রের তালিকা ইসিতে পাঠাতে হবে। এ সংক্রান্ত চিঠি সকল সিনিয়র জেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।