এস এম মিরাজ||বরিশালে আমের আড়ৎসহ বাজারগুলোতে ভারতীয় ফরমালিন মেশানো আমে সয়লাব হয়ে গেছে। প্রশাসনের তদারকি না থাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই অহরহ বিক্রি হচ্ছে এসব আম। দেশী আম না উঠায় সুমিষ্ট ফলের নামে ভোক্তারা খাচ্ছেন ক্যামিক্যাল মিশ্রিত আম। অনেক ক্রেতা না জেনেই স্বাদ বিহীন অথচ দেখতে রংচঙা ফরমালিন মেশানো আমগুলো বেশি দামে কিনছেন।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বরিশালের আড়ৎ ও বাজারগুলোতে এসময় যেসব ফরমালিনযুক্ত আম বিক্রি হচ্ছে তা ভারত থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে এ বিষ ছড়িয়ে দিচ্ছেন বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড এলাকায় এক শ্রেনীর অসাধু আড়ৎ মালিকরা। ভারত থেকে আনা গোলাপখাস ও সুন্দরী নামের এসব আম মজুদ করার পর গড়ে এক কেজি আমের মূল্য দাড়ায় ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ক্রেতার কাছে পৌছে দিতে খুচরা দোকান মালিকদের কাছে ওই আম বিক্রিকরা হচ্ছে ১২০ থেকে থেকে ১৩০ টাকা মুল্যে। সুতরাং প্রতি কেজি আম আড়ৎ মালিকরা লাভ করছেন অর্ধেক অর্থাৎ ৬০ টাকার ও বেশি। তারা অতিরিক্ত দাম হাকিয়ে খুচরা আম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর আম বিক্রেতারা জেনেশুনে এসব ফরমালিনযুক্ত আম লাভের আসায় প্রতি কেজি ১৭০ থেকে থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি করছেন। ফলে বাধ্য হয়ে ওই বিষাক্ত আম অতিরিক্ত দামে কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা। অথচ এই বিষাক্ত আম খাওয়ার পর রোগাক্রান্ত হওয়ার আসঙ্কা অধিক।
সচেতন নগরবাসীর মধ্যে এসব বিষয়ে চাউর থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা । ফলে আম ক্রয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ অর্থাৎ নগরবাসী আছেন উদ্বেগ উৎকন্ঠায়। এক্ষেত্রে অনেকের অভিব্যক্তি হলো ফরমালিন মেশানো আম খেলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সুতরাং এ কারনে তারা চাচ্ছেন বরিশালের বাজারে বিক্রিত আমগুলো পরীক্ষ নিরীক্ষা করে বিক্রি করা হোক। পাশাপাশি প্রশাসনও বিষয়টি অনুমানে নিয়ে বাজারগুলো তদারকি করুক।
এদিকে কেমিক্যালযুক্ত ফলের বাজার সয়লাভ হয়ে যাওয়ায় আম না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এ প্রসঙ্গে বরিশালের একাধিক ডাক্তার জানান, আমে প্রচুর পুষ্টি থাকায় চিকিৎসকরা সাধারনত গর্ভবতী মা, শিশুসহ রোগীদের এটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু সেই আম যদি হয় বিষাক্ত তাহলে পুষ্টির পরিবর্তে রোগীদের বিষ খাওয়ারই পরামর্শ দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কেমিক্যালযুক্ত আম খাওয়া আর বিষ খাওয়া এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। দেশে ক্যান্সারসহ কিডনি ও লিভারের নানা মরণব্যাধি দেশে আসংকাজনক হারে বাড়ছে। এর অন্যতম কারন আমসহ বিভিন্ন বিষাক্ত ফল খাওয়া। এছাড়া বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নেয়ার পেছনেও কেমিক্যালযুক্ত ফলসহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী দায়ী। তাই বিষাক্ত আম না খেলে পরিবারের সবাই সুস্থ থাকবেন বলে তারা দাবী করেন।
এ বিষয়ে বরিশাল প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, ফরমালিনযুক্ত আম বিক্রি রোধে প্রতিবারের ন্যায় এবারও প্রশাসন তৎপর রয়েছে। কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেলেই আনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
কিন্তু বিষ্ময়কর ব্যাপার হলো যখন ভ্রাম্যমান আদালত পোর্ট রোড এাকায় আড়ৎগুলোতে অভিযান চাাচ্ছিল তখনই দুই‘শ গজ দূরত্বে নগরীর ফলপট্রি এলাকায় দোকানগুলোতে দেদারছে বিক্রি হচ্ছিল ফরমালিনযুক্ত আম।