মো:রাজিবুল হক(বরগুনা জেলা সংবাদদাতা):
প্রথম স্ত্রীকে হত্যার দায়ে ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে ২০০৮ সালের ১৮ নভেম্বর থেকে কনডেম সেলে বন্দি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর স্বপন কুমার বিশ্বাস। নিম্ন আদালতের ফাঁসির রায় হাইকোর্টেও বহাল থাকায় এর বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদন আপিল বিভাগে বিচারাধীন। এ অবস্থায় কারাগার থেকে তাঁর মামলাটি পরিচালনার জন্য এক আবেগঘন চিঠি লেখেন দেশবরেণ্য ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেনের কাছে। চিঠি পেয়ে মাহবুব হোসেন সিদ্ধান্ত নেন, বিনা পয়সায় ওই আসামির মামলা পরিচালনা করবেন। করলেনও তা-ই। আর এ মামলায় শুনানি শেষে গতকাল সোমবার স্বপনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন। একই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ের পর স্বপন কুমারকে অবিলম্বে কনডেম সেল থেকে বের করে সাধারণ সেলে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে সাজার ক্ষেত্রে রেয়াতসংক্রান্ত আইনের সব সুবিধা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বপন কুমারের পক্ষে বিনা পয়সায় মামলা পরিচালনাকারী খন্দকার মাহবুব হোসেনকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। আসামিপক্ষে রাষ্ট্রের নিযুক্ত আরেক আইনজীবী ছিলেন হাসিনা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
এদিকে খন্দকার মাহবুব হোসেনকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘আপনার এই কার্যক্রম আমরা লিখিত রায়ের মধ্যে উল্লেখ করব।’ প্রধান বিচারপতি এ রকম বিনা পয়সায় আরো মামলা পরিচালনার জন্য খন্দকার মাহবুব হোসেনের প্রতি আহবান জানান। জবাবে মাহবুব হোসেন বলেছেন, আদালত দায়িত্ব দিলে তিনি এ রকম মামলা করতে রাজি আছেন।