বরিশালে সংঘর্ষের ঘটনায় সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে করা দুই মামলা প্রত্যাহার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অপসারণ করাসহ ঘটনার বিচার বিভাগীয় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন পৌর মেয়ররা। একই সঙ্গে তিন ঘণ্টার পুরো ভিডিও জনগণের সামনে প্রকাশ করারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার (১৮ আগস্ট) বরিশাল ক্লাবে বিভাগের ২৬ পৌরসভার মেয়রদের পক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন এ দাবিগুলো জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গৌরনদী পৌরসভার মেয়র হারিছুর রহমান বলেন, গত ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা কমপ্লেক্সে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাজে বাধা দান ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আনসার সদস্যরা মেয়রকে লক্ষ্য করে গুলি করেন।
পরে উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরা মেয়রকে উদ্ধার করে বাসায় পাঠিয়ে দেন।
মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর ওপর হামলার খবর মুহূর্তে নগরব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার জনতা ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপজেলা কমপ্লেক্সের গেটে উপস্থিত হন।
এ সময় পুনরায় তাদের ওপর গুলি বর্ষণ করা হয়।
এতে গুলিবিদ্ধ হন- বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ আরও ৬০ থেকে ৭০ জন।
আহতরা চিকিৎসার জন্য শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রায় ২০০ দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করে, ফলে আরও ৫০ জনের মতো নেতাকর্মী আহত হন।
মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে করা দুটি মামলা প্রত্যাহার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অপসারণ করার জোর দাবি জানিয়েছেন হারিছুর রহমান। তা না হলে শোকাবহ আগস্ট শেষে নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মুলাদী পৌরসভার মেয়র মোধ শফিক উজ্জামান রুবেল বলেন, ঘটনা যা ঘটেছে তা প্রকাশ না করে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা চলছিল, কিন্তু এখন সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। রাতের ঘটনার ২০ থেকে ২৫ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ না করে পুরো তিন ঘণ্টার ভিডিও জনগণের সামনে তুলে ধরা হোক। আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রশাসনের বিপক্ষে নয় বা তাদের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। মুনিবুর রহমানের মতো স্বেচ্ছাচারী উপজেলা কর্মকর্তার মতো সবাই খারাপ, তাও বলছি না। তাই তার সৃষ্ট ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।