নিরীহ মানুষকে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোসহ থানায় এনে নির্যাতনের অভিযোগে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বাদলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভুক্তভোগী।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে শফিকুল ইসলাম নামে ওই ভুক্তভোগী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার তুষখালী এলাকার একাধিক মামলার আসামি ও চার নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছগির মিয়া এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম আসছেন।
ছগিরের মাধ্যমে ওসি বাদল তাকেসহ (শফিকুল) এলাকার অসংখ্য নিরীহ ব্যক্তিদের মোটা অংকের টাকার জন্য বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে হয়রানি করে আসছেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ২১ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ওসি বাদল পুলিশ দিয়ে আমাকে থানায় ধরে নিয়ে যান।
থানায় গিয়ে আমার নামে কি অভিযোগ আছে জানতে চাইলে ওসি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমি কেন ছগিরের কথা শুনি না। পরবর্তীতে আমাকে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি।
বিনা কারণে আমি টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে ওসি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। আমি নিরূপায় হয়ে বাড়িতে কল দিলে আমার স্ত্রী সালমা বেগম বাসা থেকে নগদ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে থানায় এসে আমার কাছে দেন।
সেই টাকা থেকে ওসির রুমে বসে এসআই পলাশ চন্দ্র রায়কে তিন হাজার টাকা দেই। ওইদিন রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ছগির ও শামীম ওসির রুমে প্রবেশ করেন। একপর্যায়ে ওসির সামনে বসে ছগির আমাকে মারধর করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমাকে থানা হাজতে রাখা হয়। এরপর ছগিরের নির্দেশে উপজেলার ছোট মাছুয়া গ্রামের তাসলিমা বেগমকে বাদী বানিয়ে মারামারির একটি মিথ্যা মামলায় আমাকে আসামি বানিয়ে পরের দিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই মামলায় আমি ২০ দিন কারাভোগের পর জামিনে বের হওয়ার পর পুরো ঘটনার বিচার চেয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছগির ও থানার ওসি পুনরায় আমাকে মামলায় জড়ানোর হুমকি অব্যাহত রেখেছেন।
এ ব্যাপারে ওসি নুরুল ইসলাম বাদল বাংলানিউজকে বলেন, ঘুষ দাবির বিষয়টি সঠিক নয়। অভিযোগকারী শফিকুল ইসলামের সঙ্গে থানায় বসে ছগির সমঝোতার একপর্যায়ে ছগিরকে মারধর করতে তেড়ে এলে আমি নির্বৃত্ত করেছি।
মঠবাড়িয়ায় উপজেলার তুষখালী ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছগির মিয়া বলেন, শফিকুলের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। আমি তাকে মারধর করিনি। ইতিপূর্বে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা থাকলেও বর্তমানে সব মামলা সমাধান হয়ে গেছে।