এবার নতুন আলোচনায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। দীর্ঘ তিন বছরের পরিশ্রমে তিনি তার রাজনৈতিক যে বলয় সৃষ্টি করেছিলেন তা ভাঙতে শুরু করেছে। তার নিয়ন্ত্রণে থাকা ৯ সিটি কাউন্সিলর ঢাকায় গিয়ে যোগ দিয়েছেন তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের ঘরনায়। ৯ কাউন্সিলর হলেন- বিসিসির ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমীর বিশ্বাস, ৪নং ওয়ার্ডের তৌহিদুল ইসলাম বাদশা, ১২নং ওয়ার্ডের জাকির হোসেন ভুলু, ২০নং ওয়ার্ডের জিয়াউর রহমান বিপ্লব, ২২নং ওয়ার্ডের আনিসুর রহমান দুলাল, ২৩ নং ওয়ার্ডের এনামুল হক বাহার, ২৪নং ওয়ার্ডের শরীফ মো. আনিসুর রহমান, ২৬নং ওয়ার্ডে হুমায়ন কবির এবং ২৯নং ওয়ার্ডে ফরিদ আহম্মেদ।
পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর ‘বরিশাল সদর’ নামক ই-মেইল থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বরিশাল সদর-৫ আসনের সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা। ৫ই সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টায় জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদ সদস্যদের অফিস কক্ষে তারা এই সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। এ সময় উল্লিখিত ৯ কাউন্সিলরদের সঙ্গে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও শ্রমিক নেতা সুলতান মাহমুদও উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় কাউন্সিলররা প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বরিশালের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলেন। সেইসঙ্গে নাগরিক সেবা নিশ্চিত কল্পে অন্য কাউন্সিলরদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন বলে জানানো হয়েছে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।
জানা গেছে, বরিশালে সাবেক মেয়র, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন হিরণ জীবিত থাকাবস্থায় আওয়ামী লীগ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একটি হিরণপন্থি, অপরটি সাদেক আব্দুল্লাহর পিতা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহপন্থি।
হিরণের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী জেবুন্নেছা আফরোজ এমপি হলেও হামলা, মামলায় প্রায় কোণঠাসা হয়ে পড়ে হিরণপন্থিরা। এরইমধ্যে মেয়র হিসেবে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ নির্বাচিত হওয়ার পর হিরণপন্থিদের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়ে। কাউন্সিলর হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয় তার নিজস্ব ঘরনার নেতাদের। একপর্যায়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে বরিশাল আওয়ামী লীগের পুরো নিয়ন্ত্রণই নিয়ে নেন সাদেক আব্দুল্লাহ। কিন্তু পট পরিবর্তন ঘটতে থাকে বরিশাল-৫ আসনে এমপি হিসেবে কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীম নির্বাচিত হওয়ার পর পরই। কোণঠাসা হিরণপন্থিরা আশ্রয় নেন তার ছায়া তলে। ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত জাহিদ ফারুক শামীম হিরণপন্থিদের নিয়ে নীরবে কাজ করতে থাকেন। কিন্তু সাদিক-শামিম বিরোধটা প্রকাশ্যে আসে বরিশালের ইউএনওর সঙ্গে সাদিকপন্থি ও বিসিসির বিরোধের সময়। ইউএনওর কার্যালয়ে সামনে থেকে রাতের বেলা জাহিদ ফারুক শামীমের ১৫ই আগস্টের ব্যানার নামিয়ে ফেলাকে কেন্দ্র করে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। আহত হন অর্ধ শতাধিক। প্রশাসনের দুটি মামলায় আসামি করা হয় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে। উভয় মামলায় তিনি এক নম্বর আসামি।