#

জেলার মেঘনা, তেঁতুলিয়াসহ দখিনের বিভিন্ন নদীতে অবাধে মশারি

#

জাল, বিহিন্দী ও কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বিচারে চিংড়ির রেনু পোনা (গলদা চিংড়ি)

নিধনের মহোৎসব চলছে। এসব রেনু পোনা ধরতে গিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য মাছের রেনু পোনা ধ্বংস হচ্ছে প্রতিদিন।

 

অভিযোগ রয়েছে, এ সব নিষিদ্ধ রেনু পোনা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিরাপদ

হিসেবে সড়ক ও নদী পথ দিয়ে বড় বড় ড্রাম কিংবা পাতিল ভর্তি করে খুলনা, বাগেরহাট,

সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে চালান করছে একটি প্রভাবশালী দালাল চক্র। ফলে জলজ

প্রাণির ওপর মারাত্মক প্রভাব ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা মৎস্য

অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, একটি চিংড়ির রেনু পোনা (পিএল-পোস্ট লাম্বা) ধরার

জন্য অন্য প্রজাতির নয় থেকে ১২টি রেনু পোনা ধ্বংস করা হচ্ছে। এরমধ্যে দুই হাজার

প্রজাতির মাছ ও বিভিন্ন প্রকারের জলজপ্রাণি প্রতিদিন ধ্বংস হচ্ছে। যেকারনে মেঘনা,

তেঁতুলিয়াসহ দখিনের নদীতে অন্য প্রজাতির মাছ ও অনান্য জলজপ্রাণির ওপর মারাত্মক

ক্ষতিকর প্রভাব ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণেই সরকার বাগদা ও গলদা প্রজাতির রেনু পোনা আহরণ ও সংরক্ষণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

 

মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, জেলেরা মশারি জাল ও বিহিন্দী জাল

দিয়ে রেনু পোনা (গলদা চিংড়ি) ধরছে। প্রতিবার জাল ফেলে সাত থেকে আটটি চিংড়ির

রেনু পোনা পেলেও তার সাথে উঠে আসছে টেংরা, পোয়া, তপসিসহ অসংখ্য প্রজাতির

মাছের পোনা। চিংড়ি পোনা আলাদা করে মাটি ও অন্যান্য পাত্রে জিইয়ে রাখলেও অন্য

প্রজাতির মাছের পোনাগুলো ডাঙায় অথবা চরে ফেলে দেওয়ায় সেগুলো মারা যাচ্ছে।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তিরা জানান, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পোর্টরোডের

রনির ছত্রছায়ায় কতিপয় প্রভাবশালী দালাল ক্ষমতার দাপটে জেলেদের একপ্রকার জোরপূর্বক

বাধ্য করে বিহিন্দী জাল, মশারী জাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে রেনু পোনা নিধন করাচ্ছেন

দেদারছে। সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, নেহালগঞ্জ ফেরীঘাট, লাহারহাট ফেরিঘাট, গোমা

ফেরিঘাটসহ জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী দালাল চক্রের মাধ্যমে জেলেদের

কাছ থেকে রেনু পোনা ক্রয় করে তা বড় বড় ড্রাম ভর্তি করে প্রতিদিন ১৮টি ট্রাকে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে চালান করছেন।

প্রতিদিন ট্রাকভেদে ১৮ থেকে ৩০টি ড্রাম বহন করা হয়। একেকটি ড্রামে ১০

হাজার করে রেনু বহন করা হয়। সে অনুযায়ী প্রতিটি ট্রাকে এক লাখ ৮০ হাজার থেকে তিন

লাখ পোনা বহন করা হয়। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ৬০ লাখ রেনু পোনা পাচার হচ্ছে।

এছাড়া নদীপথে ট্রলারে পাতিল ভর্তি করে পাচার হয় আরও কমপক্ষে ৪০ লাখ রেনু পোনা।

রনি বলেন,
মাসোয়ারা দিয়েই ট্রাক ভর্তি করে রেনু পোনা পাচার করা হয়। মাঝে মধ্যে মাসিক টাকা

দিতে বিলম্ব হলেই অভিযানের নামের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রেনু পোনা ভর্তি ট্রাক আটক করে থাকেন।

 

এ ব্যাপারে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন

সুলতান মাহমুদ বলেন, নদী থেকে চিংড়ির রেনু ধরায় মৎস্য ভান্ডার বিরাট হুমকির মুখে

পরেছে। বিশেষজ্ঞ পর্যায় থেকে বিষয়টি দীর্ঘদিন থেকে সতর্ক করা হলেও এ বিষয়ে কার্যকরী

কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় নদী থেকে চিংড়ির রেনু ধরা আজও বন্ধ হয়নি। এজন্য এখনই

কৃত্রিম উপায়ে (হ্যাচারি পদ্ধতি) চিংড়ির রেণু উৎপাদন করা হলে নদী থেকে চিংড়ির রেনু ধরা অনেকটাই বন্ধ হবে।

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here