খাদ্য সম্পর্কিত সমস্ত ব্যবস্থাপনা ও প্রায়োগিক শিক্ষাই হলো খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান। সারাপৃথিবীতে-এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কারণ খাদ্য ও পুষ্টি ছাড়া মানুষের জীবন কল্পনাও করা যায় না। পৃথিবীর সব চাহিদার মধ্যে খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা সবার আগে। তাই এক্ষেত্রে ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো চিন্তার কারণ নেই। ক্লায়েন্টদের মাঝে পুষ্টি সচেতনতা তৈরি করাই মূলত একজন পুষ্টিবিদের কাজ। এটি একটি সেবামূলক পেশা।
আগে খাদ্য ও পুস্টি বিজ্ঞানেক্যারিয়ার নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একধরণের অনিশ্চয়তা ছিলো। মনে করা হতো, এই বিভাগটি শুধু নারী শিক্ষার্থীদের জন্য। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ভুল ধারণা ভেঙে গেছে। মেয়েদের পাশাপাশি এখন অনেক ছেলেরাও এক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
যেখানে পড়া যাবে
উচ্চশিক্ষার বিষয় হিসেবে খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান আমাদের দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে নাম ভিন্ন হলেও পড়ার বিষয়বস্তু মূলত একই রকম। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি পড়ানো হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, নর্দান ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি এবং গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে অনার্স পর্যায়ের কোর্স করানো হয়।
ভর্তি প্রক্রিয়া
শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়তে চাইলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এসএসসি এবং এইচএসসিতে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পয়েন্ট প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবে।
কাজের ক্ষেত্র
খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পড়ালেখা করে বিএসসি এবং এমএসসি পাসের পর দেশে এবং দেশের বাইরে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
আমাদের দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, স্বাস্থ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটসহ স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা বিষয়ক অসংখ্য প্রতিষ্ঠান মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন খুব সহজেই। এছাড়াও বড় বড় ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিগুলো, ন্যাশনাল, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রি, পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট, ফিটনেস সেন্টার,এক্সারসাইজ ফিজিওলজিস্ট, ফুড সায়েন্স রিসার্চর, হোম ইকোনমিস্ট, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বড় বড় রেস্তোরাঁ, ক্যাটারিং সংস্থা ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ রয়েছে। আপনার কাজের ক্ষেত্রের উপর নির্ভর করবে কাজের ধরন কী রকম হবে।
আয় রোজগার
আমাদের দেশে এমনকি সারাপৃথিবীতে খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান ডিগ্রিধারীদের চাহিদা রয়েছে। বর্তমান সময়ে ডায়েটেশিয়ান এবং নিউট্রিশনিস্টদের চাহিদা অনেক। এছাড়া আপনি যদি এক্ষেত্রে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে থাকেন, তাহলে চাকরির বাজারে বিভিন্ন পেশায় বেশ ভালো অঙ্কের বেতন পাওয়ার নিশ্চয়তা রয়েছে। আপনিও চাইলে এ পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।