#

 

#

পাওনা টাকা পরিশোধের আশ্বাসে নুরুল আমিনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে বরিশালের মুলাদী উপজেলার শ্বশুরবাড়িতে খবর দিয়ে আনেন কামরুল ইসলাম। এরপর তাকে হত্যা করে হাত ও পায়ে ইট বেঁধে আড়িয়াল খাঁ নদে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন নিহত ব্যক্তির স্বজনরা।

তাদের অভিযোগ ঘটনার তিনদিন পর সিঙ্গাপুর চলে গেছে ঘাতক কামরুল!
হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত কামরুলের শ্বশুর গ্রেফতার খোরশেদ আলম এভাবেই আদালতে বিচারকের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

নিহত নুরুল আমিন নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার চরবক্তাবলী উপজেলার লক্ষ্মীনগর গ্রামের পিয়ার আলী ফকিরের ছেলে এবং হত্যাকারী কামরুল ইসলাম একই গ্রামের হানিফ ফকিরের ছেলে।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে কামরুল ইসলামের শ্বশুর খোরশেদ আলমকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করেছে।

বিচারকের কাছে জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
শনিবার (২২ অক্টোবর) সকালে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলার নাজিরপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ প্রবীর মিত্র বলেন, কামরুলের পাসপোর্ট তদন্তে দেখা গেছে তিনি গত ৭ অক্টোবর বাংলাদেশে এসেছেন এবং ১৩ অক্টোবর সকালে সিঙ্গাপুর চলে গেছেন। বাংলাদেশে অবস্থানকালীন তিনি তার শ্বশুরবাড়ি মুলাদী উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে ছিলেন।

পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, গত ১২ অক্টোবর রাতে নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামের আড়িয়াল খাঁ নদীর উত্তর তীরবর্তী চর থেকে নুরুল আমিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌপুলিশ। মরদেহের হাত ও পায়ে ইট বাঁধা থাকায় প্রাথমিকভাবে হত্যার সন্দেহ করা হয়। ঘটনার পরদিন নৌপুলিশ বাদী হয়ে মুলাদী থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এরপর বিভিন্ন থানায় সংবাদ পাঠিয়ে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে বরিশালেই দাফন করা হয়। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার একটি সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে নুরুল আমিনের মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

নিহতের বোন সোনিয়া আক্তার জানান, নুরুল আমিন ও কামরুল ইসলাম একসঙ্গে সিঙ্গাপুরে ছিলেন। বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে লোক নেওয়ার ব্যবসাও করতেন তারা। কামরুলের কাছে নুরুল আমিন ২৫ লাখ টাকা পেতেন। একবছর আগে নুরুল আমিন সিঙ্গাপুর থেকে বাড়িতে চলে আসেন। পাওনা টাকার জন্য কামরুলকে চাপ দিলে কামরুল কালক্ষেপণ করতে থাকেন।

সোনিয়া আরও বলেন, গত ৭ অক্টোবর গোপনে কামরুল বাংলাদেশে এসে তার শ্বশুড়বাড়িতে অবস্থান নেন। নুরুল আমিনকে মোবাইল ফোনে কামরুল তার শ্বশুরবাড়িতে যেতে বলেন। কিন্তু টাকা না থাকায় যেতে পারবেন না জানালে কামরুল তার ছোট ভাই আরিফের মাধ্যমে নুরুল আমিনকে তিন হাজার টাকা পাঠান। গত ১০ অক্টোবর সকালে নুরুল আমিন ওই টাকা নিয়ে কামরুলের সঙ্গে দেখা করতে মুলাদী গেলে হত্যার শিকার হন।

নুরুল আমিনের পরিবারের সদস্যদের ধারণা, পাওনা টাকা চাওয়ায় কামরুল তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সহায়তায় নুরুল আমিনকে হত্যা করে লাশ নদীত ফেলে দিয়েছে।

নাজিরপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ প্রবীর মিত্র জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে কামরুল ইসলামের শ্বশুর খোরশেদ আলমকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হলে তিনি বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, তার মেয়ে জামাতা কামরুল মোবাইল ফোনে নুরুল আমিনকে ডেকে এনে খুন করেছে। খুনের পর লাশ নদীতে ফেলে সে সিঙ্গাপুর চলে যায়।

কামরুলের মরদেহ ফেরত পেতে বরিশাল আদালতে আবেদন করেছেন তার স্বজনরা। রোববার (২৩ অক্টোবর) এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য করেছেন বিচারক।

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here