প্লাস্টিকের কাঁচামাল ক্রয়ের টোপ দিয়ে রাজধানীর চকবাজারের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জুয়েল এবং তার কর্মচারী মোর্শেদকে নিয়ে যাওয়া হয় বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া ঘাটে। পরবর্তীতে অপরাধী চক্রটি ওই ঘাট থেকে তাদের নৌকায় তুলে নদীর মাঝখানে নিয়ে যায়।
সেখানে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা কেড়ে নিয়ে কর্মচারীসহ তাকে হত্যা করে নদীতে লাশ ফেলে দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার বরিশাল বাকেরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান যুগ্ম-কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) বিজয় বিপ্লব তালুকদার।
অপরধী চক্রের গ্রেফতার সদস্যরা হলেন- নুরুজ্জামান হাওলাদার (৪০), আব্দুল আজিজ শিকদার (৩৪), হাফেজ চৌকিদার (৪৬) এবং দেলোয়ার হোসেন মোল্লা ওরফে দেলু (৩৫)।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জুয়েল সিকদার রাজধানীর চকবাজারের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী। পূর্ব পরিচিত দেলোয়ার হোসেন মোল্লা নামে এক ব্যক্তি তাকে প্লাস্টিকের কাঁচামাল কেনার টোপ দেয়।
ব্যবসায়ী জুয়েল এবং তার কর্মচারী গত ১৪ ডিসেম্বর বরিশালে যায়। সেখানে কথিত ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান, আজিজ ও হাফিজ নামে এক মাঝি একটি ট্রলারে করে তাদের মেঘনা নদীতে নিয়ে যায়।
পরে তাদের চোখে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে দিয়ে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় এবং তা বন্ধ করে দেয়। জুয়েলের সঙ্গে থাকা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় দেলোয়ার। এরপর জুয়েল ও তার কর্মচারী নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাদের নদীতে ফেলে পালিয়ে যায় অপরাধীরা।
বিজয় বিপ্লব তালুকদার বলেন, এ ঘটনায় তিনদিন পর বরিশালের মুলাদী ও ইলিশায় প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জুয়েল এবং তার কর্মচারী মোর্শেদের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের বাবা রাজধানীর চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন।
পরবর্তীতে তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবসায়ী জুয়েল শিকদার এবং তার কর্মচারী মোর্শেদ আলম হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে বরিশালের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
যুগ্ম কমিশনার বিজয় বিপ্লব বলেন, অপহরণকারীরা পরস্পরের যোগসাজশে প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জুয়েল ও তার কর্মচারীকে অপহরণ করে বরিশালে থেকে উলানিয়া ঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে মেঘনা নদী নিয়ে যায়।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেপ্তাররা মরিচের গুড়া দিয়ে গলাটিপে তাদের নিস্তেজ করে। পরে জুয়েলের সঙ্গে থাকা টাকা নিয়ে তাদের মেঘনা নদীতে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তাররা সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্য। তারা এর আগেও এ ধরণের অপরাধ সংঘটিত করেছে। তাদের রিমান্ডে এনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’