মোঃ শাহীন আলম
তালতলী প্রতিনিধিঃ
তালতলী উপজেলার রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন তালতলী উপজেলায় বসবাসের শুরুর দিকে জীবিকা নির্বাহের জন্য রাখাইন নারীরা তাঁতে কাপড় বোনা শুরু করেন। সেই থেকে কয়েক বছর আগেও রাখাইনদের তাঁতশিল্প ছিল জমজমাট। কিন্তু এই পল্লিতে তাঁতশিল্পের সেই সুবর্ণ দিন আজ আর নেই।
এই শিল্পের কারিগরেরা বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা। যাঁরা আছেন, ভালো নেই তাঁরা। মানবেতর জীবন পার করছেন এই উপজেলার রাখাইন পল্লিবাসী। বিলুপ্তির পথে তাঁতশিল্প।
জানা যায়, ১৭০০ সালের শেষের দিকে মিয়ানমারের আরাকানের মেঘাবতীর সান্ধ্যে জেলার ছেং ডোয়ে, রেমেত্রে, মেং অং অঞ্চল ছেড়ে রাখাইনরা এখানে বসবাস শুরু করেন। এরপর থেকেই তাঁদের পল্লিতে দিনরাত সমানতালে তাঁতের ঠকঠক আওয়াজ শোনা যেত। তাঁতিদের কর্মব্যস্ততায় সরগরম ছিল রাখাইনপাড়া। উপজেলার রাখাইন মার্কেটে ছিল তাঁতের শাড়ি কাপড় বিক্রির ধুম। আর এখন সেই মার্কেটে নেই বেচা-কেনায় ভিড়, নেই রাখাইন পল্লিতে কর্মব্যস্ততা। একদিকে যেমন সুতার সংকট, অন্যদিকে পণ্যটির মাত্রাতিরিক্ত দাম, আবার পাচ্ছেন না সরকারি সহায়তা নানা সমস্যায় স্থবির হয়ে আছে রাখাইনদের তাঁতশিল্প।
এদিকে দু-একটি পাড়ায় তাঁত দেখা গেলেও শুধু নিজেদের প্রয়োজনে কাপড় বুনছেন তাঁরা। বাজারজাত করতে হলে সরকারি সহযোগিতা চান এ তাঁতশিল্পীরা। রাখাইন তাঁতশিল্পী লাচা নো বলেন, ‘সুতার দাম বেশি থাকায় এখন আর কাপড় বোনা সম্ভব হচ্ছে না।’
মনুকে পাড়ার চিং খে উই রাখানই বলেন, ‘এখন নিজেদের প্রয়োজনে আমাদের দু-একটি কাপড় বোনা হয়। আগে কাপড় বুনে শেষ করতে পারতাম না। সুতার দাম কম ছিল,চাহিদাও বেমি ছিল।
তালতলী উপজেলা তাঁতি সমিতির সভাপতি মংচিন থান বলেন, ‘সুতার দাম বেশি ও বিক্রির সু- ব্যাবস্হা না থাকায় রাখাইন পল্লির মানুষগুলো অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। আগের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে দরকার সরকারি সাহায্য সহযোগিতা।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, তাঁতশিল্পীদের বর্তমানে বিসিক এর মাধ্যমে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। ট্রেনিং এরপরে তাদেরকে বিভিন্ন মাধ্যমে সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।